চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

জড়িতরা নজরদারিতে

ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গা আদালতে স্বীকারোক্তি ইসি কর্মচারী জয়নালের : সংশ্লিষ্টতা রয়েছে পদস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ২:২১ পূর্বাহ্ণ

ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গাদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের বেশ কয়েকজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেপ্তার ইসি কর্মচারী জয়নাল আবেদিন। গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আবু ছালেহ মো. নোমানের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন জয়নাল। এতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম নির্বাচন কার্যালয়ের পদস্থ কর্মকর্তা, স্থায়ী-অস্থায়ী কর্মচারীই এসব কাজ করতেন বলেও জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন বলে আদালত ও তদন্তকারী সংস্থার সূত্রে তা জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের উপ-কমিশনার মো. শহীদুল্লাহ বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে জয়নাল জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে সে যে সকল তথ্য আমাদেরকে দিয়েছে, তা আদালতেও সে স্বীকার করেছে। তবে এই মুহূর্তে এ বিষয়ে মামলার তদন্তের স্বার্থে আর কিছুই বলা যাবে না। তার কাছ থেকে অনেক তথ্যই আমরা পেয়েছি। সে বিষয়ে ইতোমধ্যে তদন্তও শুরু করেছি। এই জালিয়াতির সঙ্গে যারাই যুক্ত রয়েছে, সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে’। তবে আদলত সূত্রে জানা যায়, জয়নাল তার জবানবন্দিতে যাদের নাম প্রকাশ করেছে, তাদের সবাই ঢাকা-চট্টগ্রামের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা-কর্মচারী। এছাড়া আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া অনেক কর্মচারীর সম্পৃক্ততার বিষয়েও নাম প্রকাশ

করেছে। যারা টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয় পত্র দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের সুরক্ষিত সার্ভারে ঢুকে কাজ করতেন। আর যারা জয়নালকে দিয়ে রোহিঙ্গাদের সংগ্রহ করে সার্ভারে ইনপুট দেয়ার আগ পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করেছে তাদের নামও প্রকাশ করেছেন বলেও সূত্র জানায়। এদিকে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের জিজ্ঞাসাবাদে জয়নাল যাদের নাম প্রকাশ করেছে তাদের আটক করতে অভিযান শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এই ইউনিটের একটি সূত্র। সূত্র জানায়, জালিয়াতিতে যুক্ত থাকার বিষয়ে যাদের নাম এসেছে, তাদের একাধিক ব্যক্তিকে ধরতে অভিযান শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে তারা সকলেই পুলিশের নজরদারিতে রয়েছে। যেকোন মুহূর্তে তাদের আটক করা হবে।

প্রসঙ্গত: রোহিঙ্গা নাগরিকদের জাতীয় পরিচয় পত্র পাইয়ে দেয়ার অভিযোগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদিন ও তার বন্ধু বিজয় দাশ এবং তার বোন সীমা দাশ ওরফে সুমাইয়াকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয় জেলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা। এসময় তাদের কাছ থেকে নির্বাচন কমিশনের লাইসেন্সকৃত একটি ল্যাপটপও উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় রাতেই ডবলমুরিং থানার নির্বাচন কর্মকর্তা পল্লবী চাকমা বাদি হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে এই মামলায় জয়নালকে তিনদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট