চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

এমআরডিআই সংবাদবোধ গবেষণা

কোনো সংবাদমাধ্যমই ব্যবহার করেন না দেশের ১৮ শতাংশ মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৭ জুলাই, ২০২০ | ১০:৫১ অপরাহ্ণ

সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার ড. মো. গোলাম রহমান বলেছেন, সময়ের সাথে সব কিছুই বদলাচ্ছে। প্রিন্ট মিডিয়াও বর্তমান অবস্থায় থাকবে না। তাই সংবাদকে নতুন ফরমেটে কীভাবে কাজে লাগানো যায় তা আমাদের ভাবতে হবে। তবে বর্তমানে অনেক সময় সংবাদের সঠিক মূল্যায়ন হচ্ছে না। সংবাদ নির্মোহভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে দেখে ভুল তথ্যে প্রভাবিত হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। সেজন্য বর্তমান সময়ে নিউজ লিটারেসি জানা খুব দরকার।
আজ সোমবার (২৭ জুলাই) দুপুরে এমআরডিআই এর সাম্প্রতিক সংবাদবোধ বিষয়ে একটি জাতীয় গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশের ভার্চুয়াল সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সম্প্রতি সংবাদবোধ বিষয়ে ওই গবেষণাটি করেছে এমআরডিআই ও ইউনিসেফ।
‘নিউজ লিটারেসি ইন বাংলাদেশ : ন্যাশনাল সার্ভে’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফল এবং সুপারিশ উপস্থাপন করেন প্রধান গবেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল আলম চৌধুরী।
ভার্চুয়াল সভায় প্যানেল আলোচক হিসাবে ছিলেন সাবেক তথ্য কমিশনার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. সাদেকা হালিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতিআরা নাসরিন এবং চ্যানেল আই অনলাইনের সম্পাদক জাহিদ নেওয়াজ খান।
গবেষণা উপস্থাপণ করে মোহাম্মদ সাইফুল আলম চৌধুরী বলেন, দেশের ১৮ শতাংশ মানুষ সংবাদ জানার জন্য কোনো সংবাদমাধ্যম ব্যবহার করেন না। সংবাদমাধ্যম যারা ব্যবহার করেন না, তাদের ৪৩ শতাংশ মনে করেন তাদের সংবাদমাধ্যম ব্যবহারের সময় নেই এবং সাড়ে ১১ শতাংশ সংবাদমাধ্যমের উপর বিশ্বাস নেই। এসব তথ্য সাড়ে ১৩শ’ জনের উপর জরিপ চালিয়ে পাওয়া গেছে।
গবেষণায় বলা হয়, সংবাদবোধ বাড়ানোর জন্য তথ্য আরো বেশি সহজলভ্য করতে হবে। কারণ সংবাদবোধের মাধ্যমে মানুষ গণমাধ্যম ও গণমাধ্যম নয় সেটার পার্থক্য করতে পারে। এছাড়া আনুষ্ঠানিক শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। সংবাদবোধ বাড়ানোর জন্য ফ্রেমওয়ার্কও দরকার রয়েছে। সেজন্য সরকার, এনজিও ও মিডিয়াকে একত্রে কাজ করতে হবে।
এমআরডিআই গবেষণায় আরো উঠে এসেছে, দেশের দুই তৃতীয়াংশ মানুষ ভুয়া নিউজের অভিজ্ঞতা পেয়েছেন। তাছাড়া ভুয়া নিউজের প্রবণতা শহুরে এলাকা থেকে গ্রামীণ এলাকায় বেশি বিস্তৃত। মানুষ সংবাদের জন্য টিভি বেশি ব্যবহার করেন আর সেই সংখ্যাটা নারীদের মধ্যে বেশি। এছাড়া দেশে বয়স্কদের চেয়ে তরুণদের মধ্যে সংবাদবোধ বেশি। ২৪ শতাংশ মানুষের সংবাদবোধ ভালো, ৭৬ শতাংশের সংবাদবোধ কম।
গবেষণা উপস্থাপন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সাদেকা হালিম বলেন, এখনও আমাদের দেশে গণমাধ্যমে নারীদের অংশগ্রহণ কম। কেন কম, সেদিকে নজর দিতে হবে। অনেকে নিউজ করতে গিয়ে হ্যারাসমেন্টের শিকার হন। সেজন্যও তারা ঝরে পড়েন।
ড. গীতি আরা নাসরিন বলেন, কোনটা সংবাদ এবং কোনটা সংবাদ না, সেটা সাংবাদিক ও সংবাদ ভোক্তার বুঝা জরুরি। আগে সংবাদ ও অসংবাদের মধ্যে একটা ভাগ ছিলো। বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তি বিকাশ ঘটায় সংবাদ ছড়িয়ে যাচ্ছে। অনেকেই দ্রুত সংবাদ পাওয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে যাচ্ছেন। মানে একিউরেসির থেকে স্পিড বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। সেজন্য নিউজ লিটারেসির গুরুত্ব অনেক।
জাহিদ নেওয়াজ খান বলেন, গবেষণায় বলা হচ্ছে ২৪ শতাংশ মানুষের নিউজ লিটারেসি ভালো, ৭৬ শতাংশের নিউজ লিটারেসি কম। সাংবাদিকতায় আসতে হলে সাংবাদিকতার বেসিক জ্ঞান থাকতে হবে, সেটা অনেক ক্ষেত্রেই উপকারী হবে। সঠিক তথ্য বোঝার জন্যও নিউজ লিটারেসি দরকার।
তিনি আরও বলেন, নিউজ লিটারেসি শেখানো যেতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। সেজন্য স্কুল থেকে এইচএসসি পর্যন্ত যেকোনো পাঠ্যক্রমে সংবাদবোধ শেখানো যেতে পারে। শিশুদের নিরাপদ ইন্টারনেট দেওয়ার জন্যও সঠিক ও বেঠিক তথ্যর পার্থক্য চেনানো জরুরি।

 

 

 

পূর্বকোণ/ সারোয়ার- এস

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট