চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ বাদ দেওয়ার আইনি নোটিশ প্রত্যাহার

‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ বাদ দেওয়ার আইনি নোটিশ প্রত্যাহার

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৯ আগস্ট, ২০২০ | ১১:৩২ অপরাহ্ণ

বাংলাদেশের সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতা লেখার দাবিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট ১০ জনকে পাঠানো আইনি নোটিশ প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অশোক কুমার ঘোষ আজ বুধবার (১৯ আগস্ট) এক বিজ্ঞপ্তিতে তা প্রত্যাহার করে নেন। তিনি নিজেই গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তাই এই নোটিশ প্রত্যাহার করে নিয়েছি।

এর আগে তার প্রেরিত নোটিশে বলা হয়েছে, ১৯৪৭ সালের পর পশ্চিম পাকিস্তানিদের শোষণ, নির্যাতন এবং বেআইনি কার্যকলাপের প্রতিবাদে পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে আমরা হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খৃস্টানসহ অন্যান্য নাগরিকরা এক রক্তয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে ভারত, রাশিয়াসহ অন্যান্য দেশের সার্বিক সহযোগিতায় স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমাদের ১৯৭২ সালের পবিত্র সংবিধানে স্বাধীনতার চেতনাসহ রাষ্ট্র পরিচালনায় মূলনীতি ছিল জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা।

নোটিশে বলা হয়েছে, স্বাধীনতার চার বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ১৯৭২ সালের সংবিধানের মূলনীতিসমূহ পরিবর্তন করা হয়। যা স্বাধীন বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায় এবং সংখ্যালঘু জনগণ মনেপ্রাণে গ্রহণ করেনি। সংবিধানে ২ক অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রধর্ম সংযোজনের ফলে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ এখন সাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে।

নোটিশে আরও বলা হয়, বর্তমানে ভারত সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের জন্য হিন্দুরাষ্ট্র হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে সাংবিধানিকভাবে হিন্দুরাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পাবে। সুতরাং বিশ্ববাসীকে অসাম্প্রদায়িক চেতনার জন্য বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে পরিগণিত করা আবশ্যক। সেজন্য পবিত্র সংবিধানে অর্থাৎ মূলনীতি ৮ম আর্টিকেলে ধর্মনিরপেক্ষতা থাকবে। কিন্তু কোনোক্রমেই রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকবে না।

এই আর্টিকেলটি পরিবর্তনের জন্য অশোক কুমার সাহার পক্ষে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করার জন্য লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করেছিলেন। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে আপাদত রিট পিটিশন দায়ের করা হবে না। ভবিষ্যতে রাজনৈতিকভাবে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করা হবে। আপাতত লিগ্যাল নোটিশটি প্রত্যাহার করা হলো বলে জানানো হয়।

এর আগে সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতা লেখার দাবিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিএনপি মহাসচিব, জাতীয় পার্টির মহাসচিব, গণফোরামের ড. কামাল হোসেন, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেননকে বিবাদী করে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়।

ওইদিন তিনি সাংবাদিকদের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধান থেকে বাদ দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতা লেখা শুরু করার দাবি জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ মাইনরিটি সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অশোক কুমার সাহার পক্ষে পাঠানো লিগ্যাল নোটিশ পাওয়ার দিন থেকে ১৫ দিনের মধ্যে রাতে হবে। অন্যথায় বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক জনগণের পক্ষে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করা হবে বলেও জানানো হয়।

 

 

 

 

পূর্বকোণ/আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট