চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

মহামারিকালীন জুমা-জামাতের বিধান

ড. মুহাম্মদ নুর হোসাইন

৬ এপ্রিল, ২০২০ | ১:০২ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় এগারো লাখ এবং মৃতের সংখ্যা ষাট হাজারে পোঁছেছে। এ অবস্থায় কোয়ারেন্টিন বা ঘরে বন্দি থাকাই সবার প্রধান-প্রচেষ্টা। কোয়ারেন্টিন প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মদ (দ.) প্রদত্ত ব্যবস্থাপত্রও বটে। এটা খুবই কষ্টকর বিধায় তিনি এর বিনিময়ে শাহাদাতের পূণ্যের সুসংবাদ দিয়েছেন। মহামারিতে লকডাউন ও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার কথাও পবিত্র হাদিসে এসেছে। কোয়ারেন্টিন জুমা-জামাতের সাথে শব্দগত-অর্থগত-কর্মগত সাংঘর্ষিক। ধর্মীয় নিয়ম হলো, বিপদে আল্লাহকে বেশি ডাকা। কিন্তু বর্তমান মহামারিতে ঘরে বসে আল্লাহকে বেশি ডাকতে হবে- অধিকাংশ নাগরিক এটা বুঝতে নারাজ। এটা যে সুন্নাহ সেটা তাঁদের জানা নেই। অথচ পবিত্র কুরআন-হাদিসে যুগে যুগে মহামারি ও দুর্যোগের কথা উল্লেখ হয়েছে এবং পরিত্রাণের জাগতিক ও আধ্যাত্মিক পন্থা বাতলানো হয়েছে।
অভাব ও অসচেতনতা তো হোমকোয়ারেন্টিনের জন্য বড় বাধা হয়ে আছেই। অনেক আলেমের মহামারিকালীন জুমা-জামাতের বিধান না বুঝাও দুঃখজনক। ফলে হোমকোয়ারেন্টিন বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। অনেকেই ছোঁয়াচে রোগের অস্তিত্বকে অস্বীকার করছেন। এর থেকে বাঁচার চেষ্টা-প্রচেষ্টাকে তাকদিরের সাথে সাংঘর্ষিক মনে করছেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানের কথাকে আমলে নিচ্ছেন না। উল্টো মহামারিতে জুমা-জামাতে বেশি আসা দরকার মর্মেও ফতোয়া দিচ্ছেন। ইসলামের মত জীবনঘনিষ্ট, যুৎসই, সর্বাধুনিক ও মানবিক ধর্মকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন। পবিত্র হাদিসের নির্দেশনা এবং চিকিৎসকদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হোমকোয়ারেন্টিনের বিপরীত অবস্থান নিচ্ছেন। “মানুষ চাঁদে গেছে বিশ্বাস করলে ঈমান যাবে” ফতোয়ার মত মন্তব্য করে ইসলামকে সেকেলে ও বিজ্ঞানের সাথে সাংঘর্ষিক হিসেবে উপস্থাপন করছেন। মসজিদে গিয়ে বহু মানুষ করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সংবাদ প্রচার হওয়ার পরও “তাওয়াক্কুলের” দোহাই দিয়ে বাস্তবতাবিবর্জিত কথা বলছেন। বিশ্ববিবেকের বিপরীত অবস্থান নিয়ে গোটা আলেমসমাজের দুর্নাম কুড়াচ্ছেন। এতে জনগণ দিকভ্রান্ত ও সংশয়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। মূলত কোন বিষয়ে ফতোয়া দিতে হলে যেমন কিতাবি অগাধ পা-িত্য দরকার, তেমনি সমসাময়িক অবস্থা, সংশ্লিষ্ট বিষয়ের জ্ঞান, পরিবেশ-পরিস্থিতি, ফতোয়ার প্রভাব ইত্যাদির সম্যক ধারণা থাকতে হবে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিতে হবে। এগুলো “আদাবুল মুফতি” বা মুফতির যোগ্যতার অন্তর্ভুক্ত।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকার গত ১৭ মার্চ থেকে সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে। ২৬ মার্চ থেকে দুই দফায় ১১ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করেছে। লকডাউনের আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিকসহ সার্বিক ক্ষতির দিক সবার জানা। কিন্তু জনজীবন রক্ষার তাগিদেই করতে হয়েছে। মূলকথা, আগে বাঁচতে হবে, বাঁচাতে হবে। কারণ, চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা এখনো কোবিড-১৯ এর চরিত্র পুরোপুরি আয়ত্ত করতে পারেননি এবং এর প্রতিষেধক তৈরিও হয়নি। তবে তাঁরা একমত হয়েছেন যে, এটি অতি ক্ষুদ্র ও নতুন প্রকৃতির করোনাভাইরাস, যা আগে কখনো দেখা যায়নি। সংস্পর্শ থেকে এর বিস্তার ঘটে। পরীক্ষা না করে রোগী বা অন্য কেউ বুঝতে পারে না যে, সে কোবিড-১৯ বহন করছে। অন্তত ১৪ দিন পর্যন্ত এটি গোপন থাকতে পারে, কোন সিমটম পরিলক্ষিত হয় না। সঙ্গনিরোধ, পরস্পর দূরত্ব বজায় রাখা, কাশি, হাঁচিতে সাবধানতা অবলম্বন করা, বার বার হাত ধুয়া, মাস্ক পরা, নাক-মুখ-চোখে হাত না দেয়া হলো আপাতত এর চিকিৎসা। তাই সরকার হোমকোয়ারেন্টিন বা ঘরে অবস্থানের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন এবং সর্বপ্রকার আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক-ধর্মীয় সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। বাস্তবায়নের জন্য সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে।
আক্রান্তদের পাশাপাশি বেশ ঝুঁকির মধ্যে আছেন আমাদের চিকিৎসক, পুলিশ, সাংবাদিক ও প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট ভাই-বোনেরা। এমতবস্থায় চিকিৎসকগণ যেকোন জমায়েতকে ঝুঁকি মনে করছেন, যার মধ্যে জুমা-জামাতও অন্তর্ভুক্ত। গত ২৫ মার্চ, ২০২০-এর ভাষণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সবাইকে ঘরে নামায আদায় করার পরামর্শ দিয়েছেন। এমন মহামারিতে ঘরে নামায আদায় করাই শরিয়তের বিধান। অতিবৃষ্টি ও শীতের সময়ও ঘরে নামায আদায় করা শরিয়ত সম্মত। করোনা আক্রান্ত মুসলিম দেশসমূহ জুমা-জামাত বন্ধ রেখেছে। এটার ওপর বিশ্বের ইসলামি বিশেষজ্ঞগণ একমত পোষণ করেছেন। এ বিষয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কিছু আলেমকে নিয়ে দুই দুই বার সভা করেছে। উক্ত সভার সিদ্ধান্তগুলো দেশের সচেতন আলেম ও নাগরিকদেরকে হতাশ করেছে। কারণ, গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো দায়সারা গোছের বা “ধরি মাছ না ছুঁই পানি” নীতির। উক্ত সভায় কোন চিকিৎসককে ডাকা হয়নি। অথচ স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট কোন ইবাদতের ফতোয়া দেয়ার ক্ষেত্রে ইসলামি শরিয়ায় বিশেষজ্ঞ চিকৎসকের পরামর্শ জরুরি। ডাকা হয়নি ওআইসির বাংলাদেশের শরিয়া বিষয়ক একমাত্র প্রতিনিধিকে। আলিয়া লাইনের সরকারি সনদপ্রাপ্ত মুফতিদের তেমন কাউকে ডাকা হয়নি, যাঁদেরকে সরকার বেতন-ভাতা দিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ, দাওয়া, আরবি বিভাগের কাউকে রাখা হয়নি, যাঁরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন সমস্যার শরয়ি সমাধান দিয়ে যাচ্ছেন। অথচ এমন জাতীয় সমস্যা মোকাবেলায় সর্বমতের মানুষের ঐক্য প্রয়োজন। করোনার চরিত্রকে আমলে নেয়া হয়নি উক্ত ফতোয়ায়। যেসব পরামর্শ দেয়া হয়েছে, সেগুলোর অধিকাংশ স্ববিরোধী, অকার্যকর এবং অপ্রাসঙ্গিক। যেগুলো প্রাসঙ্গিক সেগুলো সর্বাবস্থার জন্য প্রযোজ্য; করোনার সাথে সম্পর্কিত না। এমন পরামর্শও আছে, যা ইমাম-মুয়াজ্জিনদেরকে বিতর্কিত করবে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো মহামারিকালীন ইসলামি শরিয়ার বিধানের প্রতিফলন ঘটেনি এতে। মহামারিকালীন আজানের ইসলামি পদ্ধতিটিও উল্লেখ করা হয়নি। অথচ স্বীকার করা হয়েছে যে, “সারা বিশ্ব করোনায় আক্রান্ত, আমাদের দেশও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। সরকার ও জনগণ চরম উদ্বিগ্ন। এ ভাইরাসের সংক্রণ থেকে থেকে বাঁচার জন্য সচেতনতা তৈরি এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা মেনে চলা আবশ্যক” (ইফা প্রেস বিজ্ঞপ্তি, ৩০ মার্চ ২০২০)। এতে আট শ্রেণির ব্যক্তিকে জুমা-জামাতে অংশগ্রহণ করতে না করা হয়েছে।
প্রশ্ন হচ্ছে এটা বাস্তবায়ন করবে কে? করতে গেলে যে ফিতনার সৃষ্টি হবে তা সামাল দেবে কে? শুধু কি ঐ সিমটমের লোকগুলো করোনাভাইরাসের বাহক? চিকিৎসকরা কি এ কথার সাথে একমত? ফাঁক করে দাঁড়াতে বলা হয়েছে মুসল্লিদেরকে (চিকিৎসকদের মতে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে)। এভাবে দাঁড় করাবে কে? এভাবে করলে সব মসজিদে কি মুসল্লি সংকুলান হবে? ফাঁক হয়ে দাঁড়ানোর কথাটি হাদিসের সাথে সাংঘর্ষিক। কিছু মানুষকে মসজিদে আসতে না করাও শরিয়ত সম্মত না। যদি কিছু মানুষকে না করা যায় তাহলে সবাইকে না করা যাবে না কেন? এসব দিক বিবেচনায় বিশ্বের বড় বড় স্কলাররা করোনা আক্রান্ত দেশে জুমা-জামাত বন্ধ রাখার ফতোয়া দিয়েছেন। মিসর আল-আজহারের সর্বোচ্চ ফতোয়া বোর্ড জুমা-জামাতে না আসার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন (ফতোয়া নং- ২৪৭, ১৭ মার্চ, ২০২০)। অথচ বাংলাদেশ বেশ ঝুঁকির মধ্যে আছে বলে বিশেষজ্ঞগণের অভিমত আছে এবং আগামী দিনগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই সরকার লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে। এমন দুর্যোগ ও মহামারিতে যদি “আচ্ছালাতু ফি বুয়ুতিকুম” (নামায ঘরে পড়ুন) হাদিসের ওপর আমল করা না যায় তাহলে কত বড় দুর্যোগে করা যাবে?
মহামারিতে হোমকোয়ারেন্টিনের কথা সরাসরি হাদিসে এসেছে। হাদিসে বলা হয়েছে, “তাকদিরে পূর্ণবিশ্বাস রেখে ধৈর্য ও পূণ্যের আশায় কেউ যদি হোমকোয়ারেন্টিন করে তাহলে তার জন্য শহিদের সাওয়াব রয়েছে” (মুসনাদে আহমদ: হাদিস নং-২৬১৩৯)। অতএব হোমকোয়ারেন্টিন শুধু স্বাস্থ্যবিধি নয়; ধর্মীয় বিধানও বটে। হযরত ওমর (র.)-এর “সারাগ” নামক স্থান থেকে ফিরে আসার ঘটনা, “সিংহ থেকে দূরে থাকার ন্যায় ছোঁয়াচে রোগী থেকে দূরে থেকো” (বুখারি: হাদিস নং- ৫৭০৭), “মহামারিতে আক্রান্ত শহরে প্রবেশ করিওনা এবং সেখান থেকে বেরও হইওনা” (বুখারি: হাদিস নং- ৩৪৭৩), “আগে সোয়ার বাঁধো, তারপর আল্লাহর ওপর ভরসা করো” (তিরমিজি: হাদিস নং-২৫১৭) ইত্যাদি সহিহ হাদিসের আলোকে ইসলামি গবেষকগণ মহামারিসহ সর্বরোগ ও বিপদ থেকে বাঁচার চেষ্টা করাকে তাকদিরের সাথে সাংঘর্ষিক নয় মর্মে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। যে হাদিসে “ছোঁয়াচে বলতে কিছু নেই” বলা হয়েছে, সেটি ইসলামের প্রথম যুগের, যার কয়েক বছর পূর্বেও মানুষ আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুর ক্ষমতাতে বিশ্বাসী ছিল। উক্ত হাদিসের বিপরীতে “অসুস্থ পশুকে সুস্থ পশুর নিকট নিয়ে যাবে না” হাদিসটি এসেছে। উভয় হাদিস হযরত আবু হুরাইরা (র.) প্রথম জীবনে বর্ণনা করতেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি প্রথম হাদিসটি বর্ণনা করা ছেড়ে দিয়ে দ্বিতীয়টির ওপর অটল ছিলেন (মুসলিম: হাদিস নং- ২২২১)। অতএব পবিত্র কুরআন-হাদিস, ফিকহনীতি, মাকাছিদুশ শরি‘য়া (ইসলামি বিধানের উদ্দেশ্য), মাছালিহ মুরসালাহ (জান-মাল সুরক্ষা) এবং বিজ্ঞচিকিৎসকদের পরামর্শের ভিত্তিতে বর্তমান প্রেক্ষাপটে ফতোয়া দিতে হবে।
ফতোয়া দানের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের মতামতের সমন্বয় করতে হবে। “পরিস্থিতি আরো নাজুক হলে দেখা যাবে” নীতি এ ভাইরাসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। “দুই মন্দের মধ্যে অপেক্ষাকৃত সহজটাকে গ্রহণ করা” ফিকহি মূলনীতি গ্রহণ করতে হবে। নিজের বা অন্যের ক্ষতির কারণ হওয়া যাবে না (মুয়াত্তা: হাদিস নং-৬০০)। যারা হোমকোয়ারেন্টিন করছে না তারা আইন অমান্য করছেন। এটা অন্যায়। অন্যায় মডেল হতে পারে না। টকশোতে কে কি বলছেন- সেটাও দেখার বিষয় না; এ মুহূর্তে কুরআন-হাদিসের সিদ্ধান্ত কি- সেটাই বাস্তবায়ন করা জরুরি। সুতরাং বর্তমান পরিস্থিতিতে নি¤েœাক্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এক. করোনার প্রাদুর্ভাব না যাওয়া পর্যন্ত মসজিদে জুমা-জামাত বন্ধ থাকবে। মুয়াজ্জিন সাহেব মসজিদে আজান দেবেন এবং আজান শেষে “আচ্ছালাতু ফি বুয়ূতিকুম” আরবি বলে বাংলাতে অনুবাদ করে দেবেন।
দুই. মুয়াজ্জিন একা একা মসজিদে নামায আদায় করবেন। তিন. প্রত্যেক মুসল্লি ঘরে নামায আদায় করবেন। চাইলে ঘরে জামাত করতে পারেন। জুমার নামাযের পরিবর্তে জোহরের নামায আদায় করবেন। চার. জামাত বন্ধ রাখাকে মসজিদ বন্ধ করে দিয়েছে বলে অপপ্রচার করা যাবে না। কেউ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাঁচ. উল্লেখিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার অধিকার সরকারের আছে। জনগণের জীবন রক্ষার স্বার্থে এটি সরকারের দায়িত্বও বটে। যতদিন করোনার প্রাদুর্ভাব কমবে না এবং সরকারি নির্দেশনা আসবে না, ততদিন পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে। উল্লেখ্য যে, জামাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। যখন জামাতের হুকুম নেই, তখন জুমার হুকুমও নেই। জীবন রক্ষা করা সবচেয়ে বড় ফরজ।

ড. মুহাম্মদ নুর হোসাইন সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়; সাবেক মুফতি, চট্টগ্রাম নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসা।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট