চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

প্রবেশপথে অপরিকল্পিত স্থাপনা ও ভাসমান দোকান

আকর্ষণ হারাচ্ছে সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট

আরফাতুল মজিদ

৫ মে, ২০১৯ | ১:২৬ পূর্বাহ্ণ

অপরিকল্পিত স্থাপনা ও ভাসমান দোকানে দিন দিন আকর্ষণ হারাচ্ছে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট। সুগন্ধা পয়েন্টের প্রবেশ মুখে এলোমেলো ঝুপড়ি দোকানের কারণে বালিয়াড়িতে নামতেই বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে পর্যটকসহ সকলের। প্রায় সময় মূল পয়েন্টটি রাখা হয় নোংরা পরিবেশে। সাগরে নামার মূল পয়েন্ট প্রায়ই দখল ও অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণ করেই যাচ্ছে এখনো। বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির গাফিলতির কারণে সুগন্ধা পয়েন্টের এই করুণ অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় অনেক ব্যবসায়ীদের।
এমনকি অপরিকল্পিত দোকান বসিয়ে সৈকতে শ্রীহীনের মাত্রা বেড়ে গেলেও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। অনেকেই ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে পর্যটক চলাচলের রাস্তাও দখল করে মাছ ভাজার দোকান, মুদির দোকান এবং পানের দোকানও বসিয়েছে।
তবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানা গেছে, দ্রুত সময়ে সুগন্ধা পয়েন্টের প্রবেশ মুখে ট্যুারিস্ট পুলিশের স্থাপনা ছাড়া সকল ঝুপড়ি উচ্ছেদ করে পর্যটক চলাচলের সুব্যবস্থা করা হবে। যেসব দোকানে প্রশাসনের অনুমতি রয়েছে এসব দোকান অন্যত্রে সরিয়ে দেয়া হবে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) সাইফুল ইসলাম জয় বলেন, আসলেই সুগন্ধা পয়েন্টের প্রবেশপথে জঞ্জাল হয়ে গেছে। এতে পর্যটকদের একটু সমস্যা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সিদ্ধান্ত হয়েছে, সুগন্ধা পয়েন্টের প্রবেশ পথে সকল ঝুপড়ি উচ্ছেদ করার। যাদের অনুমতি রয়েছে, তাদের অন্যত্রে সরিয়ে প্রবেশ পথটি উন্মুক্ত করা হবে দ্রুত সময়ে।
অভিযোগ উঠেছে, সৈকতের প্রবেশমুখে ঝুপড়ি দোকান নির্মাণে নেমেছে প্রশাসনসহ স্থানীয় একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। এই দখল কার্যক্রম বন্ধে ফুঁসে উঠেছে কক্সবাজারের মানুষ। কয়েক মাস আগে সৈকতের সৌন্দর্য রক্ষার্থে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছিল ‘আমরা কক্সবাজারবাসী’ নামের একটি সংগঠন। স্মারকলিপি দিয়েও কোনো কাজে আসছে না। দিন দিন সুগন্ধা পয়েন্টের প্রবেশমুখ আরও শ্রীহীন হয়ে যাচ্ছে। সৈকতের প্রবেশ মুখে বালিয়াড়ির সৌন্দর্য ও পর্যটকদের জন্য হাঁটাচলার পথ উন্মুক্ত রাখতে জেলা প্রশাসনের বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটিকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কক্সবাজার সম্পদ রক্ষা আন্দোলনের নেতারা।
কক্সবাজার সম্পদ রক্ষা আন্দোলনের নেতা নাজিম উদ্দিন বলেন, পুরো বিশ্বের কাছে পরিচিত কক্সবাজারের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত। কিন্তু সেই সৈকতের ওপর থাবা পড়েছে প্রশাসনসহ প্রভাবশালীদের। তারা সুগন্ধা পয়েন্টের প্রবেশমুখও দখল করে নিয়েছে। সহজেই সাগরে কোনো মানুষ নামতে পারে না। প্রবেশপথে কেন এলোমেলো ঝুপড়ির দোকান বসতে অনুমতি দেয়, একটি কোন ধরনের প্রশাসন।
কক্সবাজার পিপলস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল বলেন, সুগন্ধা পয়েন্টের প্রবেশমুখ দখল হয়ে গেছে। পর্যটকরা কোন দিকে সাগরে নামবে পথ খুঁজে পায় না। রাস্তা থেকে সাগর দেখা যায় না এলোমেলো ঝুপড়ির কারণে। সৈকতের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে গেছে। ডাবের খোসায় নোংরা পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির কাজ সৈকতের প্রবেশপথ বিক্রি করা নয়। তাদের কাজ সৈকতকে রক্ষা করা।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট