চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

মুখ্য সচিবকে জরুরি চিঠি সভাপতি রুবানা হকের

আর্থিক ও নীতি সহায়তা চেয়ে বিজিএমইএ’র গুচ্ছ প্রস্তাব

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৬ মার্চ, ২০২০ | ২:৩০ পূর্বাহ্ণ

  • গত বছরের তুলনায় এখন

    পর্যন্ত ২৫ দশমিক ৯০

    শতাংশ রপ্তানি হ্রাস

করোনাভাইরাসের কারণে দেশের বস্ত্র ও রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্প ভয়াবহ অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। নজিরবিহীন এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ আর্থিক ও নীতি সহায়তা চেয়ে সরকারকে একগুচ্ছ প্রস্তাব দিয়েছে। বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব বরাবরে এক জরুরি পত্র দিয়ে পোশাক খাতের বিদ্যমান সংকট উত্তরণে সামগ্রিক করণীয় উল্লেখ করেছেন। এসব প্রস্তাবের সবগুলোই ব্যাংকিং সংক্রান্ত। চিঠিতে তিনি করোনাভাইরাস শুরু হওয়ার পর গত কয়েকমাসে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে তার চিত্র তুলে ধরেন। ড. রুবানা হক বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ও ক্রেতারা তাদের বর্তমান ক্রয়াদেশগুলো স্থগিত করেছে এবং তাদের চলতি শিপমেন্টগুলো বিলম্বিত করছে। তারা বর্তমান শিপমেন্টগুলো ধরে রাখার জন্য বলছে এবং তাদের ক্রয়াদেশগুলো কমিয়ে ফেলেছে। এসব কারণে ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, করোনা বাংলাদেশের রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। গত বছরের তুলনায় এখন পর্যন্ত ২৫ দশমিক ৯০ শতাংশ রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে। জরুরি প্রস্তাবের চিঠিতে করোনার কারণে গার্মেন্টস খাতকে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হতে পারে সুনির্দিষ্টভাবে সেটি উল্লেখ করা হয়। এ চার চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে, করোনাভাইরাসের কারণে যে সকল প্রভাব পড়তে পারে তার মধ্যে রয়েছে, ব্যাক টু ব্যাক এলসি পেমেন্টের ক্ষেত্রে ওভারডিউ হবে যা এড়ানো সম্ভব হবে না। দুই. পরবর্তী ছয় মাসে প্রতিটি কারখানায় নগদ অর্থের সংকট দেখা দিবে, ফলে শ্রমিকদের বেতন, ইউটিলিটি বিল প্রদান ও দুটি ঈদ বোনাস প্রদান করা দুরূহ হয়ে পড়বে। তিন. টার্ম লোনের কিস্তি পরিশোধে সমস্যার সৃষ্টি হবে এবং চতুর্থত: রপ্তানি পণ্য জাহাজিকরণের ক্ষেত্রে বিলম্ব হবে এবং বিভিন্ন আইনি বাধ্যবাধকতা প্রতিপালনে সমস্যা দেখা দিবে। বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে সরকারকে যে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে আগামী ৬ মাসের জন্য ৩ বছর মেয়াদি সুদমুক্ত ঋণ প্রদান, এ লক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে প্রয়োজনীয় রিফাইনেন্সিং করা, ব্যাক টু ব্যাক এলসি সময়মত পরিশোধ করা না হলে ফোর্স লোন সৃষ্টি না করা এবং পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানো, বিদ্যমান ঋণের সুদ ৬ মাস মওকুফ করা এবং ঋণ ব্লক একাউন্ট হিসেবে গণ্য করা, ঋণ শ্রেণিবিন্যাসের সময়সীমা ১৮০ দিন করা, আগামী ৬ মাসের মজুরি বোনাস ইউটিলিটি ও ওভারহেড ব্যয় মেটানোর জন্য সুদমুক্ত ঋণ মার্কিন ডলারে বা স্থানীয় মুদ্রায় প্রদান, ঋণের অর্থ প্রথম ৬ মাস প্রদেয় হবে না এবং পরবর্তী ৩০ মাসে সমান কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য করা ইত্যাদি। এরজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক রিফাইনেন্সিং স্কিমের আওতায় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে সহায়তা প্রদান করতে হবে। এছাড়াও রিটেনশনের বিপরীতে ডলার প্রতি ৫টাকা প্রদান। শিল্পের প্রতিযোগী সক্ষমতা কমে যাওয়ার বিষয় বিবেচনায় নিয়ে চলতি বছরের আগামী ১ এপ্রিল হতে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিটেনশন ভ্যালুর উপর ডলার প্রতি ৫ টাকা প্রদান করা। এতে আনুমানিক ৩ হাজার কোটি টাকারও মতো প্রয়োজন হতে পারে বলে উল্লেখ করেছেন বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট