চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

‘সেই’ হারে তিন মাস ঘুমাননি মুশফিক

স্পোর্টস ডেস্ক

৭ নভেম্বর, ২০১৯ | ১:০৬ পূর্বাহ্ণ

বল করতে আসছেন হার্দিক পান্ডিয়া। স্ট্রাইকে মুশফিক। আগের দুই বলে দুই চার মেরে ম্যাচ নিয়ে এসেছেন হাতের মুঠোয়। তিন বলে প্রয়োজন ২ রান, কিছুটা উদযাপনও সেরে ফেলেছেন । সামনে পড়া বলটি উড়িয়ে মারলেন, কিন্তু আউট। বিষন্নমুখে ড্রেসিংরুমে হেটে আসলেন তিনি। ম্যাচটির কথা মনে আছে প্রতিটি ক্রিকেট ভক্তের। ভুলতে পারেননি মুশফিকুর রহিমও। আর সেই ম্যাচ হেরে যাওয়ার পর কষ্টে তিন মাস ঘুমাতে পারেননি তিনি।

সম্প্রতি এমনই এক তথ্য জানিয়েছেন মুশফিকের বাবা। ২০১৬ সালের ২৩ মার্চ রাতে আসলেই স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে জিততে টাইগারদের প্রয়োজন ছিল ৩ বলে ২ রান। অথচ এই ম্যাচই বাংলাদেশ হেরে যায় এক রানে! এভাবে হেরে যাওয়া মানতে পারেননি ক্রিকেটাররা, মেনে নিতে পারেননি অনেক বাংলাদেশি সমর্থকও। চার বছর পর সেই ভুল শুধরালেন মুশফিক। দায়িত্ব নিয়ে ক্রিজে টিকে ম্যাচ শেষ করে এলেন। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ব্যাটিং করতে নেমে করলেন ৪৩ বলে ৬০ রান। ম্যাচ সেরাও তিনি। যেন দায় শোধ করলেন সেরা উপায়েই।

বিশ্বকাপে দুঃস্বপ্নের সেই ম্যাচ হারার পর কেমন ছিল দিনগুলো? বগুড়া থেকে মুশফিকের বাবা মাহবুব হামিদ ভারতীয় এক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন সে তথ্য। তিনি বলেন, আমার ছেলের মাথা থেকে একটা বোঝা নেমে গেল। বেঙ্গালুরুতে সেই ম্যাচ আমাদেরই জেতার কথা। ৩ বলে ২ রান, এমন পরিস্থিতিতে ম্যাচ কেউ হারে? কিন্তু মুশফিক সেদিন পারেনি। এটা ওর ব্যক্তিগত জীবনে মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলেছিল। টানা তিন মাস ঘুমাতে পারেনি। চেনাশোনা সাংবাদিকদের সাথেও বহুদিন কথা বলা বন্ধ রেখেছিল। দিল্লির ইনিংসটা আসলে মুশফিকের মাথা থেকে বড় একটা বোঝা নামিয়ে দিলো। সাকিব-তামিমকে ছাড়াই ভারত-বধ করেছে বাংলাদেশ। মুশফিকের বাবা এ বিষয়েও কথা বলেন। তিনি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, বেশ কিছুদিন বাংলাদেশের ক্রিকেট টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে। এই হতাশা থেকে বেরোনোর জন্য ভারতের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প আর কী হতে পারে! যখন বিমানবন্দরে মুশফিককে বিদায় জানাতে গিয়েছিলাম, তখন সৌম্য-মোসাদ্দেকরা বলাবলি করছিল, ওরা এবার সাকিবের জন্য খেলবে।

চোখে মুখে জেদ-প্রত্যয় ঠিকরে বেরোচ্ছিল। এমন জেদ অব্যাহত থাকলে ভারতের জন্য তা অনেকটা অশনি সংকেতই। প্রথমবারের মতো ভারতের মাটিতে সিরিজ জয় করলে তা হয়ে থাকবে রূপকথার এক গল্প হয়ে। এই গল্পের অপেক্ষায় এখন কোটি টাইগারপ্রেমী।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট