চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

নতুন করে রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার নীতিমালা

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৮ অক্টোবর, ২০১৯ | ৮:৩৭ অপরাহ্ণ

জাতীয় অর্থনীতিতে শিল্প খাতের অবদানের স্বীকৃতি প্রদানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উৎসাহিত করতে রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার দেয়া হয়। আর এই পুরস্কার দেয়ার জন্য একটি নীতিমালা রয়েছে। কিন্তু বর্তমান এই নীতিমালা পরিবর্তন করা হচ্ছে। নতুনভাবে তৈরির জন্য ইতোমধ্যে একটি খসড়া নীতিমালা করা হয়েছে। যা মতামতের জন্য সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

নীতিমালায় এ পুরস্কার প্রদানের উদ্দেশ্যে সম্পর্কে ছয়টি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বেসরকারি খাতে শিল্প স্থাপন, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে উৎসাহ প্রদান। বহুমুখী পণ্য উৎপাদন, আমদানি বিকল্প শিল্প পণ্য উৎপাদন ও সৃজনশীলতাকে উৎসাহ প্রদান। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা অনুযায়ী প্রযুক্তিনির্ভর পণ্য উৎপাদনে উৎসাহ প্রদান। পরিবেশবান্ধব ও টেকসই শিল্পায়নকে উৎসাহিত করা। এ ছাড়াও অনন্য ও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্পের বিকাশে উৎসাহ প্রদান।

কী কী ক্ষেত্রে এই পুরস্কার দেয়া হবে তা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রস্তাবিত নীতিমালায়। শিল্প ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য বৃহৎ, মাঝারি, ক্ষুদ্র, কুটির ও হাইটেক শিল্পের সঙ্গে জড়িত কোন শিল্পের সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানকে রাষ্ট্রপতির পুরস্কার প্রদান করা হবে। মোট ছয় ক্যাটাগরির শিল্পের প্রতিটিতে তিনটি করে মোট ১৮টি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে প্রতিবছর এ পুরস্কার দেয়া হবে। শিল্প প্রতিষ্ঠান বিবেচনার ক্ষেত্রে শিল্প খাতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সার্বিক অবদান বিবেচনা করা হবে। শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বার্ষিক টার্নওভার, আমদানি কমে যাওয়া, আমদানি বিকল্প পণ্য উৎপাদন, স্থানীয় কাঁচামাল ব্যবহার, কর্মসংস্থান, সামাজিক দায়িত্ব পালন, পরিবেশ সংরক্ষণ প্রভৃতি ক্ষেত্রের অবদান বিবেচনা করা হবে।

মনোনয়ন যোগ্যতা সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশে উৎপাদনে নিয়োজিত থাকতে হবে। নিয়মিত শুল্ক ও কর পরিশোধ করতে হবে। বিবেচ্য বছরসহ ধারাবাহিকভাবে তিন বছর উৎপাদন কার্যক্রম চালু থাকতে হবে। মনোনয়নের অযোগ্যতা সম্পর্কে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট শিল্প উদ্যোক্তা বা চেয়ারম্যান কিংবা প্রধান নির্বাহী যদি কোনো ফৌজদারি অপরাধের জন্য কোনো ট্রাইবুনাল বা আদালত কর্তৃক দণ্ডিত হন। একই সঙ্গে দণ্ডভোগের পর কমপক্ষে দুই বছর সময় অতিক্রান্ত না হয়ে থাকে। সংশ্লিষ্ট শিল্প উদ্যোক্তা, চেয়ারম্যান কিংবা প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ঋণখেলাপি, সরকারি ইউটিলিটি বিল খেলাপি কিংবা কর খেলাপি হলে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান যদি সরকারি সম্পত্তি, নদী নালা, খাল বা জলাধার, সংরক্ষিত বনাঞ্চল দখল করে স্থাপিত হয়। সূত্র : সময়ের আলো।

কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান একবার পুরস্কৃত হলে অন্য সুযোগ প্রদানের জন্য পরবর্তী দুই বছর পুরস্কার পাওয়ার জন্য যোগ্য বিবেচিত হবে না। প্রাথমিক তালিকা তৈরি জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যবিশিষ্ট কমিটি কাজ করবে। আবেদন মূল্যায়ন কমিটির জন্য ইতোমধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে আহ্বায়ক করে ২০ বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। শিল্পমন্ত্রীকে আহ্বায়ক করে মনোনয়ন চূড়ান্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার হিসেবে একটি ক্রেস্ট ও সম্মাননাপত্র প্রদান করা হবে। এর পাশাপাশি পুরস্কার পাওয়ার পর পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান বা ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জ এক বছরের জন্য ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। এর পাশাপাশি বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানে বা সিটি করপোরেশনের আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ পাবেন।

রাষ্ট্রপতি শিল্প উন্নয়ন পুরস্কারের জন্য বৃহৎ ও মাঝারি শিল্পের জন্য বার্ষিক টার্নওভার, ভ্যাট পরিশোধ, শুল্ক পরিশোধ, বিগত তিন বছরের বিনিয়োগের পরিমাণ, দেশীয় কাঁচামাল ব্যবহার, কর্মসংস্থান সংখ্যা, রপ্তানি আয়, আমদানি বিকল্প পণ্য উৎপাদন, শ্রমিক কল্যাণের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ, অনুমোদিত মজুরি কাঠামো, সামাজিক দায়িত্ব পালন, শ্রমিকের নিরাপত্তা বিধানে গৃহীত পদক্ষেপের বিবরণ, পরিবেশ সংরক্ষণে গৃহীত পদক্ষেপ, নব উদ্ভাবন সংক্রান্ত কার্যক্রমের বিবরণ, পণ্যমান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, উন্নয়ন ও গবেষণার জন্য মূল্যায়নের ধরন উল্লেখ করা হয়েছে। একইভাবে মাঝারি শিল্পের মূল্যায়নের ধরন নির্ধারণ করা হয়েছে।

 

পূর্বকোণ-রাশেদ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট