শিশু আদালত ছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতে শিশুদের সাজা দেয়া অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। এ রায়ে ১২১ শিশুকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেয়া সাজা থেকেও মুক্ত করা হয়।

গতকাল বুধবার (২৪ জুন) রাতে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিল স্বাক্ষরের পর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৩১ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়। পরে আজ বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম ও এডভোকেট ইশরাত হাসান রায় প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

হাইকোর্টের দেয়া রায়ে বলা হয়েছে, কোনো অপরাধে প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশু একত্রে জড়িত থাকলেও শিশুর বিচার শুধু শিশু আদালতই করবে। ভ্রাম্যমাণ আদালত দূরের কথা, নিম্ন আদালতের কোনো বিচারক শিশুদের বিচার করলেও তা হবে বেআইনি। এমনকি শিশুদের মোবাইল কোর্ট কোনো দণ্ড দিতে পারবে না। কারণ মোবাইল কোর্ট কোনো শিশুকে দণ্ড দিলে তা সংবিধানের ৩০ ও ৩৫ অনুচ্ছেদে মৌলিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘিত হবে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৩১ অক্টোবর ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেয়া দণ্ডে যশোর ও টঙ্গীর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে অন্তরীণ ১২১ শিশুকে মুক্তির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শিশুদের দেয়া দণ্ড ও আটকাদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। আদালতের আদেশে পরে এসব শিশুদের মুক্তি দেয়া হয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে একইসময়ে ওই ১২১ শিশুকে যে প্রক্রিয়ায় সাজা দেয়া হয়েছে তা মানবাধিকারের লঙ্ঘন ও অমানবিক। একইসঙ্গে এই ধরনের সাজাপ্রদান আমাদের বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে বহির্বিশ্বে দেশের সুনামকে ব্যাহত করেছে। তাই এখনই তা বন্ধ করতে হবে বলে আদালতের রায়ে বলা হয়।

পূর্বকোণ/এএ