বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। দেশটির পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ এবং উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে শুক্রবার (২০ নভেম্বর) একথা জানানো হয়।

প্রতিবেদনে এ বছরের প্রথম ছয় মাসের (জানুয়ারি থেকে জুন) বাংলাদেশসহ ৩০টি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাজ্যের পর্যালোচনা স্থান পেয়েছে। ৩০টি দেশের তালিকায় উত্তর কোরিয়া, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, মিয়ানমার, সোমালিয়া, সুদানের মতো দেশের নামও।

প্রতিবেদনে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বলা হয়, ২০২০ সালের প্রথম ছয় মাসে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে কমপক্ষে ১৫৮টি। অব্যাহত রয়েছে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করা। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক হয়েছেন কমপক্ষে ৩৮ জন সাংবাদিক।

করোনা মোকাবেলায় সরকারি উদ্যোগের সমালোচনা করায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক করা হয়েছে স্বাস্থ্যকর্মী, পেশাজীবী এবং অন্যান্য সমালোচকসহ চার শতাধিক ব্যক্তিকে। মার্চে ছয় মাসের জন্য সাজার মেয়াদ স্থগিত করার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে কারাগার থেকে মুক্তি পান বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বিরোধীদলীয় এক প্রার্থীর ওপর হামলা ও ভোটারদের ব্যাপক ভয়ভীতি প্রদর্শনে কালিমালিপ্ত ছিল। ওই নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করায় সরকার যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য কূটনৈতিক মিশনের সমালোচনা করে।

প্রতিবেদনে মনে করিয়ে দেয়া হয়, উদ্বেগের জায়গাগুলোকে অগ্রাধিকার দিলেও অগ্রগতি হয়েছে এমন সব ইতিবাচক উন্নয়নগুলো প্রতিফলনের চেষ্টাও করি।

বাংলাদেশের প্রশংসা করে এতে আরও বলা হয়, কক্সবাজারে প্রায় ৮ লাখ ৬০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়া অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ। গত এপ্রিল ও মে মাসে বঙ্গোপসাগরে ভাসমান রোহিঙ্গা বহনকারী কয়েকটি নৌকা উদ্ধার করে কিছু শরণার্থীকে ভাসানচরে নেয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ভাসানচরে সুরক্ষা ও সুবিধাগুলো পর্যালোচনার লক্ষ্যে স্বাধীন ও সমন্বিত কারিগরি এবং সুরক্ষা বিষয়াদি মূল্যায়নের জন্য যুক্তরাজ্যসহ অংশীদাররা আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছে। কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরগুলোতে ইন্টারনেট সুবিধায় বিধি-নিষেধ অব্যাহত রাখার ফলে ব্যাহত হচ্ছে করোনাবিষয়ক জনস্বাস্থ্যসেবা প্রদান ও মানবিক সহায়তা কার্যক্রম।

পূর্বকোণ/আরপি