চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বাংলাদেশে টেস্টের ফলাফল নিয়ে সন্দেহ

অনলাইন ডেস্ক

৭ জুন, ২০২০ | ১:৪৯ অপরাহ্ণ

করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা দিতে অনেকেই বিভিন্ন জায়গায় ভিড় করছেন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে যেভাবে টেস্ট করা হচ্ছে তাতে প্রকৃত চিত্র ফুটে উঠছে কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা আশংকা করছেন, সম্ভাব্য রোগীদের নাক এবং মুখ থেকে ঠিকমতো নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে না। এই নমুনা ঠিকমতো সংগ্রহ না করা হলে কোন ব্যক্তির মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ থাকলেও সেটি শনাক্ত করা সম্ভব হবে না। সঠিক পদ্ধতিতে পরীক্ষা না হলে সংক্রমণের বিস্তার ঠেকানোর রীতিমতো অসম্ভব বিষয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। গত প্রায় দুই সপ্তাহ যাবত দেখা যাচ্ছে, প্রতিদিন যতগুলো নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে তার মধ্যে ২০ থেকে ২২ শতাংশ মানুষের মধ্যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া যাচ্ছে। তবে এটি প্রকৃত চিত্র নয় বলে মনে করেন অনেক বিশেষজ্ঞ। কারণ, টেস্ট ঠিকমতো হচ্ছে কি না সেটি নিয়ে অনেকের সন্দেহ আছে। ল্যাবরেটরিতে যথার্থ ফলাফল পেতে বেশ কিছু পূর্বশর্ত পালন করতে হয়।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বেনজির আহমেদ বলেন, নাক এবং মুখ থেকে সঠিক পদ্ধতিতে নমুনা সংগ্রহ করা জরুরি। সবক্ষেত্রে সেটি ঠিকমতো হচ্ছে কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে মি. আহমেদের। তার মতে নির্ভুল ফলাফল পেতে নিচের পাঁচটি বিষয় নিশ্চিত করা জরুরি- ১. কার নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে, ২. কিভাবে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে, ৩. স্যাম্পল ঠিকমতো সংরক্ষণ করা, ৪. স্যাম্পল ঠিকমতো টেস্ট করা, ৫. সঠিক রিপোর্ট তৈরি করা। মি. আহমেদ বলেন, ‘ভাইরাসটা কখনো থ্রোটে থাকবে, কখনো নস্ট্রিল-এ থাকবে। কখনো দুটোতেই থাকবে। এজন্য দুটো জায়গা থেকেই নমুনা নিতে হবে। আমাদের ন্যাজাল যে ক্যানেলটা আছে, এই ক্যানেলের ওয়াল থেকে সোয়াব নিলে এটা ঘুরিয়ে-ঘুরিয়ে নিতে হবে। আমি যদি শুধু নাকে ঢুকোই আর বের করি এবং ওয়ালটাকে যদি টাচ না করি, সেখানে কিছু আসবে না। কারণ ভাইরাসটা তো থাকে ওয়ালে’।
সঠিকভাবে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে কি না সেটি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের অনেকেই সন্দিহান। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রথম দিকে শুধু ঢাকায় অবস্থিত আইইডিসিআর-এ পরীক্ষা করা হতো। কিন্তু এখন দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৫০ টি ল্যাবে পরীক্ষা করা হচ্ছে। এসব ল্যাবের সাথে সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণে জড়িত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য এবং ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। তিনিও মনে করেন, দ্রুততার সাথে কাজ করতে গিয়ে প্রশিক্ষণের ঘাটতি রয়ে গেছে।
অধ্যাপক আহমেদ বলেন, ‘আমরা কন্টিনিউয়াস ট্রেনিং দিচ্ছি। ট্রেনিং এতো কুইকলি করতে হয়েছে যে অনলাইন ট্রেনিং ছাড়া অন্য কোন উপায়ে ট্রেনিং দেয়া সম্ভব ছিল না’।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য সঠিক টেস্ট এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে ফলাফল পাওয়াটা বেশ জরুরি। সেটি না হলে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়াতেই থাকবে। কিন্তু অনেকে অভিযোগ করছেন, অনেক ক্ষেত্রে নমুনা দেবার পরে রিপোর্ট পাবার জন্য চার থেকে এক সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে। -তথ্যসূত্র : বিবিসি

The Post Viewed By: 20 People

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট