চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

দাম্পত্য কলহের জেরে শ্যালককে দীঘিতে ডুবিয়ে হত্যা, দুলাভাই আটক

পূর্বকোণ ডেস্ক

৯ অক্টোবর, ২০২০ | ৭:০১ অপরাহ্ণ

দাম্পত্য কলহের জেরে আবদুল্লাহকে(৭) নামের এক শ্যালককে দীঘির জলে ডুবিয়ে হত্যার করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দিলেন দুলাভাই। এসময় আরেক  ১৮ মাস বয়সী আরেক শ্যালক আফসানকে একই কায়দায় হত্যার চেষ্ঠাকালে স্থানীয় লোকজন দেখে ফেলায় তাকে  জীবিত উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ডালভাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। দুলাভাই মোসলেম আলীকে (২৪) আটক করছে পুলিশ। সে শ্যালকদের হত্যা চেষ্টার কথা স্বীকার করেছেন।

ঢলুয়া ইউনিয়নের রায়ভোগ গ্রামের ছগির মিয়ার (৪০) তিন মেয়ে ও দুই ছেলের মধ্যে শিশু আবদুল্লাহ ও আফসান সবার ছোট। মোসলেম শিশু আবদুল্লাহ ও আফসানের বড় বোন ছবি বেগমের স্বামী।

নিখোঁজ শিশু আফসানের পিতা ছগির মিয়া জানায়, ঘাতক মোসলেমের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলায়। রাজধানী ঢাকায় থাকার সুবাদে সেখানে পরিচয় হওয়ার পরে তার মেয়ে ছবি (২০) বেগমের সাথে মোসলেমের বিয়ে হয়। মোসলেম রাজধানী ঢাকার একজন রিকশা শ্রমিক। তিনি নেশাগ্রস্ত হওয়ায় বিয়ের পর থেকে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকতো। মোসলেম তার স্ত্রী সন্তানের ভরণপোষণও ঠিকমত নির্বাহ করতেন না। তাই মাসখানেক আগে শিশুপুত্র নিয়ে পিতার বাড়ি বরগুনার রায়ভোগ গ্রামে চলে আসেন ছবি বেগম। সম্প্রতি ছবি বেগম তার ছোট ভাইবোন এবং একমাত্র শিশুপুত্র নিয়ে তাদের নানাবাড়ি ঢলুয়া ইউনিয়নের ডালভাঙ্গা গ্রামে বেড়াতে যান। তিনদিন আগে ঢাকা থেকে স্ত্রী পুত্রকে নিতে বরগুনায় আসেন মোসলেম। এ সময় স্ত্রী ছবি বেগম তার সঙ্গে যেতে রাজি না হলে মোসলেম তার শিশুপুত্রকে নিয়ে যেতে চান। স্ত্রী ছবি বেগম এবং শ্বশুর ছগির মিয়া মোসলেমের কাছে তার শিশুপুত্রকে দিতে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রী ছবি বেগমের আপন ছোট দুই ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে নদীতে নিক্ষেপ করেন মোসলেম। প্রথমে সাত বছরের শিশু আবদুল্লাহকে জলাশয়ে নিক্ষেপ করে হত্যার পর তার মৃতদেহ বিষখালী নদীতে ভাসিয়ে দেন। এরপর অপর সহোদর ১৮ মাস বয়সী শিশু আফসানকে পানিতে নিক্ষেপ করলে আবদুর রহিম নামের স্থানীয় একজন তা দেখে ফেলেন। ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা ঘাতক মোসলেমকে আটক করে রাখে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘাতক মোসলেম পুলিশ ও স্থানীয়দের কাছে এমন তথ্য দিয়েছেন। স্থানীয়দের কাছ থেকে উদ্ধার করে মোসলেমকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ। পরে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। অভিযুক্ত মোসলেম শিশু শ্যালক আবদুল্লাহকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমার ছেলেকে নিয়ে যেতে এসেছিলাম, কিন্তু আমার স্ত্রী ও শ্বশুর নিয়ে যেতে দেয়নি। এ কারণে ক্ষুদ্ধ হয়ে আমি শ্যালক আবদুল্লাহ ও আফসানকে হত্যার পরিকল্পনা করে বেড়াতে নিয়ে যাই। এরপর প্রথমে আবদুল্লাহকে দীঘিতে ফেলে ডুবিয়ে হত্যা করে লাশ বিষখালী নদীতে ভাসিয়ে দেই। এরপর আফসানকেও একই প্রক্রিয়ায় হত্যার চেষ্টা করি।

পূর্বকোণ / আরআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট