চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ইউএনও হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী নবীরুল

ইউএনও হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী নবীরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০ | ১২:৩১ পূর্বাহ্ণ

র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তাঁর বাবা ওমর আলীর ওপর হামলার ঘটনায় আটককৃত তিনজন হামলায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এদের মধ্যে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন রংমিস্ত্রি নবীরুল। তাছাড়া ‘চুরির করার জন্য’ নৃশংস এই হামলার ঘটনা ঘটায় আটককৃতরা। রংপুর নগরীর র‌্যাব-১৩ এর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আজ শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় র‌্যাব-১৩ এর অধিনায়ক কমান্ডার রেজা আহমেদ ফেরদৌস এসব তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, র‌্যাব এই ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছয়জনকে আটক করেছিল। এদের মধ্যে আসাদুল ইসলাম, নবীরুল ইসলাম ও সান্টু কুমারের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আসাদুলের দাবি, এটি একটি চুরির ঘটনা। প্রকৃত ঘটনা জানার জন্য আরও সময় দিতে হবে, আরও তদন্ত করতে হবে, প্রয়োজনে সম্পৃক্তদের রিমান্ডে নিতে হবে।

র‌্যাব-১৩ অধিনায়ক সাংবাদিকদের বলেন,নবীরুল এই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী বলে আসাদুল জিজ্ঞাসাবাদে জানায়। তাঁকে ঘোড়াঘাট উপজেলা সংলগ্ন চক বামনদিয়া বিশ্বনাথপুর গ্রাম থেকে আটক করা হয়। নবীরুল ও সান্টু কুমার দু’জনেই পেশায় রংমিস্ত্রি। ঘোড়াঘাট থানায় আসাদুল ও নবীরুলের বিরুদ্ধে চুরি মাদকের একাধিক মামলা রয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজে লাল টিশার্ট পড়ে হালকা-পাতলা গড়নের যে ব্যক্তিকে দেখা গিয়েছিল তিনিই নবীরুল। জিজ্ঞাসাবাদে নবীরুল এই তথ্য নিশ্চিত করে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীরকেও আনা হয়েছিল। পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হলে তিনি বাড়ি গেছেন।

প্রয়োজনে আবারও যে কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হতে পারে জানিয়ে র‌্যাব কর্মকর্তা রেজা আহমেদ ফেরদৌস বলেন, তাঁরা ইউএনওর বাসায় হামলার ঘটনার ছায়া তদন্ত করছেন। এখানে কারও রাজনৈতিক পরিচয় তাঁদের বিবেচনার বিষয় নয়।

হামলার কারণ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব-১৩ অধিনায়ক বলেন, প্রধান আসামিকে আটক করতে পারাটাই তাঁদের সফলতা। সন্দেহজনকভাবে তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। আসাদুলের দাবি অনুযায়ী, চুরির অভিপ্রায় থেকে এ ঘটনা ঘটেছে। প্রকৃত ঘটনা আরও থাকতে পারে। তবে তা সময়সাপেক্ষ, এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়।

প্রসঙ্গত, ঘোড়াঘাটের ইউএনও’র সরকারি বাসভবনের ভেন্টিলেটর কেটে গত বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে দুর্বৃত্তরা তাঁর শয়নকক্ষে ঢুকে পড়েন। এর আগে দুর্বৃত্তরা ওই বাসভবনের নিরাপত্তা প্রহরীকে বেঁধে প্রহরীকক্ষে তালা দিয়ে আটকে রাখেন। পরে সকালে স্থানীয়রা বাড়িতে খোঁজ নিয়ে দেখেন আহতাব্স্থায় ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা পড়ে আছেন। পরে তারা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে ইউএনও, তাঁর বাবা ও প্রহরীকে উদ্ধার করে। আহত বাবা-মেয়েকে গতকাল বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে গুরুতর আহত ওয়াহিদাকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হয়। বর্তমানে তিনি এখন ঢাকার আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস এন্ড হসপিটালে ও তার বাবা রংপুর মেডিকেল কলেজে (রমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

 

 

 

পূর্বকোণ/আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট