চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

টেস্টে তিনশ উইকেট চান তাইজুল

স্পোর্টস ডেস্ক

১৩ এপ্রিল, ২০২০ | ২:০৮ পূর্বাহ্ণ

লাল সবুজের জার্সিতে অভিষেকেই চমকে দিয়েছিলেন তাইজুল ইসলাম। ২০১৪ সালে কিংস্টনে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসেই ঘূর্ণি জাদু চালিয়ে শিকার করেছিলেন ৫ ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানকে। এরপর একের পর এক দক্ষ হাতে উইকেট শিকারে হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশ টেস্ট দলের নির্ভরতার প্রতীক। গেল বছরের সেপ্টেম্বরে বাঁ হাতি এই স্পিনার আফগানদের বিপক্ষে গড়েছেন দ্রুততম শত উইকেটের রেকর্ড। ২৫ টেস্টে ছাপিয়ে গেছেন অগ্রজ মোহাম্মদ রফিক ও রেকর্ডের বরপুত্র সাকিব আল হাসানকে (২৮তম ম্যাচে ১শত উইকেট পেয়ছিলেন সাকিব, রফিক ৩৩ ম্যাচে)। ২৯ টেস্টে তার উইকেট সংখ্যা ১১৪। ক্যারিয়ার সায়াহ্নে সাদা পোষাকে নামের পাশে দেখতে চান তিনশটি উইকেট। চলতি বছরে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে জায়গা করে নিয়েছেন ১৭ জন ক্রিকেটার। তন্মধ্যে লাল ও সাদা বলে তিন ফরম্যাটের জন্য রাখা হয়েছে ৭ জনকে। উল্লেখ করার মতো বিষয় হলো টেস্ট স্পেশালিস্টের তকমা গায়ে মেখেও সেখানে জায়গা করে নিয়েছেন তাইজুল। বিষয়টি তাকে দারুণ আপ্লুত করেছে ও হাতছানি দেয় এক ফরম্যাটের দেওয়াল ভেঙে নতুন নতুন ফরম্যাটে নিয়মিত হওয়ার। এ প্রসঙ্গে ঢাকার একটি বার্তাসংস্থার সাথে আলাপে তাইজুল নির্বাচকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তারা হয়তো পরিকল্পনা করছেন যে আমাকে ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টিও খেলাবেন। বোলিং কোচ ড্যানিয়েল ভেট্টোরির সাথে কাজ করেছেন তাইজুল। সব ফরম্যাটে টিকে থাকতে হলে কি করতে হবে সেটা ভেট্টোরির কাছ থেকেই শিখেছেন তাইজুল। বলেন, তিনিই আমাকে গতির বৈচিত্র (পেস ভেরিয়েশন) নিয়ে কাজ করতে বলেছেন। এছাড়াও আমার বলের বিরুদ্ধে ব্যাটসম্যান কোন দিকে শক্তিশালী সে বিষয়েও বলে দিতেন। তাইজুল আরো বলেন, আমরা যখন টেস্টে বল করি তখন গতির বৈচিত্রটা খুব কম থাকে। একই জায়গায় বল করতে চেষ্টা করি। দেখা যাচ্ছে ৪-৫টা বল একই গতিতে এবং একই জায়গায় হয়। কেননা এই ফরম্যাটে আমার মূল লক্ষ্যই থাকে একই জায়গায় বল ফেলা। কিন্তু ওয়ানডেতে তো আর সেটা সম্ভব না। একই গতিতে দুই তিনটা বল করলে দেখা যায় ব্যাটসম্যান মেরে দিল! আর যেহেতু ক্রিকেট এখন অনেক আধুনিক সেহেতু ব্যাটসম্যানের মারাটাও স্বাভাবিক। কারণ সেও রান করতে চায়। তো গতি বৈচিত্রটা এজন্যই যেন প্রত্যেকটা বল একই গতিতে না যায়। পেস ওঠা নামা করলে ব্যাটসম্যানেরও খেলতে অসুবিধা হবে। গতি বৈচিত্রটা এজন্যই গুরুত্বপূর্ণ।
নিজের ব্যাটিং নিয়ে জাতীয় দলের এ স্পিনার বলেন, আসলে ক্রিকেট খেলাটা এমন হয়ে গেছে যে সব দিকেই পারদর্শী হতে হয়। শুধু ব্যাটিং বা বোলিং দিয়ে দলে থাকাটা কঠিন। যদি বোলিংয়ের পাশাপাশি কিছু রানও করা যায়। অবশ্য একেকটা ফরম্যাটের জন্য ব্যাটিংটা একেক রকম হওয়া উচিৎ। যেমন আমি যখন টেস্টে নামি তখন আমার সঙ্গে একজন ব্যাটসম্যান থাকে। তো তাকে সাহয্য করাই আমার কাজ। আবার যখন ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি খেলি তখন হয়ত দুই এক ওভার থাকে। ওই সময় ১০-১৫ রান করা কিন্তু আমার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। এটা যখন পারব সবাই তখন আমার ওপর আস্থা রাখবে।
সাকিব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাকিব ভাই যখন মাঠে থাকে তখন আমাকে চাপ কম নিতে হয়। বোলিংটাও কম করতে হয়, সিদ্ধান্ত নিতেও সমস্যা হয় না। ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে উনি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেন। কারণ উনি বুঝে যান ব্যাটসম্যান কখন কী করবে বা কী করলে ভালো হবে। আর সে না থাকলে চাপ বেশি থাকে, বোলিংও বেশি করতে হয়। ভবিষ্যতে কোথায় থামতে চান এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের দেশের যে অবস্থা আমি আসলে টেস্টে ৩শ উইকেট পেলেই খুশি। তবে এটা হওয়া খুবই কঠিন। তারপরেও এটাই আমার লক্ষ্য এবং এজন্য আমি প্রাণপণ চেষ্টা করব।
করোনার সময় গৃহবন্দী তাইজুল বলেন, জীবনে প্রথম এমন একটি পরিস্থিতিতে পড়েছি। আসলে সময়টা খুব কঠিন। খারাপ লাগছে কিন্তু কিছু করার নেই। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া করতে হবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট