চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

পদ্মায় বসল ৪০ তম স্প্যান, দৃশ্যমান ৬ কিলোমিটার

অনলাইন ডেস্ক

৪ ডিসেম্বর, ২০২০ | ১:১৩ অপরাহ্ণ

মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া প্রান্তে বসানো হয়েছে পদ্মা সেতুর ৪০তম স্প্যান। শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সেতুর ১১ ও ১২ নম্বর পিলারের ‘টু-ই’ নামে এ স্প্যান বসানো হয়।

এর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হলো পদ্মা সেতুর সেতুর ৬ কিলোমিটার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প ব্যবস্থাপক (মূল সেতু) দেওয়ান আবদুল কাদের।

৩৯তম স্প্যান বসানোর ৮ দিনের মাথায় বসানো হলো এ স্প্যানটি। আর এখন ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি স্প্যান বসানো হলেই ৬ হাজার ১৫০ মিটার সেতুর অবকাঠামো দৃশ্যমান হবে। গেল দুই মাসে সেতুতে ৮টি স্প্যান বসিয়ে রেকর্ড তৈরি করেছেন দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীরা। বিজয়ের মাসে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে স্প্যান বসানোর কাজটি সম্পন্ন করার ব্যাপারে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ‘তিয়ান-ই’ নামের ভাসমান ক্রেনটি ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের স্প্যানটি নিয়ে রওনা দেয়। এরপর ৪০ মিনিট সময় নিয়ে ১১ ও ১২ নম্বর পিলারের কাছে এসে পৌঁছায়। ওই দিনই ছয়টি ক্যাবলের (তার) মাধ্যমে নোঙর করা হয় ক্রেনটি। শুক্রবার শুধু পিলারের ওপরে স্প্যানটি বসানো হয়।  

পদ্মা সেতুর প্রকৌশলী সূত্র জানায়, শুক্রবার সকাল থেকে ২ পিলারের মধ্যবর্তী স্থানে স্প্যান বহনকারী ভাসমান ক্রেনটি পজিশনিং করে। এরপর স্প্যানটিকে ইঞ্চি ইঞ্চি মেপে তোলা হয় পিলারের উচ্চতায়। পরে রাখা হয় ২টি পিলারের বেয়ারিংয়ের ওপর। স্প্যানটি বসানোর জন্য ধাপগুলো সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় প্রকৌশলীদের বেগ পেতে হয়নি। কোনো রকম বাধা ছাড়াই স্প্যানটি বসাতে পেরে খুশি সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা।

গত ২৭ নভেম্বর ৩৯তম স্প্যান বসানো হয়। আগামী ১০ ডিসেম্বর ১২ ও ১৩ নম্বর পিয়ারে ৪১তম স্প্যান স্প্যান ‘২-এফ’ বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

এছাড়া সেতুর ২ হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্লাবের মধ্যে ১ হাজার ৪১টির বেশি রোড স্ল্যাব বসানো হয়েছে। আর ২ হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে এখন পর্যন্ত বসানো হয়েছে ১ হাজার ৫০০টির বেশি।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়।

২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হয় ৩৪টি স্প্যান। ৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে।

এর মধ্যে সব কটি পিয়ার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর আগামী ২০২১ সালেই খুলে দেয়া হবে।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট