নানা কল্পনা-জল্পনার পর অবশেষে রিজেন্ট হাসপাতাল ও রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। আজ বুধবার (১৫ জুলাই) ভোর ৫টা ১০ মিনিটের দিকে সাতক্ষীরা সীমান্ত থেকে ৩ রাউন্ড গুলিসহ অবৈধ পিস্তলসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব জানায়, বোরকা পরে নৌকায় করে পালিয়ে যাচ্ছিলেন সাহেদ। নৌকায় উঠার আগে নদীর পাড় থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় সাহেদকে পারপার করা নৌকার মাঝি সাঁতরে পালিয়ে যায়। তবে সাহেদ মোটা থাকার কারণে দৌড়ে পালাতে পারেননি। পরে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় র্যাব সদর দপ্তরে নিয়ে আসা হয় সাহেদকে।
গ্রেপ্তারের যেসব জায়গায় পালিয়ে ছিলেন সাহেদ
গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে সাহেদ জানান, গত ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলাকালীন সময় তিনি কক্সবাজারের মহেশখালীতে ছিলেন তিনি। সেখানকার স্থানীয় দালালদের সহযোগিতায় একটি সাইক্লোন সেন্টারে ছিলেন। পরে সেখান থেকে কুমিল্লার মীরা বাজারে চলে যান। সেখানে থাকা অবস্থায় র্যাবের গ্রেপ্তার অভিযানের খুব কাছাকাছি চলে আসলেও কিন্তু র্যাব তাকে গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হয়।
এরপর সেখান থেকে ১২ জুলাই ঢাকার গুলশানে চলে আসেন সাহেদ। নিরাপদ মনে না হওয়ায় সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী এলাকায় চলে যান। সেখানে গিয়ে দালালদের মাধ্যমে ভারতে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করতে থাকেন। এর মধ্যেই গোয়েন্দা জালে আটকা পড়ে আজ ভোরে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন তিনি।
গ্রেপ্তারের পর সাহেদকে গণধোলাই দিতে চেয়েছিল এলাকাবাসী
গ্রেপ্তারের পরে এলাকাবাসী সাহেদকে গণধোলাই দিতে চেয়েছিল এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। এক মিনিট ৮ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, এক র্যাব সদস্য লাঠি দিয়ে সাহেদকে আঘাত করছে। অপর একজন বলছে, সবাই মিলে একে মারা উচিত।
জিজ্ঞাসাবাদে সাহেদের চ্যালেঞ্জ
সাহেদকে গ্রেপ্তারের পর হেলিকপ্টারে করে র্যাব সদর দপ্তরে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সেখানে উপস্থিত কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, জিজ্ঞাসাবাদের সময় অনেকটা নির্ভার ছিলেন সাহেদ। এ সময় বেশ কয়েকবার দম্ভোক্তি করেন তিনি।
সাহেদ র্যাব কর্মকর্তাদের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, ‘আমাকে ছয় মাসের বেশি সময় আটকে রাখা যাবে না।’ এছাড়া নিজের পত্রিকার লাইসেন্স আছে উল্লেখ করে যেসব সংবাদমাধ্যম ও সংবাদকর্মীরা তার ছবি তুলছে এবং সংবাদ প্রকাশ করছে তাদের দেখে নেয়ার হুমকিও দেন তিনি।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, সাহেদ একজন ঠাণ্ডা মাথার প্রতারক। তিনি আগেও জেলে যাওয়ার ফলে আইনি বিষয়গুলো তার ভালোভাবেই জানা আছে। সে নানা সময় নানা কথা বলছে। বিভ্রান্তিকর তথ্যও দিচ্ছে।
পূর্বকোণ/আরপি