চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

প্রতারক নাসিম হাতিয়ে নিয়েছেন ৩শ কোটি টাকা

প্রতারক নাসিম হাতিয়ে নিয়েছেন ৩শ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

১ অক্টোবর, ২০২০ | ৬:৫৫ অপরাহ্ণ

নাসিম রিয়েল এস্টেটের মালিক ইমাম হোসেন নাসিম (৬০) ও তার স্ত্রী হালিমা আক্তার সালমাকে (৩২) প্রতারণাসহ বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। তাদের বিরুদ্ধে ৫৫টি মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। রাজধানীর রূপনগর আবাসিক এলাকার বাসা ও চিড়িয়াখানা রোডের নাসিম রিয়েল এস্টেট কোম্পানির অফিসে গতকাল বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ম্যাগজিন, তিন রাউন্ড গুলি, এক লাখ ৩৫ হাজার টাকার জাল নোট, এক হাজার ৪শ’ পিস ইয়াবা, দুই বোতল বিদেশি মদ, ৪টি ওয়াকিটকি সেট, ৬টি পাসপোর্ট, ৩৭টি ব্যাংক চেকবই ও ৩২টি মোবাইল সিম জব্দ করা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান, গ্রেপ্তারকৃত নাসিম অন্যের জমি ও সরকারি খাস জমি দখল করে আবাসিক এলাকা গড়ে দেয়ার নামে প্রায় ৫ হাজার মানুষের সাথে বায়না করেন। তিনি সাভারের কাউন্দিয়ায় জমি সংক্রান্ত প্রতারণার মাধ্যমে অন্তত ৩শ’ কোটি টাকা লোপাট করেছেন। এরপর বায়নাকৃতদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ও ২৫০ জনের সাথে ভুয়া চুক্তিপত্র করেন। তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে সাড়ে ১২ লাখ থেকে শুরু করে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেন নাসিম।

মোজাম্মেল হক আরও জানান, ১৯৭৮ সাল থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত ইমাম হোসেন নাসিম ঠিকাদারির কাজ করে আসলেও ২০০২ সাল থেকে অভিনব প্রতারণামূলক কৌশলে নিজেকে নাসিম রিয়েল এস্টেট কোম্পানির মালিক পরিচয় দিয়ে সাইনবোর্ড টানিয়ে ও ক্ষেত্রবিশেষে অস্ত্রের ভয়ভীতি দেখিয়ে নানা অপরাধ চালিয়ে আসছিল। ২০০৫ সাল থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ভিন্ন ভিন্ন মানুষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন নাসিম। তিনি নামে-বেনামে ৩২টি সিমকার্ড ব্যবহার করে প্রতারণার শিকার মানুষদের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে চলে যেতেন।

র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক আরো জানান, রাজধানীর শাহ আলী এলাকার ২৫/২৯, চিড়িয়াখানা রোডের নাসিম গ্রুপের অফিসে অভিযান চালানোর সময় তার মালিকানাধীন ১৬টি প্রতিষ্ঠানের সন্ধান পাওয়া যায়। প্রতিষ্ঠানগুলো হল- নাসিম রিয়েল এস্টেট লি., নাসিম ডেভলপার লি., নাসিম এগ্রো ফুড লি., নাসিম বাজার, এস বি ফাউন্ডেশন, ডা. বেলায়েত হোসেন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, নাসিম পার্সেল ও কুরিয়ার সার্ভিস, ইমারত অর্থ, নাসিম শিপ বিল্ডার্স, নাসিম ইঞ্জিনিয়ারিং ও কন্সাল্টেন্সি, নাসিম ট্রেডিং লি., সাহানা আই হাসপাতাল, বাংলানিউজ ১৬, নাসিম ড্রিংকিং ওয়াটার, নাসিম রিফাইন্ড সুগার ও নাসিম বেভারেজ লি.।

মোজাম্মেল হক জানান, বিভিন্ন সময় অস্ত্র-ওয়াকিটকি দেখিয়ে নিজের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করত। গ্রেপ্তার এড়াতে আন্ডারগ্রাইন্ডে তার ফিঙ্গারপ্রিন্টের দরজাযুক্ত গোপন অফিসে আত্মগোপন করতেন। এসময় তার তৃতীয় স্ত্রী হালিমা আক্তার ব্যবসা দেখাশোনা করতেন। নাসিমের বিরুদ্ধে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় প্রতারণা, ভূমিদস্যুতা, মাদক ও জালটাকা মামলায় অর্ধশতাধিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।

 

 

 

পূর্বকোণ/আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট