চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

আমের কেজি ৫০ পয়সা

চাষিদের পাশে দাঁড়াল সরকার

ঢাকা অফিস

২৩ মে, ২০২০ | ১০:৩০ পূর্বাহ্ণ

গোপালভোগ আম পাড়া শুরু হওয়ার কথা ছিল গত বুধবার থেকে। কিন্তু আবহাওয়া খারাপ থাকায় এবার আম পাড়া হয়নি। রোদ ঝলমলে দিনের অপেক্ষায় ছিলেন রাজাশাহীর চাষিরা। কিন্তু সে অপেক্ষাই কাল হলো আম চাষিদের। আম্ফানের প্রচ- আঘাতে এবার ল-ভ- আমাঞ্চল খ্যাত রাজশাহী-সাতক্ষীরা জেলা। ঘূর্ণিঝড়ের তা-বে রাজশাহীর বাঘা ও চারঘাটে ঝরে পড়া আম বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৫০ পয়সা কেজি দরে। তারপরও ক্রেতা পাচ্ছেন না আম চাষিরা। এদিকে, চাষিদের কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে দিতে আম কিনে তা ত্রাণ হিসেবে বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মহম্মদ শরীফুল হক বলেন, ‘ঝরে পড়া আম ব্যবসায়ীরা কেনার পরও যদি অবিক্রিত থেকে যায় তা জেলা প্রশাসন কিনে করোনা ত্রাণ তহবিলে দেওয়া হবে। আমরা আম কেনা শুরু করে দিয়েছি। এতে করে চাষিদের কিছুটা হলেও ক্ষতি পুষিয়ে যাবে। এর আগে কৃষকদের কাছ থেকে সবজি ক্রয় ত্রাণ তহবিলে দেওয়া হয়েছিল’। এদিকে, বাঘা উপজেলার আড়ানী গোচর গ্রামের কড়ালি ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বরাবরই ঝরে পড়া আম কিনে ঢাকায় ঢাকায় পাঠিয়ে দেই। এবার বেশ সস্তায় কিনেছি। এই আম ৫০ পয়সা কেজি দরে কিনছি।’ একই গ্রামের আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ঝড়ে আমার আম বাগানের অর্ধেক আম পড়ে গিয়েছে। এই আম বিকোনোর জায়গা নেই। কেউ নিতেও চাইছে না, আবার কিনতেও চাইছে না। তাই বাড়িতে রেখে দিয়েছি।’ বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, উপজেলায় ৮ হাজার ৩৬৮ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। এ বছর বাগানে আম কম থকায় উৎপাদন ধরা হয়েছে হেক্টর প্রতি ৬ থেকে ৭ মেট্রিক টন। মোট উৎপাদন ধরা হয়েছে ৯৪ হাজার মেট্রিক টন। এরমধ্যে ঝড়ে পড়ে গেছে ১৮ হাজার মেট্রিক টন।
উপজেলা নির্বাহী শাসক শাহিন রেজা বলেন, ‘এই উপজেলায় খাদ্য শস্যের পাশাপাশি অর্থকরি ফসল আম। ঝরে পড়া আম আমি নিজে চাষিদের কাছে থেকে ৫০ কেজি ওজনের বস্তা ১০০ টাকা দরে কিনেছি’।
চারঘাট উপজেলার কালুহাটি গ্রামের আমচাষি বীর বাহাদুর জানান, ঝড়ে আম, ভুট্টুা ও তিলের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। যে আম বিক্রি হতো ৪০-৬০ টাকা কেজি দরে। সেই আম ঝড়ে পড়ে তা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৫০ পয়সা কেজি দরে। আম কেনার লোকও পাওয়া যাচ্ছে না। এমনিতে মহামারি করোনায় আম নিয়ে রয়েছে শঙ্কায়। তার ওপর এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ সবার জীবনে বয়ে এনেছে কষ্ট। আম বাগানে যেতেই মন ভেঙে গেছে। এভাবে কখনও ঝড়ে এমন ক্ষয়-ক্ষতি হয়নি।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামছুল আলম বলেন, আম্পানের আঘাতে জেলায় কৃষি ফসলের মধ্যে আমেরই বেশি ক্ষতি হয়েছে। রাজশাহীতে এবার ১৭ হাজার ৬৮৬ হেক্টর জমিতে আমের গাছ রয়েছে। আর উৎপাদনের লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ২ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন। তবে আম্পানের কারণে তা অর্জিত নাও হতে পারে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট