চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৬ জানুয়ারি, ২০২০ | ৫:৫০ অপরাহ্ণ

 
 
১৯৮৯ সালের ২৫ আগস্ট বিকেল ৫টায় মেয়েকে (ভিকারুননেসা স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী) স্কুল থেকে আনতে যান সগিরা মোর্শেদ। স্কুলের সামনে পৌঁছানো মাত্রই অজ্ঞাতনামা দুজন তার হাতের ব্যাগ এবং বালা ধরে টান দেয়। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে অজ্ঞাতনামা সেই ব্যক্তি তাকে গুলি করে পালিয়ে যান। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সগিরা মোর্শেদকে মৃত ঘোষণা করেন।
 
এ ঘটনার পরে সে সময় নিহতের স্বামী আব্দুস ছালাম চৌধুরী একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। দুর্বৃত্তরা তাকে পরিকল্পিতভাবে গুলি করে হত্যা করলেও প্রথমে ঘটনাটিকে সাধারণ একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা হিসেবে চাপাতে চেয়েছিল। সেই মামলায় একজনের নামে চার্জশিটও জমা দিয়েছিল পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। কিন্তু দীর্ঘ ৩০ বছর পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি সেই মামলা।
 
৩০ বছর ‘হোয়াইট কলার অপরাধী’ হিসেবে সমাজে পরিবার-পরিজন নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছিলেন অপরাধীরা। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের ৩০ বছর পর থেকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) হত্যার মূল রহস্য উদঘাটনসহ চার আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। এই চার আসামির মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আদালতে চার্জশিটও জমা দিচ্ছে পিবিআই।
 
তদন্ত শেষে পিবিআই জানায়, নিহত সগিরা মোর্শেদকে হত্যায় তার আপন ভাসুর চিকিৎসক ডা. হাসান আলী চৌধুরী এবং তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা শাহীন ছিলেন হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী। আর এই হত্যাকাণ্ডে সহায়তা করেছেন ডা. হাসান আলী চৌধুরীর শ্যালক আনাস মাহমুদ ওরফে রেজওয়ান। হত্যাকাণ্ডের জন্য সে সময়ের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী মো. মারুফ রেজাকে ভাড়া করেছিলেন তারা।
 
পিবিআই আরও জানায়, সগিরা মোর্শেদকে হত্যার পর তার লাশ দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়েছিলেন হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা। জানাজায়ও অংশ নেয় অভিযুক্ত ওই তিন ব্যক্তি। এমনকি একই পরিবারের সদস্য হওয়া সত্ত্বেও গত ৩০ বছর ধরে কেউই বুঝতে পারেনি যে তারাই এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী।
 
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ধানমন্ডির পিবিআই হেডকোয়ার্টারে এসব কথা জানান পিবিআইয়ের প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার। তিনি বলেন, ‘পারিবারিক তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিতভাবে আসামিরা সগিরা মোর্শেদকে প্রকাশ্যে নির্মমভাবে হত্যা করে। আর হত্যার বিষয়টি ধামাচাপা দিতে সেটাকে ছিনতাইয়ের ঘটনা বলে নাটক করে।’
 
তিনি আরও বলেন, ‘এ মামলায় গ্রেপ্তার চার আসামি হলেন সগিরা মোর্শেদের স্বামীর আপন ভাই ডা. হাসান আলী চৌধুরী, তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা শাহীন, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের কর্মকর্তা আনাস মাহমুদ রেজওয়ান ও আবাসন ব্যবসায়ী মারুফ রেজা। গত বছরের ১০ নভেম্বর আনাস মাহমুদ, ১১ নভেম্বর ডা. হাসান আলী চৌধুরী ও তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা শাহীন, ১৩ নভেম্বর মারুফ রেজাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা চারজনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।’
 
আজ বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পুলিশ পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম আদালতের জিআর শাখায় এ চার্জশিট জমা দেন।
পূর্বকোণ-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট