চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

যে চার জেলায় করোনায় কোন মৃত্যু নেই
যে চার জেলায় করোনায় কোন মৃত্যু নেই

যে চার জেলায় করোনায় কোন মৃত্যু নেই

অনলাইন ডেস্ক

২৪ জুন, ২০২০ | ৩:৩৮ অপরাহ্ণ

করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশের চার জেলায় এখন পর্যন্ত কেউ মারা যায় নি বলে এসব জেলার সিভিল সার্জন থেকে জানা গেছে। জেলাগুলো হল: জয়পুরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুড়িগ্রাম ও সাতক্ষীরা।

গতকাল মঙ্গলবার (২৩ জুন) সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশের জয়পুরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুড়িগ্রাম ও সাতক্ষীরা এই চার জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যায়নি আবার কোন রোগীর মুমূর্ষ অবস্থাও সৃষ্টি হয়নি। আক্রান্ত রোগীদের কিভাবে নিরাপদ রেখে চিকিৎসা দিয়েছেন সেই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছে এই চার জেলার সিভিল সার্জন। যা অন্যান্য জেলার জন্য দৃষ্টান্ত হতে পারে।

এসব জেলায় সুস্থতার হারও অন্যান্য জেলার তুলনায় ভালো। কারণ হিসেবে এসব জেলার সিভিল সার্জনরা জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যবিধি মানা, শক্তহাতে লকডাউন কার্যকর করা, বাইরের জেলা থেকে আসা মানুষকে দ্রুত শনাক্ত করে কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা এবং আক্রান্ত রোগীদের নিয়মিত যত্ন নেয়ায় মৃত্যুর ঘটনা এড়ানো গেছে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধির সহযোগিতায় এসব সম্ভব হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তারা।- সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

জয়পুরহাটে রোগীদের যত্ন নেওয়ায় ৬৫ শতাংশ দ্রুত সুস্থ হয়েছে

জয়পুরহাট জেলায় গতকাল মঙ্গলবার (২৩ জুন) সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৫৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, এদের মধ্যে ১৬২ জন সুস্থ হয়েছেন।

এ বিষয়ে জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো.সেলিম মিয়া জানান, ‘করোনায় মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করায় স্জনরা আক্রান্ত রোগী থেকে দূরে থাকে। এজন্য আক্রান্ত হবার পরই রোগীকে পরিবার থেকে আলাদা করে প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে নিয়ে এসে তাদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। তাদের নিয়মিত যত্ন নেয়ায় এবং ভালো খাবারের ব্যবস্থা করায় তারা সুস্থ হয়ে উঠছে। যেকারণে কোনও রোগীর অবস্থা কখনোই ক্রিটিক্যাল হয়নি। আক্রান্ত ২৫৫ জনের মধ্যে ৩০/৩৫ জনকে কেবল বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করানো হয়।

শতভাগ কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করায় সফলতা পেয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ

এদিকে, গ্রিন জোনে থাকা চাপাইনবাবগঞ্জে এখন পর্যন্ত ৮৮ জন ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৫৭ জন সুস্থ হয়েছেন। বাকিদের অবস্থাও তুলনামূলক ভালো। এখন পর্যন্ত মারা যায়নি কেউ।

গতকাল মঙ্গলবার (২৩ জুন) এ বিষয়ে জেলার সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরীর সাথে কথা বলে জানা যায়, এই এলাকার প্রশাসন ও নাগরিকদের নিয়ে প্রথম থেকেই শতভাগ কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হয়েছিল। ইতালি ও চায়না ফেরতদের প্রাথমিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। দুইমাসে সাড়ে ৫ হাজার মানুষের মেডিকেল চেকআপ করা হয়েছে। এছাড়া আক্রান্তদের দ্রুত আইসোলেশনে নেয়া হয়েছিল বলেই এ জেলায় এখন পযন্ত কেউ মারা যায়নি বলে মনে করেন তিনি।

এই আমের মৌসুমে বিভিন্ন জেলার মানুষের যাতায়াতের কারণে চাপাইনবাবগঞ্জ জেলাটি কিছুটা ঝুঁকিতে রয়েছে বলেও জানান সিভিল সার্জন। যদিও স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে ছাড় দেয়া হচ্ছে না।

কুড়িগ্রামে লকডাউনের নির্দেশনা মানায় ফল মিলেছে

কুড়িগ্রামে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ১২৩ জন, সুস্থ হয়েছে ৭৭ জন। আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত কেউ মৃত্যুবরণ করেননি। তবে এই জেলার একজন পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়ে বগুড়াতে মারা গেছেন। তাকে ওই জেলার মৃত্যু তালিকায় গণনা করা হয়েছে।

সার্বিক চিত্রের বিষয়ে এই জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবীবুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অন্যান্য জেলা থেকে এই জেলার সার্বিক চিত্র তুলনামূলক ভালো। করোনা সংক্রমণের হারও কম। আমরা প্রথম থেকে লকডাউনে নির্দেশনা যথাযথভাবে মানার চেষ্টা করেছি। সন্দেহভাজনদের দ্রুত টেস্ট করিয়েছি। মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করেছি। এতে ভালো ফল পেলেও আমাদের আরও কাজ করতে হবে।’

সাতক্ষীরা জেলায় মৃত্যু নেই, আক্রান্ত বেড়েছে ঈদের ছুটিতে

দেশের উপকূলবর্তী গ্রিণ জোনে থাকা সাতক্ষীরায় জেলায় গতকাল ২৩ জুন সন্ধ্যা পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ১০৪ জন, সুস্থ হয়েছে ১৬ জন। এখন পর্যন্ত কেউ মারা যায়নি।

জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. হুসেইন সাফায়েত জানান, ঈদের আগে জেলাটিতে আক্রান্তের হার সামান্য থাকলেও ঈদের ছুটিতে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে মানুষ আসায় আক্রান্তের হার বেড়েছে। তিনটি ইউনিয়নে আক্রান্ত বেশি হওয়ায় সেগুলো রেড জোন ঘোষণা করে পুরো ইউনিয়ন লকডাউন করা হচ্ছে। পুলিশ প্রথম থেকে সহযোগিতা করায় এখানে মানুষের মধ্যে সচেতনতা কাজ করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। সিভিল সার্জন আরও বলেন, ‘ভৌগলিক কারণেও আমাদের এই জেলা অন্যজেলার তুলনায় নিরাপদ।’

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট