চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

আজ দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি হারের ম্যাচে কাঠগড়ায় টাইগার ব্যাটসম্যানরা

স্পোর্টস ডেস্ক

২৫ জানুয়ারি, ২০২০ | ৪:৪১ পূর্বাহ্ণ

নিরাপত্তাই সিরিজের মূল কুশীলব। তবে মাঠে খেলা গড়াতে শেষ পর্যন্ত ক্রিকেটই আলোচনায়, তবে অন্তত ২২ গজে লাহোরের গতকালের দিনটা মনে রাখতে চাইবে না বাংলাদেশ। আশা জাগিয়েও প্রথম টি-টোয়েন্টি হেরে গেছে বাংলাদেশ। তাড়া করতে নেমে ম্যাচের লাগাম বেশিরভাগ সময় পাকিস্তানের হাতে ছিল। তারপরও শেষ দিকে অভাবনীয় কিছু হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। শোয়েব মালিক একটা সুযোগও দিয়েছিলেন, কিন্তু বাংলাদেশের সেরা ফিল্ডারদের একজন নাজমুল হোসেন শান্ত হাত ধরেও ক্যাচটা রাখতে পারেননি, বরং দিয়েছেন চার। শেষের আগের ওভারে শান্তর ক্যাচের আফসোস দারুণ বল করে আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন আল আমিন। মুস্তাফিজ কাগজে কলমে খরুচে হলেও উইকেট পাওয়ার সুযোগ তৈরি করেছিলেন বেশ ক’বার। ভাগ্য আর ফিল্ডারদের ব্যর্থতায় সেটি পাওয়া হয়নি। এমনকি যখন ৪ বলে ২ রান দরকার, তখন রিজওয়ানের সহজ ক্যাচ ফেলে দিয়েছেন মোহাম্মদ মিথুন। সরাসরি থ্রো করতে পারলে রান আউটের সুযোগও ছিল, কিন্তু সেটাও হয়নি। এই যখন বোলিং-ফিল্ডিংয়ের অবস্থা, তখন মাত্র ১৪১ রান করে টি-টোয়েন্টিতে জেতাটা কঠিন হয়েই যায়। বাংলাদেশ সেটা পারেওনি। গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতেও আজ একই ভুলের পুনরাবৃত্তি হলে সিরিজের শেষ ম্যাচটা হয়ে যাবে শুধুই আনুষ্ঠানিকতা। ১৪২ রানের মামুলি লক্ষ্য, তবুও টাইগার

বোলাররা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছিলেন। শফিউল-আমিনুলদের চেষ্টা শুধু পাকিস্তানের জয়ই বিলম্বিত করেছে। লাহোরে বাংলাদেশকে ৫ উইকেটে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলো স্বাগতিক পাকিস্তান। ফিল্ডিংয়ে ব্যর্থতা থাকলেও বাংলাদেশ যে লড়াই জমিয়ে তুলতে পারেনি, সেটির দায় আসলে ব্যাটসম্যানদেরই! এহসান আলীর ৩৬-এর পর পাকিস্তানের হয়ে শোয়েব মালিকের ৪৫ বলে অপরাজিত ৫৮ রানের ইনিংস পথ দেখিয়েছে জয়ের। অন্যদিকে পুরো কুড়ি ওভার খেলে বাংলাদেশ যে ৫ উইকেটে ১৪১ রান করলো তাতে বড় অবদান ৪৩ রান করা নাইম শেখের, তামিম ইকবালও ৩৯ রান করেন। ওপেনিং জুটিতেই ৭১ রান তুলে ফেলার পরও বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ১৪১-এ শেষ। এর কারণ মুলত দু’ওপেনার তামিম ও নাইম ৭১ রান তুলতে ১১ ওভার খরচ করে ফেলেন। যে কারণে চাপ বাড়ে পরের ব্যাটসম্যানদের উপর। যেটা সামলে মাহমুদউল্লাহ-আফিফ-লিটন ও সৌম্যরা দলকে বড় সংগ্রহ উপহার দিতে ব্যর্থ হন।

লাহোরের উইকেট যে এতোটা স্লথ হবে, সেটা বোধ হয় বুঝতে পারেনি বাংলাদেশ দল। মাত্র তিন জন স্পেশালিস্ট বোলার নিয়ে নেমেছিল বাংলাদেশ। আমিনুল ইসলাম বিপ্লব এখন স্পিনার হিসেবে খেললেও নতুন ভূমিকায় যাত্রা শুরু তার। বিপিএলে বোলার হিসেবে ভালো করা সৌম্য সরকারের ওপর একটু বেশিই বোধ হয় ভরসা করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। সৌম্যর প্রথম ওভার ভালো না করায় একটু গরমিল হয়ে গেছে হিসেবে। মাহমুদউল্লাহ নিজেও অবশ্য বল করেননি, বরং আফিফকে দিয়ে করিয়েছেন একটি ওভার।

টি-টোয়েন্টি যে সবসময় ধুমধাড়াক্কার খেলা নয়, লাহোরের গতকালের টি-টোয়েন্টি সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। বাংলাদেশের ইনিংসে যেমন ছয় আছে তিনটি, আবার পাকিস্তানের ইনিংসে নেই একটিও। সেই ব্যবধান পাকিস্তান পুষিয়ে দিয়েছে ডট বল কম দিয়ে। বাংলাদেশের ইনিংসে ৪৫টি ডট বল দিয়েছেন পাকিস্তানি বোলাররা। সবচেয়ে বেশি ১১টি করে দিয়েছেন ইমাদ ওয়াসিম ও শাহীন শাহ আফ্রিদি। অথচ পাকিস্তানের ইনিংসে ডট ছিল মাত্র ৩৩টি। একটা সময় টানা ১৬ বল সিঙ্গেলস নিয়েছেন মালিক ও আহসান। ১৪১ রানের লক্ষ্যে কোনো বড় শট না খেলেই পৌঁছে গেছে পাকিস্তান।

পাঁচজন ওপেনারকে নিয়ে পাকিস্তানে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তামিম আর নাঈম ওপেন করলেন, কিন্তু পরিস্থিতির দাবিটা কি মেটাতে পারলেন? এরপর লিটন নামলেন। চারে উঠে এলেন মাহমুদউল্লাহ, পাঁচে আফিফ। অথচ পরিস্থিতি সৌম্যকে আগে দাবি করলেও তিনি চলে গেলেন ছয়ে। স্ট্রাইক রেটের দিক দিয়ে দুই ওপেনারকে দায় নিতে হলেও পরের দিকের ব্যাটসম্যানরাও কেউ হাত খুলে খেলতে পারেননি। লাহোরের মাঠে শুরুতে ব্যাট করে সর্বনি¤œ স্কোরের রেকর্ডটা তাই নতুন করে লিখল বাংলাদেশ। যে কারণে হারটাও সঙ্গী হল।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট