চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

১০ চিকিৎসকসহ চমেকের ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় ১০১ জন করোনা শনাক্ত

করোনা নিয়েই ওরা গেলেন ঈদ বাজার করতে

অনলাইন ডেস্ক

১৮ মে, ২০২০ | ১১:৩১ পূর্বাহ্ণ

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে পুরো বিশ্বে খারাপ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন দেশ থেকে নেয়া হচ্ছে নানা ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। বাংলাদেশে ও ছড়িয়ে পড়েছে এই মরণঘাতী ভাইরাস। কিন্তু এতদিন বাংলাদেশের যে তিনটি জেলায় এই ভাইরাসের প্রকোপ দেখা যায় নি সাতক্ষীরা এদের মধ্যে একটি।  কিন্তু রবিবার (১৭ মে) বিকেলে হঠাৎ পাল্টে যায় করোনা পরিস্থিতির চিত্র। রবিবার (১৭ মে) একসঙ্গে ২৪ জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। সেই সঙ্গে করোনা আক্রান্তরা করেছেন ঈদের কেনাকাটা।

জানা যায়, ১ মে নারায়ণগঞ্জ থেকে একটি ট্রাকে সাতক্ষীরার দেবহাটায় ফেরেন ২৪ জন ইটভাটা শ্রমিক। তাদের দেবহাটা খানবাহাদুর আহসানউল্লাহ কলেজের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। সেখানে ৫ মে এক যুবকের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। এরপর বাকিদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। বাকি ২৩ শ্রমিকের উপসর্গ না থাকায় ১৪ মে কোয়ারেন্টাইন থেকে ছেড়ে দেয়া হয়। কিন্তু দুইদিন পর ২৩ শ্রমিকের সবার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে।

আক্রান্ত ২৩ শ্রমিকের মধ্যে এক পরিবারের দুই শিশু ও তার মা-বাবার করোনা পজিটিভ এসেছে। তারা দেবহাটার খান বাহাদুর আহসান উল্লাহ কলেজে কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। তাদের বাড়ি সাতক্ষীরা সদরের ধূলিহর এলাকায়। কোয়ারেন্টাইনমুক্ত হয়ে তারা দেবহাটা থকে সাতক্ষীরার বাড়িতে ফেরেন। আক্রান্তদের মধ্যে দেবহাটা সদর ইউনিয়নের একজন গ্রাম পুলিশও রয়েছেন। বাকি আক্রান্তদের বাড়ি দেবহাটা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।

দেবহাটা উপজেলার বাসিন্দা মাহমুদুল হাসান শাওনের সাথে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, কোয়ারেন্টাইন থেকে ১৪ মে মুক্তির পর এসব শ্রমিক পরিবারের জন্য ঈদের কেনাকাটা করাসহ বাজারে ঘুরেছেন। কেউ ভ্যান চালিয়েছেন। আক্রান্তরা এলাকায় চষে বেড়িয়েছেন। মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে দেবহাটা উপজেলা। হঠাৎ এ খবর পাওয়ার পর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র।
উল্লেখ্য, রোববার বিকেল পর্যন্ত সাতক্ষীরায় করোনা শনাক্ত ছিল তিনজন। যশোরের শনাক্ত হওয়া এক স্বাস্থ্যকর্মী ছিলেন সাতক্ষীরায়। এছাড়া ঢাকা থেকে পালিয়ে এসেছেন একজন আক্রান্ত নারী। সব মিলিয়ে এখন সাতক্ষীরায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৯ জন। সুস্থ হওয়া ব্যক্তি যশোরের ওই স্বাস্থ্যকর্মী।

এদিকে, দেবহাটা থানা পুলিশের ওসি বিপ্লব কুমার সাহা বলেন, ট্রাকে এসব শ্রমিক ১ মে দেবহাটায় ফেরার পর প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়। তবে আমাদের না জানিয়ে তাদের কোয়ারেন্টাইন থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আক্রান্ত সবার বাড়িই লকডাউন করা হবে।

সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. মো. হুসাইন সাফায়াত বলেন, বিকেলে হাতে পাওয়া রিপোর্টে ২৪ জনের করোনা পজিটিভ এসেছে। এর মধ্যে দেবহাটা উপজেলার ২৩ জন। আর আশাশুনি উপজেলার একজন। দেবহাটা উপজেলার সবাই ইটভাটা শ্রমিক। তারা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। সেখানে ২৪ জন ইটভাটা শ্রমিক ছিলেন। প্রথমে একজনের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ ধরা পড়ে। এরপর বাকিদের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়।

তিনি বলেন, কোয়ারেন্টাইনে একত্রে থেকে একজন থেকে বাকি ২৩ জনের শরীরেও ছড়িয়ে পড়েছে করোনা। হঠাৎ সাতক্ষীরার করোনা পরিস্থিতির চিত্র এলোমেলো হয়ে গেছে। তাদের সংস্পর্শে কারা এসেছিলেন তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। প্রয়োজনে দেবহাটা উপজেলা লকডাউন করা হবে।

পূর্বকোণ/ এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট