চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

পানছড়িতে চাহিদাও আছে বাঁশ ও বেতশিল্পীদের ব্যস্ততা

শাহজাহান কবির সাজু হ পানছড়ি

২২ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ৪:৩৩ পূর্বাহ্ণ

সারাবছর ধরে বাঁশ ও বেতশিল্পীরা হাতের কারুকাজে ব্যস্ত থাকলেও আমন ও বোরো মৌসুমে তাদের ব্যস্ততা বাড়ে দ্বিগুণ।

সরেজমিনে দেখা যায়, বাঁশ ও বেতশিল্পীরা তাদের তৈরি চাটাই বেচায় ব্যস্ত এখন। কথা হয় বিষ্ণু কার্বারি পাড়ার খুশিরাম, বানুরায়, রাসাই কার্বারি পাড়ার সুজেন ত্রিপুরা, ভাইবোনছড়ার থোয়াইলাসাই মারমা, কুড়াদিয়ার সমীর চাকমা ও নাপিতাপাড়ার ইনাধন চাকমার সাথে।

তারা জানায়, এ সময়টাতে চাটাইয়ের চাহিদা বেশি। কাল্যাছড়ি, ডুলু, মিরিঙ্গা, ভাইজ্জা ও এগুজ্যা বাঁশ দিয়েই এসব তৈরি হয়। বাঁশ থেকে বেত বের করা থাকলে দিনে দুটো চাটাই বানানো সম্ভব। এসব চাটাই সাইজভেদে ছয়শ থেকে ৮’শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। প্রতি সপ্তাহে বিভিন্ন বাজারে প্রায় দুই শতাধিক চাটাই বিক্রি হয় বলে জানায় তারা। বিক্রেতা খেদারবন ত্রিপুরা জানায়, এই চাটাই নিচে দিয়ে যারা ধান শুকায় বা রাখে, তখন এটা তলই হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে এটা বেশিরভাগ কৃষক ধানের গোলা তৈরিতে ব্যবহার করে। চাটাইকে গোল করে মুখ দুটো একসাথ করে বাঁশ দিয়ে বেঁধে একটি চকির ওপর বসিয়ে দিলে ধানের গোলা হয়ে যায়। এই গোলাকে চাকমা ভাষায় চিদিরি, ত্রিপুরা ভাষায় চেম্পারাক ও মারমা ভাষায় ওয়েই বলে থাকে। এটাতে ধান রাখলে ইঁদুরের উপদ্র্রব কিছুটা কমে। চাটাই ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন বাজারে শোভা পায় বাঁশের বেতের তৈরি জিনিসপত্র। যা বিক্রি করে কেউ কেউ সন্তানদের লেখাপড়ার খরচও চালিয়ে যাচ্ছে। বেতশিল্পীদের দাবি, এলাকায় কোন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নাই। সরকারিভাবে বাঁশের তৈরি বিভিন্ন পণ্যাদি শহরে রপ্তানির উদ্যোগ নিলে অনেক বেকার যুবক-যুবতীর বেকারত্ব দূরীকরণ সম্ভব। এ ব্যাপারে খাগড়াছড়ি জেলা বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক একেএম সাদেকুর রহমান জানান, এখন তো বাঁশ ও বেতশিল্পের প্রশিক্ষণার্থীই পাওয়া যায় না। প্রশিক্ষণার্থী পেলে সামনে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যাবে। তবে বর্তমানে যেসব বিষয়ে প্রশিক্ষণের চাহিদা রয়েছে, বিভিন্ন উপজেলায় সেসব চালু রয়েছে। এলাকার বাঁশ ও বেতশিল্পীরা আগ্রহ প্রকাশ করে অফিসে যোগাযোগ করলে তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে বলে জানান তিনি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট