চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির অপেক্ষায় স্কুলপর্যায়ে নির্মিত প্রথম শহীদ মিনার!

বিকাশ নাথ হ বোয়ালখালী

৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ৮:০৫ পূর্বাহ্ণ

আমাদের আন্দোলন সংগ্রামের প্রতীক মহান ভাষা আন্দোলন। আন্দোলন ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে আমাদের ভাষার অধিকার। তারই ধারাবাহিকতায় সারা বাংলাদেশে নির্মিত হয়েছে অসংখ্য শহীদ মিনার। এমনই বাস্তবতায় ১৯৬৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে তৈরি করা হয় কধুরখীল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পাদদেশে ভাষা শহীদদের সম্মানে শহীদ মিনার। ইট সিমেন্ট দিয়ে তৈরি শহীদ মিনারটি দেখতে পিরামিডের মতো। এ বিদ্যালয়ে নির্মিত শহীদ মিনারটি বাংলাদেশে স্কুলপর্যায়ে নির্মিত প্রথম শহীদ মিনার বলে দাবি স্থানীয়দের।
এ শহীদ মিনার নির্মাণে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তৎকালীন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের নেতা মো. সৈয়দুল আলম। এছাড়াও যাদের অবদান রয়েছে শহীদ মিনার নির্মাণের ক্ষেত্রে শাহ্জাদা সৈয়দ রেজাউল্লাহ আকবরী, নুরুল হুদা, আবুল হোসেন, মাহবুব উল আলম, ফরিদ উদ্দীন জালাল, পিযুষ চৌধুরী, মিলন নাথ, যোগব্রত বিশ^াস, মোহাম্মদ আলী, আবুল হাসান, আবদুস সাত্তার, দুলাল মজুমদার, আবুল কালাম আজাদ, মো. ওসমান, এস.এম ইউছুফ, তসলিম উদ্দীন, জাকির হোসেন প্রমুখ।

শহীদ মিনার নির্মাণে সার্বিক সহযোগিতা করেছিলেন কধুরখীল উচ্চ বিদ্যালয়ের তৎকালীন শিক্ষক কাজী আবদুল গণি ছাবেরী। বিদ্যালয় আঙিনায় শহীদ মিনার নির্মাণ করার কারণে মো. নুরুল হুদা ও আবুল হাসানকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। তৎকালীন বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ভবনের বরাদ্দ ও বাতিল করা হয়েছিল।
ইট সিমেন্ট দিয়ে তৈরি পিরামিডের মতো দেখতে শহীদ মিনারটি মহান মুক্তিযুদ্ধে বিলীন করে দেয় পাকিস্তানি সৈন্যরা। দেশ স্বাধীন হবার পর ১৯৭২ সালে এটি নতুন করে পুনর্নির্মাণ করা হয়। মহান একুশে সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে প্রকাশিত এম.এ বার্ণিক’র লেখা ‘জেলায় জেলায় শহীদ মিনার’ গ্রন্থে ৮৯৭ পৃষ্ঠায় দেশের স্কুলপর্যায়ে নির্মিত প্রথম শহীদ মিনার বোয়ালখালীর কধুরখীল উচ্চ বিদ্যালয়ে বিষয়টি লিপিবদ্ধ আছে।
এ বিষয়ে কধুরখীল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিশ^জিৎ বড়ুয়া বলেন, বাংলাদেশের স্কুলপর্যায়ে নির্মিত প্রথম শহীদ মিনার এটি। আমরা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি করে ২০০৯ সালে বাংলা একাডেমির কাছে আবেদন করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য এখনো রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাওয়া যায়নি। বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাই করে এটাকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেবে এমনটি প্রত্যাশা করে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও বোয়ালখালীবাসী।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট