চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

মুজিব বর্ষ শুরু আজ থেকে

পূর্বকোণ ডেস্ক

১৭ মার্চ, ২০২০ | ১২:০১ পূর্বাহ্ণ

আজ ১৭ মার্চ। বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীর দিন। শুরু হলো মুজিব বর্ষ। ২০২০ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে এ বর্ষ উদযাপন করা হবে। দিবসটি উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহন করা হলেও করোনাভাইরাসজনিত বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে মুজিব বর্ষের কর্মসূচি পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।

আজ (১৭ মার্চ) প্রথম প্রহর থেকে মুজিব বর্ষের সূচনা হলেও রাত ৮টায় আতশবাজির মাধ্যমে তা উদযাপন করা হবে। কারণ ১৯২০ সালের এই দিনে রাত ৮টায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন বাঙালি জাতির এ মহানায়ক। আতশবাজির মূল অনুষ্ঠান হবে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও হাতিরঝিলে। এরপর অন্যান্য অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হবে।

মুজিব বর্ষের সূচনার অনুষ্ঠানে দেশব্যাপী আতশবাজি, আলোকসজ্জা, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আতশবাজির অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার হলেও রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ভাষণসহ অন্যান্য অনুষ্ঠান ধারণ করে টেলিভিশনে প্রচার করা হবে।

মুজিব বর্ষ উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, ‘আমরা রাত ৮টায় অনুষ্ঠানের সূচনা করছি। কারণ এ সময়েই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আর সেই জন্য আমরা ওইসময় থেকেই উৎসবমুখর পরিবেশে জন্মশতবর্ষের আয়োজন শুরু করতে চাই।

জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে লক্ষাধিক লোকের উপস্থিতিতে মুজিব বর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করার প্রস্তুতি ছিল। যেখানে আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন বিশ্বের প্রভাবশালী নেতাদের প্রায় সবাই। বিশ্বনেতাদের অনেকেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকারও প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারীর কারণে ব্যাপক জনসমাগম এড়াতে মূল অনুষ্ঠান স্থগিত করে স্বল্প পরিসরে আয়োজন করা হয়েছে এ অনুষ্ঠান। তবে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতির উন্নতির পর স্থগিত হওয়া অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে বলে জানা গেছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে একটি ‘থিম সং’ প্রস্তুত করা হয়েছে, যা লিখেছেন মুজিব বর্ষ উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। এ থিম সংয়ে কণ্ঠ দিয়েছেন দেশের প্রখ্যাত ও জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীরা, যার সংখ্যা ২০ জনের বেশি।

মুজিব বর্ষ উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই এ ‘থিম সং’টি বাছাই করেছেন এবং এটির কথা ও সুরে কিছু পরিবর্তন করেছেন। সবার কাছে থিম সংটি গ্রহণযোগ্যতা পাবে বলে প্রত্যাশা কমিটির এ সদস্যের।

মুজিব বর্ষ উপলক্ষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রাজধানীর একটি অডিটোরিয়ামে রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানা গেছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে যন্ত্রসংগীত, নৃত্য, দলীয় ও একক সংগীত। শিশুশিল্পীসহ দেশের জনপ্রিয় শিল্পীদের পরিবেশনায় প্রায় ২ ঘণ্টার এ অনুষ্ঠান আতশবাজি শেষ হওয়ার পর দেশের সরকারি-বেসরকারি সব টেলিভিশন ও বেতারে একযোগে সম্প্রচার করা হবে। এটি প্রচার করা হবে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।

১৭ মার্চ একই সঙ্গে জাতীয় শিশু দিবস হওয়ায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় দুপুরে শিক্ষার্থীদের বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হবে। কামাল চৌধুরী বলেন, ‘স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য বছরজুড়ে যে আয়োজন করা হবে, তাতে যেন ইতিহাস ও ঐতিহ্যের কথাই বেশি তুলে ধরা হয়। এতে তারা ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস সম্পর্কে জানবে। আরো সচেতন মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে।

মুজিব বর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে সরকারের পাশাপাশি দলীয়ভাবে বিভিন্ন আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। জনসমাগম এড়িয়ে সফলভাবে দিনটি পালনের জন্য কেন্দ্রীয় নেতারা দফায় দফায় বৈঠক করেছেন দলের ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে। কেন্দ্রীয় উদ্যোগে রাজধানীর ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবন ও দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আতশবাজির আয়োজন করা হয়েছে। একই সময়ে একযোগে দেশের সব ইউনিট কার্যালয়ে আতশবাজি অনুষ্ঠানের জন্য সব ইউনিটকে কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। রাজধানীর পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থান টুংগীপাড়াতেও থাকছেও বিভিন্ন আয়োজন।

দলীয় অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল সাড়ে ৬টায় দেশের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন।

সকাল ১০টায় টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর মিলাদ মাহফিল ও স্বল্প পরিসরে শিশু সমাবেশে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। এর পাশাপাশি গ্রন্থমেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে। বাদ জোহর দেশের সব মসজিদ ও বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।

 

 

 

 

পূর্বকোণ-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট