চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

আবরার হত্যা বুয়েটের ২৬ শিক্ষার্থী আজীবন বহিষ্কার

নিজস্ব প্রতিবেদক হ ঢাকা অফিস

২৩ নভেম্বর, ২০১৯ | ৬:১২ পূর্বাহ্ণ

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকা-ের ঘটনায় ২৬ জন শিক্ষার্থীকে আজীবন বা স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় ৬ জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আবরার হত্যার ঘটনায় বুয়েটের করা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বুয়েটের বোর্ড অব রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক ও বোর্ড অব রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিনের সদস্যসচিব অধ্যাপক মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। এদিকে বুয়েট থেকে ২৬ শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে তাঁর পরিবার। গতকাল আবরারের মা রোকেয়া খাতুন ও ভাই আবরার ফাইয়াজ স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে তাদের এই প্রতিক্রিয়া জানান।

গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী। এই ঘটনার পর থেকে প্রথমে ক্যাম্পাসে আন্দোলন ও পরে একাডেমিক অসহযোগে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এতে বুয়েট কার্যত অচল রয়েছে। ওই ঘটনায় আবরারের বাবার করা মামলায় গত ১৩ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ। অভিযোগপত্র জমার প্রতিক্রিয়ায় ১৪ নভেম্বর শিক্ষার্থীরা বলেছিলেন, তিনটি দাবি বাস্তবায়ন হলে তাঁরা একাডেমিক অসহযোগ থেকে সরে গিয়ে ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরবেন। সেই দাবিগুলোর একটি ছিল অভিযোগপত্রে নাম আসা ছাত্রদের বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার।

যেসব শিক্ষার্থীকে বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে, তাঁরা হলেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, সমাজসেবাবিষয়ক উপসম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না, আইনবিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহা, উপদপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ, সহসম্পাদক আশিকুল ইসলাম বিটু, সাবেক সহসভাপতি এস এম মাহমুদ সেতু এবং সদস্য ও কর্মী মিজানুর রহমান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মুনতাসির আল জেমি, মুজাহিদুর রহমান, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, এহতেশামুল রাব্বি তানিম, শামীম বিল্লাহ, মাজেদুর রহমান, আকাশ হোসেন, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মুহাম্মদ মোর্শেদ-উজ-জামান জিসান, মোয়াজ আবু হোরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত ও মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম। এঁদের মধ্যে আশিকুল ইসলাম বিটু ছাড়া বাকি সবার নাম পুলিশের অভিযোগপত্রে রয়েছে।

বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ছয়জন হলেন বুয়েটের শেরে বাংলা হলের ছাত্র আবু নওশাদ সাকিব, সাইফুল ইসলাম, মোহাম্মদ গালিব, মো. শাওন মিয়া, সাখাওয়াত ইকবাল অভি ও মো. ইসমাইল। আবরার হত্যার ঘটনায় বিভিন্ন পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট থাকাসহ কয়েকটি অভিযোগে তাঁদের বহিষ্কার করা হয়েছে।
আবরার হত্যায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বুয়েটের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অন্যতম মুখপাত্র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মাহমুদুর রহমান সায়েম জানান, অভিযুক্তদের বহিষ্কারের বিষয়টি তাঁরা জানতে পেরেছেন। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে তাঁরা পরে এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানাবেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট