চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

অতিরিক্ত পণ্য কিনে বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করবেন না: বাণিজ্যমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক

১৯ মার্চ, ২০২০ | ১২:৪১ অপরাহ্ণ

করোনাভাইরাসে আতঙ্কিত হয়ে অতিরিক্ত পণ্য কিনে বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি না করার জন্য অনুরোধ করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।  বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে টিপু মুনশি এসব কথা বলেন। চাল, ডাল, তেল, চিনি, লবণসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের বিপুল মজুদের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন ঢাকা শহরের বড় বাজারগুলোতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ৭টি পর্যবেক্ষণ টিম নেমেছে। কোনো কারণে কেউ অযৌক্তিক দাম নিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাধারণ মানুষকে বুঝতে হবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পণ্য কেনার দরকার নেই। এছাড়া ঢাকার বাইরে জেলা প্রশাসকদের চিঠি দেওয়া হচ্ছে। টেলিফোনেও যোগাযোগ করা হচ্ছে। ফলে মাঠপর্যায়েও প্রচারাভিযান হবে। যাতে মানুষ আতংকিত হয়ে অতিরিক্ত পণ্য কেনাকাটা না করে। মজুদ ও সরবরাহ ঠিক আছে। ফলে আতংকিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।

তিনি বলেন, বছরজুড়ে দেশে বিভিন্ন পণ্যের যে চাহিদা রয়েছে, গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আমদানি ও উৎপাদন মিলিয়ে তার চেয়েও বেশি পণ্যের মজুদ রয়েছে। তাই দয়া করে অতিরিক্ত পণ্য কিনে বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি না করার জন্য জনসাধারণকে আহবান জানান তিনি। আর ব্যবসায়ীরাও যাতে সুযোগ বুঝে পণ্যমূল্য বাড়াতে না পারেন, সেজন্যও কঠোর হওয়ার হুঁশিয়ারি দেন মন্ত্রী।

অনেকে ভাবছেন ভবিষ্যতে যদি সরবরাহ কমে যায়। এজন্য যার ২ কেজি কেনার কথা তিনি ১০ কেজি কিনছেন। কেউ কেউ হয়তো ভাবছেন, পণ্যের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে। হঠাৎ করে মানুষের কেনার প্রবণতা বেড়েছে। যার জন্য বাজারে পণ্যের দাম বেড়েছে। অতিরিক্ত কেনাকাটার কারণে প্রতিটা খুচরা বাজারে প্রভাব পড়েছে।

নিত্যপ্রয়োজনীয় কয়েকটি পণ্যের আমদানি ও মজুদের তথ্য তুলে ধরে মন্ত্রী জানান, ১৫ মার্চ ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি শুরুর পর দুই দিনে ৮ হাজার টন এসেছে। আর দেশি পেঁয়াজের সরবরাহও বেড়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২ লাখ ৬০ হাজার টন ডাল আমদানি হয়। প্রতি মাসে গড়ে ২১ হাজার ৬০০ টন করে আমদানি হয়েছে। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসেই আমদানি হয়েছে ২ লাখ ১০ হাজার টন। অর্থাৎ প্রতি মাসে গড়ে ৩০ হাজার টন করে আমদানি হয়েছে। আগের বছরের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেশি আমদানি হয়েছে। তিনি বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বেশি মজুদ রয়েছে। আতংকিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। করোনার কারণে কোথাও আমদানি বন্ধের ঘটনা ঘটেনি।

তিনি বলেন, রমজান উপলক্ষে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই টিসিবি বাজারে থাকবে। মুজিববর্ষের শুরু উপলক্ষে টিসিবি ১৭ মার্চ থেকে ভর্তুকি মূল্যে বাজারে তেল চিনি সরবরাহ শুরু করেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছর দেশে ৩ কোটি ৮৭ লাখ টন চাল উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে,  যা আগের বছরের চেয়ে ১৩ লাখ টন বেশি। এই মুহূর্তে সরকারের কাছে মজুদ আছে ১৪ লাখ ৩৬ হাজার টন চাল। চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৩৫ লাখ ৩১ হাজার টন গম আমদানি হয়েছে। গত অর্থবছরের পুরো সময়ে আমদানি হয় ৪৬ লাখ ৪৮ হাজার টন গম । সরকারের কাছে গম  মজুদ আছে ৩ লাখ ২৬ হাজার টন। বছরে ভোজ্যতেলের চাহিদা ১৮ লাখ ৬০ হাজার টন। গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে ভোজ্যতেল আমদানি হয়েছে ১৬ লাখ ৮৪ হাজার টন। চিনির বার্ষিক চাহিদা ১৮ লাখ টন। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আমদানি হয়েছে ১১ লাখ টন। আর দেশে ৭০ হাজার টন চিনি উৎপাদন হবে। এছাড়া বিভিন্ন প্রকারের ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, লবণের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। বাজার দরও স্বাভাবিক।

বাণিজ্য সচিব ড. জাফর উদ্দীন বলেন, অতিরিক্ত পণ্য কেনার কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ দেশে সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। সরবরাহও স্বাভাবিক।

 

 

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট