চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

পুরুষের চোখের জলে কোন লজ্জা নেই: শচীন

স্পোর্টস ডেস্ক

২১ নভেম্বর, ২০১৯ | ২:২৯ অপরাহ্ণ

পুরুষের চোখের জলে কোনও লজ্জা নেই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দিবস উপলক্ষে ভারতের তরুণ ও যুবকদের উদ্দেশে এক খোলা চিঠিতে তিনি এ মন্তব্য করেন ক্রিকেট কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছয় বছর আগে নভেম্বরের এই সপ্তাহেই ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে ২২ গজ থেকে দূরে সরে যান শচীন। আবার এই সপ্তাহই আন্তর্জাতিক পুরুষ সপ্তাহ। এ উপলক্ষে দেশের সমস্ত পুরুষদের উদ্দেশে শচীন খোলা চিঠি লিখলেন।

চিঠিতে শচীন লিখেছেন, তোমরা শিগগিরই বাবা ও স্বামী হবে। ভাই ও বন্ধু হবে। মেন্টর ও শিক্ষক হবে। তোমরা সাহসী ও শক্তিশালী হবে। নির্ভীক ও স্থিতিস্থাপক হবে।

তিনি লেখেন, ‘এবং তোমরা ভয়, সন্দেহ ও বিপুল যন্ত্রণার মুখোমুখি হবে। নিঃসন্দেহে এমন সময় আসবে, যখন তুমি ব্যর্থ হবে। এবং তখন তোমার কাঁদতে ইচ্ছে করবে। ইচ্ছে করবে সবটা বাইরে বের করে দিতে। কিন্তু নিশ্চিত ভাবেই তুমি কান্নাকে চেপে রেখে শক্ত হওয়ার ভান করবে। কেননা তেমনটাই পুরুষরা করে থাকে। কেননা এটাই আমাদের বিশ্বাস করানো হয় যে, পুরুষদের কাঁদতে নেই। কান্না পুরুষকে দুর্বল করে দেয়। আমিও এটা বিশ্বাস করেই বড় হয়েছি।’

এরপরই শচীন বলেন, ‘এবং যে কারণে আমি এই চিঠি লিখছি তা হল আমি অনুভব করেছি এটা ভুল। আমার লড়াই ও আমার যন্ত্রণা আমাকে তৈরি করেছে যা আমি হয়েছি। একজন উন্নততর মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছে।’

শচীন লিখছেন, ‘১৬.১১.২০১৩। আমি এখনও সেদিন মাঠে থাকার কথাটা মনে করতে পারি। আমি এর আগেও এটা নিয়ে ভেবেছি বহু বার। কিন্তু কোনও ভাবেই শেষবার প্যাভিলিয়নে ফিরে যাওয়ার মানসিকতাটার ব্যাপারে তৈরি হতে পারিনি। ফেরার সময় প্রতিটা পদক্ষেপে ডুবে যাচ্ছিলাম। গলার কাছে ব্যথা করছিল। সব শেষ হয়ে যাওয়ার ভয় পাচ্ছিলাম। সেই মুহূর্তে আমার মনের মধ্যে কত কিছু যে চলছিল!আমি ব্যাপারটা মানতে পারছিলাম না। লড়তে পারছিলাম না।’

শচীন খোলা চিঠিতে লিখেছেন, আমি পৃথিবীর সামনে এসে দাঁড়ালাম। এবং আশ্চর্যজনক ভাবে আমি শান্তি পেলাম। আমি শক্তি পেলাম নিজেকে বের করে আনার। এবং আমি সকলের কাছে কৃতজ্ঞ যা আমি পেয়েছিলাম। অনুভব করেছিলাম আমি যথার্থই পুরুষ।

তিনি বলেন, নিজের কান্নাকে দেখানোর মধ্যে কোনও লজ্জা নেই। কেন নিজের সেই অংশটা দেখাব না, যেটা আমাকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে? কেন তোমরা কান্না লুকোবে?

চিঠির শেষে মাস্টার ব্লাস্টার বলেন, নিজের যন্ত্রণা ও দুর্বলতাকে প্রকাশ করতে সাহস লাগে। কিন্তু নিশ্চিত ভাবেই এটা তোমাকে ও কঠিন আরও উন্নত করে তুলবে। তাই আমি তোমাদের বলব এই সব স্টিরিওটাইপ থেকে বেরিয়ে এসো যে পুরুষরা কী করতে পারে আর না পারে। তুমি যেই হও, যেখানেই থাকো, কামনা করি তোমার যেন সেই সাহস হয়।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট