করোনাভাইরাসের প্রভাব এসে পড়েছে দেশের পোশাক কারখানাগুলোতে।দেশের পোশাক কারখানাগুলোতে কাজের চাহিদা ৫৫% কমে যাওয়াতে চলতি জুন মাস থেকেই শ্রমিকদের ছাঁটাই শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সভাপতি ড. রুবানা হক।
আজ বৃহস্পতিবার (৪ জুন) ‘স্টেট অব দ্য আর্ট কোভিড-১৯ ল্যাব’ উদ্বোধন উপলক্ষে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ভার্চুয়াল এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন— প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি (এমপি), স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক (এমপি), শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম, এফবিসিসিআই ও বিজিএমইএ-এর সাবেক সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন (এমপি), ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশন (বিটিএমএ)-এর সাবেক সভাপতি মতিন চৌধুরী, বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী (এমপি), ডায়াবেটিক এ সোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (বাডাস) এর সভাপতি প্রফেসর ডাক্তার এ কে আজাদ খান।
রুবানা হক বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বিশ্বে ভোক্তাদের চাহিদা কমে যাচ্ছে। দেশের পোশাক কারখানার কাজও প্রায় ৫৫ শতাংশ কমে যাওয়ায় জুন থেকেই শ্রমিকদের ছাঁটাই করা হবে। এ ব্যাপারে আমাদের মালিকদের কিছুই করার নেই।’ তবে যারা চাকরি হারাবেন তাদের জন্য কী করা যায়, তা নিয়ে সরকারের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
কারখানার মালিকদের কিছুই করার নেই উল্লেখ করে রুবানা হক বলেন, শতকরা ৫৫ শতাংশ কেপাসিটিতে ফ্যাক্টরি চলছে।’ আমাদের ছাঁটাই ছাড়া কোনও উপায় দেখছি না।তবে এ অবস্থা বদলেও যেতে পারে। তখন ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকরাই কাজে যোগ দেয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিজিএমইএ’র সভাপতি বলেন, ‘জুলাইতে কী হবে বলা যাচ্ছে না। সেই সময় আমাদের আরও বড় ধাক্কা খেতে হবে। এটি অপ্রত্যাশিত কিছু নয়।’
বিজিএমইএ’র অন্তর্ভুক্ত কারখানা ছিল ২ হাজার ২৭৪টি, এখন এক হাজার ৯২৬টি চলছে। তার মানে বেশ কিছু কারখানা বন্ধ হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘করোনার এই সময়ে প্রায় ৩ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানীর ক্রয়াদেশ বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে ২৬ শতাংশ ফেরত এসেছে। তবে যারা ফেরত দিয়েছে তারা আবার বিভিন্ন শর্ত দিচ্ছে।’
তিনি আর ও বলেন, ‘আগামীতে ৬৫ শতাংশ চাহিদা কমে যাবে।’ তাই পোশাকের চাহিদা বাড়ার তেমন সম্ভাবনা কম বলেও জানান তিনি। অর্থাৎ দেশের পোশাক কারখানাও ৫৫ শতাংশ কমে যাবে।
রুবানা হক বলেন, ‘৪২ হাজার কোটি টাকা মার্চ থেকে মে পর্যন্ত ক্ষতি হবে। করোনায় দেশের ৯৯ শতাংশ পোশাক কারখানার ৫৫ শতাংশ ক্যাপাসিটি দিয়ে চালাতে হবে। জুনে কারখানাগুলোতে ৩০ শতাংশ কাজ হবে।’ তবে যাই ঘটুক চলতি অর্থবছরে পোশাক খাতে রফতারি আয় ২৩ বিলিয়ন হবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
এছাড়া, আগামীতে ভার্চুয়াল মার্কেট তৈরির ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন পুরো বিশ্ব অনলাইনের মাধ্যমে পণ্য ক্রয় করছে। অনলাইনে ব্যবসায়ী টু ভোক্তা (বিটুসি) মার্কেটে এগোতে হবে। এতে করে ক্রেতা জোটের দিকে আমাদের তাকিয়ে থাকতে হবে না।
পূর্বকোণ/ এএ