চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

পহেলা বৈশাখে জনসমাগম না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

কৃষকের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা অফিস

১৩ এপ্রিল, ২০২০ | ২:৫৭ পূর্বাহ্ণ

ক্ষুদ্র-মাঝারি ও বৃহৎ শিল্প খাতের পর এবার কৃষিতে প্রণোদনা প্যাকেজের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাঁচ হাজার কোটি টাকার এই প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় গ্রাম এলাকার ক্ষুদ্র চাষিদের সহায়তা করা হবে।
গতকাল সকালে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এই ঘোষণা দেন। সকাল ১০টায় সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। করোনাভাইরাস প্রতিরোধের লক্ষ্যে দেশব্যাপী চলমান কার্যক্রমে সমন্বয় করতে এই কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, কৃষি খাতের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল তৈরি করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই তহবিল থেকে কৃষিখাতে যুক্তদের অল্প সুদে ঋণ দেওয়া হবে। ঋণে সুদের হার হবে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ। এ তহবিল থেকে গ্রাম এলাকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি চাষিরা আর্থিক সহায়তা পাবেন। কৃষি, ফুল, ফল, মৎস্য চাষ, পোল্ট্রি ও ডেইরি খাতে যারা নিয়োজিত, তারা সবাই এই প্রণোদনার আওতায় আসবেন। এছাড়া সারের জন্য নয় হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি ঘোষণা দেন শেখ হাসিনা।
ভিডিও কনফারেন্সে জনসমাগম এড়াতে সপ্তাহে একদিন দূরত্ব বজায় মাঠে হাট বসানো যায় কিনা সংশ্লিষ্টদের সে বিষয়টি দেখার নির্দেশ দেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। আরও নির্দেশনা দেন কৃষি শ্রমিকদের যাতায়াত ও কাজের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করার।
প্রাণঘাতী করোনা থেকে বাঁচতে কারো সঙ্গে না মিশে সবাইকে ঘরে থাকার আহ্বান জানান সরকারপ্রধান। ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন। এবং শোকসন্তুপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
পহেলা বৈশাখে জনসমাগম না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
করোনাভাইরাসে সংক্রমণ রোধে এবার পহেলা বৈশাখে কোন জনসমাগম করা যাবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এবার কেউ অনুষ্ঠান করতে চাইলে ডিজিটাল পদ্ধতিতে করবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, হার্ট, কিডনি ও ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য করোনার ঝুঁকি বেশি। সবাইকে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। হাচি কাশি দেয়ার সময় রুমাল ব্যবহার করতে হবে। কারণ হাচি কাশির মাধ্যমেই এ ভাইরাস ছড়ায়।
মাশরাফির প্রশংসায় পঞ্চমুখ প্রধানমন্ত্রী
গতকাল গণভবন থেকে পরিচালিত ভিডিও কনফারেন্সে মাশরাফিকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তুমি ভাল কাজ করছো। মুক্তিও (নড়াইল-১ সাংসদ) ভাল কাজ করছে। দুজনে ভাল কাজটা চালিয়ে যাও। তাহলে নড়াইলের ভাল হবে’। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে মাশরাফি বলেন, ‘আজকের এই আয়োজনে আমি সবচেয়ে নবীন। এখানে অনেক প্রবীণ রাজনৈতিক নেতা আছেন। আপনি এখানকার সংসদ সদস্য ছিলেন। এই আসন আপনার। এই আসনের দিকে আপনি অবশ্যই মনোযোগ দেবেন। নড়াইল সদর হাসপাতালে আড়াইশ বেডের হাসপাতালে একটি আইসিইউ দিলে নড়াইলবাসী আরও উপকৃত হবেন। এছাড়া ১০ টাকার চাল আরও বেশি বরাদ্দ দিলে জনগণ উপকৃত হবেন’।
উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু এখানেই নয়, ভাগে ভাগে চাল বরাদ্দ করা হচ্ছে। রোজাকে সামনে রেখে আবারও চাল দেয়া হবে। আর এখানকার যারা সংসদ সদস্য আছেন এবং জনপ্রতিনিধি আছেন তারা মানুষের জন্য কাজ করছেন। আগামীতেও মানুষের পাশে দাঁড়াবেন। মানুষের যেন কোনো কষ্ট না হয়, সে দিকটা খেয়াল রাখবেন-এটাই আমি কামনা করি’।
মাশরাফির উদ্যোগে গত ১০ই এপ্রিল নড়াইল সদর হাসপাতালের প্রবেশমুখে জীবাণুনাশক চেম্বার স্থাপন করা হয়। হাসপাতালে কেউ প্রবেশ করা বা বের হওয়ার সময় এই চেম্বারে নিজের বহিরাবরণ জীবাণুমুক্ত করতে পারবেন। শুধু নড়াইল সদর হাসপাতালেই নয়, জীবাণুনাশক চেম্বার স্থাপন করা হবে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেলা পুলিশের দপ্তরেও। এই কার্যক্রমের তত্ত্বাবধানে রয়েছে মাশরাফির প্রতিষ্ঠিত নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশন।
এর আগে মাশরাফি নিজ উদ্যোগে ১২০০ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। বিতরণ করেছেন ৫০০ পিপিই। রোগীর দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে চালু করেছেন ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের যাতায়াতের সুবিধায় এম্বুলেন্সের ব্যবস্থাও করেছেন মাশরাফি। এছাড়াও ক্রিকেটারদের গড়া তহবিলে নিজ বেতন থেকে ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা দেন তিনি।
এ সময় গণভবন প্রান্তে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। ভিডিও কনফারেন্স সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট