চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

আমৃত্যু সাজাপ্রাপ্ত পলাতক যুদ্ধাপরাধী জব্বারের মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক

১৮ আগস্ট, ২০২০ | ৪:৫৪ অপরাহ্ণ

যুদ্ধাপরাধের দায়ে আমৃত্যু সাজাপ্রাপ্ত ফেরারি আসামি পিরোজপুর-৩ মঠবাড়িয়া আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির নেতা আব্দুল জব্বার ইঞ্জিনিয়ার মারা গেছেন। মুত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।

আজ মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) সকালে আমেরিকার ফ্লোরিডায় তার মেয়ের বাসায় আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তিনি মারা যান বলে তার পারিবারিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, বেশ কয়েক বছর ধরে ক্যান্সার আক্রান্ত অবস্থায় তিনি আমেরিকায় তার বড় মেয়ের বাসায় আত্মগোপনে থেকে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

উপজেলার টিকিকটা ইউনিয়নের সূর্যমণি গ্রামের ২৪ হিন্দু নারী-পুরুষকে গণহত্যার দায়ে ২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য রাজাকার আব্দুল জব্বারসহ সাতজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই সময়ে সূর্যমণিতে রাজাকারদের গুলি খেয়েও বেঁচে যাওয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত জ্ঞানেন্দ্র মিত্র (৬২) বাদী হয়ে মঠবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেছিলেন। মামলায় জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও পিরোজপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) আসনের সাবেক এমপি আব্দুল জব্বারকে প্রধান আসামি করে সাতজনের নামে মামলা করা হয়। এছাড়া মামলায় আরো ৬০/৬৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। ওই বছর বছর ২১ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা স্থানান্তরিত হয়।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে আব্দুল জব্বার পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান হয়ে বিশাল এক রাজাকার বাহিনী গড়ে তুলে স্থানীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট চালিয়েছিলেন। আর যুদ্ধাপরাধের দায়ে ২০১৫ সালে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন আদালত। ওই মামলা দায়েরের আগেই তিনি দেশ ছেড়ে আমেরিকায় পালিয়ে যান। এরপর থেকে তিনি আমেরিকায় পলাতক অবস্থায় ছিলেন।

তার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় মঠবাড়িয়ায় ৩৬ জন মুক্তিকামী মানুষের ওপর গণহত্যা, ২০০ জনকে জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করা ও ৫৫৭টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করাসহ পাঁচটি গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া সেক্টর কমান্ডারস ঘোষিত ৫০ জন যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় আব্দুল জব্বারের নাম রয়েছে।
পরে তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী পাঁচ ধরনের অভিযোগে ২০১৪ সালের ১ মে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন। ওই বছরের ১২ মে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। ২০১৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি এনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল-১ এর আদালতে পলাতক যুদ্ধাপরাধী আব্দুল জব্বারের আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়।

কিন্তু ২০১০ সালে তিনি গোপনে দেশ ছেড়ে আমেরিকায় আত্মগোপন করেন।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট