চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

হালদায় রেকর্ড ডিম মা মাছের

২৫ হাজার ৫৩৬ কেজি ডিম, ৪ দিন পর বিক্রি শুরু

মোহাম্মদ আলী

২৩ মে, ২০২০ | ১০:১৩ পূর্বাহ্ণ

বিগত ৫ বছরে ডিমের চিত্র
২০১৯ সালের ডিম ছেড়েছিল ৭ হাজার কেজি
২০১৮ সালে ডিম ছাড়ে ২২ হাজার ৬৮০ কেজি
২০১৭ সালে ডিম ছাড়ে ১ হাজার ৫শ কেজি
২০১৬ সালে ডিম ছাড়েনি মা মাছ
২০১৪ সালে ১৬ হাজার ৫শ কেজি

প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে ডিম ছেড়েছে রুই জাতীয় (রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালিবাউশ) মাছ। গতকাল শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নদী থেকে ডিম সংগ্রহ করে আহরণকারীরা। হালদা নদীর গড়দুয়ারা থেকে মাদার্শা আমতোয়া পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকা থেকে এসব ডিম সংগ্রহ করা হয়। এ নিয়ে নদীর দুই পাড়ে রাউজান ও হাটহাজারী এলাকায় উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়। আগামী ৪ দিন পর রেণু বিক্রি হবে বলে জানিয়েছেন আহরণকারীরা।
তবে এ বছর হালদায় রেকর্ড পরিমাণ প্রায় ২৫ হাজার ৫৩৬ কেজি রুই জাতীয় মাছের ডিম ছেড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। গত বছর ২০১৯ সালের ২৫ মে রাতে ডিম ছেড়ে ছিল ৭ হাজার কেজি। ২০১৮ সালে ২০ এপ্রিল ডিম ছাড়ে ২২ হাজার ৬৮০ কেজি। ২০১৭ সালে প্রায় ১ হাজার ৫শ কেজি। ২০১৪ সালে ডিম পাওয়া গেছে ১৬ হাজার ৫শ কেজি। তবে ২০১৬ সালে নদীতে ডিম ছাড়েনি মা মাছ।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে ‘নমুনা’ ডিম ছাড়ার পর শুক্রবার সকাল থেকে নদীতে ডিম ছাড়তে শুরু করে রুই জাতীয় মাছ। এরপর নদী থেকে নৌকা ও মিহি সুতার জাল নিয়ে ডিম সংগ্রহ শুরু করে আহরণকারী।
হালদা বিশেষজ্ঞ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়া দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘এ বছর ২৮০টি নৌকায় ৬১৬ জন ডিম সংগ্রহকারী নদী থেকে ডিম আহরণ করে। সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত তারা রেকর্ড পরিমাণ প্রায় ২৫ হাজার ৫৩৬ কেজি ডিম আহরণ করে। গত বছর ২০১৯ সালে ছেড়েছিল ৭ হাজার কেজি ডিম।
হালদার ডিম সংগ্রহকারী হাটহাজারীর গড়দুয়ারা গ্রামের কামাল উদ্দিন সওদাগর দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘শুক্রবার সকাল থেকে তার ৬টি নৌকা ডিম আহরণ শুরু করে। এ বছর তিনি প্রায় ৪০ বালতি ডিম পেয়েছেন। প্রতি নৌকায় সর্বনি¤œ এক কেজি থেকে সর্বোচ্চ ১২ কেজি পর্যন্ত ডিম পাওয়া গেছে। ডিম পরিচর্যার চারদিন পর রেণু বিক্রি শুরু হবে।’
হাটহাজারীর ইউএনও মোহাম্মাদ রুহুল আমীন দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, বিগত এক বছর ধরে আমরা হালদায় কাজ করেছি। যেখানে সমস্যা হয়েছে সেখানে গিয়ে সমাধানের চেষ্টা করেছি। আল্লাহ আমাদের সহায় হয়েছেন। তাই এবার হালদায় ভাল ডিম পাওয়া গেছে।’
চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য অফিসার ফারহানা লাভলী বলেন, মৎস্য বিভাগ হালদায় সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ে ছিল। এবার হালদায় ভাল ডিম পাওয়া গেছে। তাতে ডিম সংগ্রহকারীরা খুশি হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী। এটি বিশ্বের একমাত্র জোয়ার-ভাটা নদী যেখান থেকে সরাসরি রুই জাতীয় মাছের নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করা হয়। সাধারণত বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে পূর্ণিমায় প্রবল বর্ষণ আর মেঘের গর্জনের পর পাহাড়ি ঢল নামলে হালদা নদীতে রুই জাতীয় মাছ স্মরণাতীত কাল থেকে ডিম ছেড়ে আসছে। তবে মাঝে মাঝে এর ব্যত্যয়ও ঘটে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট