চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

রাজনৈতিক দলের সাথে সংশ্লিষ্ট ভাস্কর্যবিরোধীরা : তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

৪ ডিসেম্বর, ২০২০ | ১১:০৭ অপরাহ্ণ

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘সন্ত্রাসী কর্মকা-ের উদ্দেশ্যেই বিএনপি অনুমতি ছাড়া সমাবেশ করতে চায়। ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে যারা বক্তব্য দিচ্ছেন, তাদের কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সংশ্লিষ্টতা আছে।’

গতকাল ঢাকার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির পক্ষ থেকে দুটি সাংবাদিক সংগঠনকে মাস্ক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ ও অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গাউসুল আজম শাহজাদা বক্তব্য রাখেন।

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন আমরা অনুমতি না পাওয়ায় বহু সমাবেশ করতে পারিনি, সেজন্য আমাদের রাস্তায় প্রতিবাদ করতে হয়েছে। আগে থেকেই বলবৎ থাকা সভা-সমাবেশের জন্য অনুমতি নেয়ার নিয়মের কথা পুলিশ যখন আবার মনে করিয়ে দিল, তখন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব এ নিয়ে কথা বলছেন। আসলে তারা বিনা অনুমতিতে কিছুদিন ধরে হঠাৎ করে সমাবেশ আয়োজন করছিল। আমরা দেখেছি, তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে হঠাৎ চোরাগোপ্তা মিছিল বের করে গাড়ি ভাঙচুর করা। অনুমতি নিয়ে তো সেটা করতে একটু অসুবিধা হয়।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘২১ আগস্ট সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশ করার জন্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে যখন মুক্তাঙ্গনের জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছিল, মুক্তাঙ্গনে অনুমতি দেয়া হয়নি, কারণ মুক্তাঙ্গনের আশপাশে বিল্ডিং নেই, বিল্ডিংয়ের ওপর থেকে বোমা মারার বা গ্রেনেড ছোড়ার সুযোগ ছিল না।’ ড. হাছান বলেন, ‘মুক্তাঙ্গনে না দিয়ে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়েতে। কারণ বঙ্গবন্ধুর এভিনিউয়ের চারপাশের ভবন থেকে গ্রেনেড ছোড়ার সুবিধা ছিল।’

দেশে ভাস্কর্য নিয়ে অহেতুক একটি বিতর্ক সৃষ্টির অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘উপমহাদেশে ইংরেজরা আসার পর কেউ কেউ ইংরেজি শিক্ষা হারাম বলে ফতোয়া দিয়েছিল, টেলিভিশন চালু হলে তা দেখা হারাম এবং হজে যাওয়ার জন্য ছবি তোলাও হারাম বলে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় ফতোয়া দেওয়া হলো যে, যারা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করছে তারা সবাই কাফের। সেই ধারাবাহিকতা তাদেরই প্রেতাত্মারাই কিন্তু আজকে ভাস্কর্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।’

হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘বাংলাদেশেও অনেক আগে থেকে বহু নেতা, কবি, সাহিত্যিকের ভাস্কর্য আছে। তখন কেউ কিছু বলেননি। হঠাৎ করে এই প্রশ্ন আনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত। কারণ যারা এই প্রশ্নগুলো উপস্থাপন করছেন তাদের কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সংশ্লিষ্টতা আছে। তারা বিভিন্ন দলের নেতা, তাদের দলগুলো আবার নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত। সুতরাং তারা যখন বক্তব্য দেন, তখন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই বক্তব্য দেন।’

ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম, এর অপব্যাখ্যা করে বিভ্রান্তি না ছড়ানোর জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ জানিয়ে ড. হাছান বলেন, ‘যারা এতদিন ধরে স্বাধীনতাবিরোধীদের লালন করেছে, পোষণ করেছে, স্বাধীনতাবিরোধীদের দিয়ে রাজনীতি করে, তারাই এটার পেছনে ইন্ধন দিচ্ছে। সুতরাং আমাদের এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।’ অনুষ্ঠান শেষে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ ও ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল মজিদের হাতে মাস্ক তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী।

 

পূর্বকোণ/এন.এইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট