চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

রপ্তানি হচ্ছে ২০ জেলায় কক্সবাজারে বেড়েছে সুপারির আবাদ

কায়সার হামিদ মানিক হ উখিয়া

২২ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ৪:৩৩ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজার জেলায় বাণিজ্যিকভাবে বেড়েছে সুপারির চাষ। ইতোমধ্যে জমে উঠেছে জেলার বিভিন্ন এলাকার মৌসুমী সুপারির হাট। স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে এই অঞ্চলের সুপারি যাচ্ছে দেশের অন্তত ২০টি জেলায়।

কক্সবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, অনেক আগে থেকেই সুপারি উৎপাদন হতো এ জেলায়। তবে তা ছিল ঘরোয়া আর বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সুপারির চাষ হতো না।
তখন শুধু জেলার বিভিন্ন বসত ভিটার চারপাশে, বিভিন্ন পতিত জমিতে, ঘের অথবা পুকুর পাড়ে, রাস্তার পাশে সুপারি গাছ ছিল। সুপারির ফলন ভাল হওয়ায় ও বাজারে দাম ভাল থাকায় জেলার চাষিদের অনেকে বাণিজ্যিকভাবে সুপারি চাষের দিকে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। ১০ বছর আগে জেলার চাষিরা ছোট পরিসরে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সুপারির চাষ শুরু করে। আর এ চাষে লাভবান হওয়ায় দিন দিন সুপারি চাষাবাদ বাড়ছে। চলতি বছরে জেলায় ৪৪৫ হেক্টর জমিতে সুপারির আবাদ হয়েছে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৭৩৫ মেট্রিক টন বলে সূত্রে জানায়।

জানা গেছে, জেলায় মোট প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে সুপারির চাষ হয়। তবে কৃষি বিভাগ বলছে জেলায় সুপারি বাগান অনেক থাকলেও বাণিজ্যিকভাবে ৬৪৫ হেক্টর জমিতে এ চাষ করা হয়েছে। জেলার তিনটি উপজেলাতে সুপারির চাষ ভাল হয়। তবে রামু, কক্সবাজার সদর, উখিয়া, টেকনাফ এই চার উপজেলাতে সুপারি চাষাবাদ তুলনামূলক অনেক বেশি। সাধারণত উখিয়া-টেকনাফের মাটিতে সুপারি চাষ ভাল হয়। জুলাই-আগস্ট থেকে শুরু করে অক্টোবর মাস পর্যন্ত সুপারির চারা লাগানো হয়। ৫ ফুট দূরত্ব রেখে প্রতিটি চারা লাগাতে হয়। চারা লাগানোর ৭-৮ বছর পর থেকে ফল আসা শুরু হয়। আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে গাছে ফুল আসে। ফুল থেকে ফলের বোটা আশ্বিন-কার্তিক মাসে পরিপক্ক সুপারি হয়। প্রতি হেক্টর জমিতে ২.৬৮ মেট্রিক টন সুপারি উৎপাদিত হয়। সুপারির বিক্রিতে জেলার সবচেয়ে বড় পাইকারী হাট উখিয়ার সোনারপাড়া বাজার, মরিচ্যা বাজার, কোটবাজার, টেকনাফ সদর, সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ, লেঙ্গুর বিল, শামলাপুর, নোয়াখালী পাড়া ও রামু বাজার। সবচেয়ে বড় পাইকার মোকাম সোনারপাড়া বাজার।

সোনারপাড়ার সুপারি বাগান মালিক আবদুল মাজেদ সিকদার ও মো. আলম জানান, অন্য ফসলের তুলনায় সুপারি চাষে খরচ অনেক কম। চারা লাগানোর প্রথম ২-৩ বছর একটু কষ্ট করতে হয়। প্রথম দিকে জমিতে স্বল্প পরিমাণ সারও দিতে হয়। ৫-৬ বছর পর গাছে ফল আসে। একবার ফল আসলে একাধারে অন্তত ৪০ বছর ফল পাওয়া যায়। প্রতিটা গাছ থেকে বছরে আকারভেদে ৩শ থেকে ৫শ পিস সুপারি পাওয়া যায়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী কামাল উদ্দিন জানান, স্থানীয়ভাবে ৮০ পিস সুপারিতে এক পন হয়। বর্তমান বাজারে প্রতি পন সুপারি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি মৌসুমে আমরা বিভিন্ন বাজার ও গ্রামের চাষিদের কাছ থেকে সুপারি কিনে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ব্যাবসায়ীদের কাছে বিক্রি করি। এতে ব্যবসা মন্দ হয় না।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সদ্য বদলিকৃত উপ-পরিচালক আ.খ.ম শাহারীয়ার বলেন, জেলার মাটি সুপারি চাষের জন্য খুব উপযোগী। সুপারি একটি লাভ জনক ফসল হওয়ায় জেলার অনেক চাষিরা তাদের পতিত জমিতে সুপারির বাগান করছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে জানান তিনি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট