চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

জন্মশতবার্ষিকীতে বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা

পূর্বকোণ ডেস্ক

১৮ মার্চ, ২০২০ | ৩:২৬ পূর্বাহ্ণ

স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে বিন¤্র শ্রদ্ধা জানিয়েছে জাতি। দিনটিকে দেশব্যাপী ‘জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে উদযাপন করা হয়। একই সঙ্গে গতকাল থেকে মুজিববর্ষ শুরু হয়েছে। রাত ৮টায় জাতির পিতার জন্মক্ষণে আতশবাজি উৎসব এবং বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান শুরু হয়।
বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীর দিন থেকে (১৭ মার্চ ২০২০ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত) বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে মুজিববর্ষ উদযাপন করা হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার ভোর ৬ টায় জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের দিনব্যাপী কর্মসূচি শুরু হয়। অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল, জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কেক কাটা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, মোনাজাত, প্রার্থনা, আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্বেচ্ছায় রক্তদান, বিনামূল্যে চিকিৎসা, পুরস্কার বিতরণ, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ, করোনাভাইরাসের প্রতিরোধ সামগ্রী বিতরণ ইত্যাদি। দিবসটি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের সামনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময়ে বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা ও প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়েমা ওয়াজেদ হোসেন সঙ্গে ছিলেন। জাতির পিতার প্রতিকৃতির বেদিতে পুষ্পাঞ্জলী অর্পণের পর স্বাধীনতার এই মহান স্থপতির প্রতি সম্মান জানাতে প্রধানমন্ত্রী সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ এবং আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে নিয়ে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে আরেকবার পুষ্পাঞ্জলী অর্পণ করেন। এরপর জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমীন চৌধুরী এবং প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পৃথকভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক মোহম্মদ রফিকুল ইসলাম এবং প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ও জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের নেতৃত্বে (পিএমও) কর্মকর্তাবৃন্দ শ্রদ্ধা জানান। পরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সমাধীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। এ সময় বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড-অব-অনার প্রদান করে। পরে আবদুল হামিদ এবং শেখ হাসিনা ফাতেহা পাঠ করেন ও জাতির পিতা এবং ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট শহীদদের আত্মার শান্তি কামণা করে বিশেষ মোনাজাতে শরিক হন। এ সময় জাতির পিতার ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেন এবং শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি উপস্থিত ছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য পাঁচ বিদেশি অতিথি ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছেন। তারা হচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারি, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং ওআইসির মহাসচিব ইউসুফ বিন আহমেদ আল-ওথাইমান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে করোনা ভাইরাসের কারণে অনুষ্ঠানটি ভিন্নভাবে করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং। মঙ্গলবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী টেলিফোন করে এ শুভেচ্ছা জানান। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম গণমাধ্যমকে একথা জানান। ইহসানুল করিম বলেন, লোটে শেরিং বিকেলে প্রধানমন্ত্রীকে টেলিফোন করে তাকে এবং বাংলাদেশের জনগণকে মুজিববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। এসময় ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভুটানের জনগণও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছে। এক হাজার ‘ঘি’-এর প্রদীপ জ্বালিয়ে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধুর জন্য প্রার্থনা করা হয়েছে বলেও শেখ হাসিনাকে জানান ভুটানের প্রধানমন্ত্রী। জবাবে শেখ হাসিনা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করায় ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ও দেশটির জনগণকে তার আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট