চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

চিকিৎসকের রিপোর্টে ‘মৃত’ প্রসব করল জীবিত শিশু

রাঙামাটি সংবাদদাতা

২১ মে, ২০২০ | ৭:৩৯ অপরাহ্ণ

রাঙামাটিতে চিকিৎসকের রিপোর্টে ‘মৃত সন্তান’ বলা হলেও নার্সের সহযোগিতায় জীবিত সন্তান প্রসব করলেন মা। রাঙামাটি মা ও শিশু কেন্দ্রের চিকিৎসকের অদক্ষতা আর আলট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্টের ‘মৃত সন্তান’টি রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে নার্সের সহায়তায় সুস্থ নবজাতকের জন্ম হয়। এখন নবজাতক ও মা দু’জনেই সুস্থ রয়েছে।
জানা গেছে, সন্তান জন্ম দেয়ার সম্ভাব্য তারিখে নানিয়াচর চৌদ্দ মাইল এলাকা থেকে স্ত্রী মিনতি প্রভা চাকমাকে নিয়ে গত সোমবার রাঙামাটি মা ও শিশু কেন্দ্রে আসেন স্বামী তরুন চাকমা। চিকিৎসক লেলিন চাকমা করোনাভাইরাসের কারণে নানা অজুহাত তুলে ধরে পরে আলট্রাসনোগ্রাফী রিপোর্ট দেখে বললেন, আপনার সন্তানটি গর্ভাস্থায় মারা গেছে, আমাদের কিছু করার নেই, রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে মৃত সন্তানটি বের করতে হবে। একথা বলে তিনি প্রসূতি নারীকে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে রেফার করেন।
পরে প্রসূতি নারীর স্বামী তাকে নিয়ে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করায়, দুপুরে উিউটি করে যাওয়া এক সিনিয়র নার্স রাতে দায়িত্ব পালন করা নার্সকে ফোন দিয়ে খবরাখবর জানতে চাইলে তিনি জানান, এক রোগীকে এসেছে তার রিপোর্ট মৃত শিশুর কথা বলা হয়েছিলো, কিন্তু মহিলার হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম থাকায় এক ব্যাগ রক্ত দেয়ার কথা বলেছি, কিন্তু মহিলাটির স্বামী রক্ত ম্যানেজ করতে না পারায় বাধ্য ডিউটিরত সিনিয়র নার্স সুমিত্রা বড়–য়া নিজেই রক্ত দেন। পরের দিন গত মঙ্গলবার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নার্সের ডিউটি থাকায় তিনি নিজে হাসপাতালে যান এবং হ্যান্ড ওভার নেন, এক পর্যায়ে সকাল ৯টায় প্রসূতি নারীর ব্যাথা শুরু হয়, তখন তাকে লেবার রুমে নিয়ে যাওয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই নার্স জানান, আমরা মৃত সন্তান হলে তাকে প্লেটে রাখি আর জীবিত হলে কোলে নেই বা মায়ের পাশে রাখি, যেহেতু আলট্রাসনোগ্রাফী রিপোর্টে মৃত বলা হয়েছিল আমাদের প্রস্তুতি সে রকমই ছিলো, কিন্তু প্লেটে রাখার পর হঠাৎ বাচ্চাটি নড়ে উঠে, তাড়াতাড়ি নাড়ি কেটে দেই এবং নাড়ি কেটে রিসাসিটেশান শুরু করে দিলাম, প্রায় দুইমিনিট পরে বাচ্চা জোরে কেঁদে উঠল, আমি খুশিতে কাঁদব নাকি হাসব বুঝতে পারছিলাম না। পরে আমরা পরিষ্কার করে মা’র কাছে দেই।
নবজাতকের মা মিনতি প্রভা চাকমা অশ্রুশিক্ত নয়নে বলেন, আমার সন্তান মৃত শোনে আমি পৃথিবীতে ছিলাম না, এত কষ্ট করে পেটে ধরে যদি দুঃসংবাদ শুনতে হয় কার ভালো লাগে বলেন? করোনা ভাইরাস আতংকের মধ্যে নার্সরা জীবন বাজি রেখে আমার এবং সন্তানের জন্য যা করলো আমি তাদের কাছে চিরঋণী এদিকে বিষয়টি সর্ম্পকে বক্তব্য নিতে কয়েক দফায় ডা. লেনিন তালুকদারকে ফোন করেও পাওয়া যায়নি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট