কোরবানির ঈদ উপলক্ষে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় দেশের বন্যা ও অন্যান্য দুর্যোগে আক্রান্ত ব্যক্তি ছাড়াও দুস্থ, অতিদরিদ্র ব্যক্তি ও পরিবারসহ মোট এক কোটি পরিবারকে বিনামূল্যে ১০ কেজি করে চাল দিবে সরকার।

আজ মঙ্গলবার (৭ জুলাই) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। এক কোটি ছয় হাজার ৮৬৯টি ভিজিএফ কার্ডের বিপরীতে এক লাখ ৬৮ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়ার প্রেক্ষিতে এ চিঠি দেয়া হয়। বরাদ্দকৃত এই খাদ্যশস্য আগামী ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে ডিসিদের উত্তোলন করতে হবে।

বরাদ্দপত্রে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক বন্যাক্রান্ত ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত দুস্থ ও অতিদরিদ্রদের অগ্রাধিকারের প্রেক্ষিতে দেশের ৬৪ জেলার ৪৯২টি উপজেলা এবং ‘ক’, ‘খ’ ও ‘গ’ ক্যাটাগরির ৩২৮টি পৌরসভার প্রায় এক কোটি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দিতে ৮৭ হাজার ৭৯২ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

বরাদ্দপত্রে আরও বলা হয়েছে, জেলা প্রশাসকরা ভিজিএফ বরাদ্দের বিষয়ে নিজ নিজ এলাকায় সংসদ সদস্যদের অবহিত করবেন। এক্ষেত্রে ভিজিএফ উপকারভোগী বাছাইয়ে ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডভিত্তিক বরাদ্দকৃত ভিজিএফ কার্ড সংখ্যা পুনঃবিভাজন করে তালিকা তৈরি করতে হবে।

সরকারের বেঁধে দেয়া ১২ শর্তের মধ্যে চারটি পূরণ করে এমন ব্যক্তি বা পরিবারকে দুস্থ হিসেবে গণ্য করে সহায়তা দিতে হবে বলে বরাদ্দপত্রে উল্লেখ করা হয়।

১২ শর্ত হল:

# যে পরিবারের মালিকানায় কোনো জমি নেই বা ভিটাবাড়ি ছাড়া কোনো জমি নেই।

# যে পরিবার দিনমজুরের আয়ের উপর নির্ভরশীল।

# যে পরিবার মহিলা শ্রমিকের আয় বা ভিক্ষাবৃত্তির উপর নির্ভরশীল।

# যে পরিবারে উপার্জনক্ষম পূর্ণ বয়স্ক কোনো পুরুষ সদস্য নেই।

# যে পরিবারে স্কুলগামী শিশুকে উপার্জনের জন্য কাজ করতে হয়।

# যে পরিবারে উপার্জনশীল কোনো ব্যক্তি নেই।

# যে পরিবারের প্রধান স্বামী পরিত্যক্তা, বিচ্ছিন্ন বা তালাকপ্রাপ্তা মহিলা রয়েছে।

# যে পরিবারের প্রধান অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা।

# যে পরিবারের প্রধান অস্বচ্ছল ও অক্ষম প্রতিবন্ধী।

# যে পরিবার কোনো ক্ষুদ্রঋণ প্রাপ্ত হয়নি।

# যে পরিবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়ে চরম খাদ্য বা অর্থ সংকটে পড়েছে।

# যে পরিবারের সদস্যরা বছরের অধিকাংশ সময় দু’বেলা খাবার পায় না।

ভিজিএফ উপকারভোগীর তালিকা করার ক্ষেত্রে কোন অবস্থাতেই যাতে একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তি ভিজিএফ বরাদ্দ না পায় সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে। তাছাড়া এটি ইউনিয়ন বা পৌরসভা ভিজিএফ কমিটি কর্তৃক প্রকাশ্য সভায় বর্ণিত তালিকা প্রণীত ও প্রত্যায়িত হতে হবে বলে বরাদ্দপত্রে বলা হয়।

এছাড়া, জেলা বা উপজেলা খাদ্যগুদাম থেকে বিতরণ কেন্দ্র পর্যন্ত চাল পৌঁছানোর পরিবহন ও আনুষাঙ্গিক খরচ সরকারি খাত থেকে বহন করতে হবে।

পূর্বকোণ/এএ