চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

কমপক্ষে ১০০ ঘণ্টা পরচ্ছিন্নতা কাজে অংশ নতিে হবে

পূর্বকোণ ডেস্ক

১২ মার্চ, ২০২০ | ৮:৫৫ অপরাহ্ণ

ব্যক্তিগত পরিবহন থেকে শুরু করে গণপরিবহনে বিন রাখা বাধ্যতামূলক করাসহ অর্ধশত পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এই পরিকল্পনা পরিচ্ছন্ন গ্রাম ও পরিচ্ছন্ন শহর হিসেবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। মুজিব বর্ষ উদযাপন উপলক্ষে স্থানীয় সরকার বিভাগ এই পরিকল্পনা নিয়েছে। এ ব্যাপারে ৮ মার্চ সরকারের সব বিভাগ ও সংস্থায় এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তথ্যসূত্র: সময়ের আলো

প্রতিটি মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাকে একটি স্লোগান নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। যে স্লোগানে বলা হয়েছে, ‘পরিচ্ছন্ন পরিষ্কার বজায় রাখার দায়িত্ব আমাদের সকলের।’ আর এই স্লোগান প্রতিটি কার্যালয়ে ব্যবহার করার বিষয়টি বাধ্যবাধকতা করা হয়েছে। প্রধান কর্মসূচিতে ১১টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সব কার্যালয়ে নথিপত্র, আসবাবপত্র ইত্যাদি সবসময় পরিপাটি করতে হবে। অফিসের আশপাশে পরিত্যক্ত দ্রব্যাদি ফেলা থেকে মুক্ত রাখতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, সরকারি কার্যালয়ে ধূমপানমুক্ত রাখা নিশ্চিত করতে হবে। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা বছরে কমপক্ষে ১০০ ঘণ্টা পরিচ্ছন্নতা কাজে অংশগ্রহণ করবেন। সরকারি কোয়ার্টার থেকে শুরু করে আবাসিক কোয়ার্টারের ছাদ, কমন স্পেস, সিড়ি, পানির ট্যাঙ্ক নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে।

জানা গেছে, শতাধিক কর্মপরিকল্পনার মধ্যে সিটি করপোরেশনের ও পৌরসভাভিত্তিক রয়েছে ১২টি। এর মধ্যে রয়েছে সব ইউটিলিটি ব্যবস্থাপনায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, ড্রেন, ফুটপাথ পরিষ্কার, উন্মুক্ত স্থানে কোনো ধরনের বর্জ্য না রাখা, দেওয়াল লিখন বন্ধ করা, সড়ক ও ফুটপাথ হকারমুক্ত করা, বাজার থেকে শুরু করে নালা-নর্দমা পরিচ্ছন্নতা অভিযান অব্যাহত রাখা, পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও কর্মকর্তাদের নাম-পদবিসহ দায়িত্বপ্রাপ্তদের প্রতিটি সড়কে দৃশ্যমান করা, পার্কিংয়ের জন্য পর্যাপ্ত পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা, গণপরিবহনের স্ট্যান্ডে নিয়মিত কয়েক ঘণ্টা পরপর পরিষ্কার করা।

নাগরিক সেবা প্রদানকারী সংস্থার জন্য ১৫টি কর্মপরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।  এর মধ্যে রয়েছে সব ইউটিলিটি সংস্থায় পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা, ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বিল্ডিং কোড অনুসরণ করা, সব রেলওয়ে স্টেশন, হাসপাতাল, বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাটে রোস্টারভিত্তিক সার্বক্ষণিক পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োজিত রাখা, সব টয়লেটে পর্যাপ্ত লিকুইড সোপ রাখা, কোনো পরিবহনের জানালা দিয়ে কোনো ময়লা-আবর্জনা নিক্ষেপকারীকে জরিমানার আওতায় আনা, প্লাস্টিক মোড়ক ব্যবহারকারীকে মোড়ক ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা, সব নদী, খাল দূষণমুক্ত রাখা, দেশের সব রেস্টুরেন্ট, বেকারিতে পরিচ্ছন্নতা মানের ওপর গ্রেডিং প্রদান, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, কারাগার, এতিমখানায় খাবার ব্যবস্থাপনায় আধুনিক ক্যাটারিং পদ্ধতি অনুসরণ করা।

গ্রাম থেকে ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে ১৪টি কর্মপরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রতিটি ওয়ার্ডে পাচটি সেরা পরিচ্ছন্ন পরিবার বা বাড়িকে স্বীকৃতি প্রদান, উপজেলা পর্যায়ে প্রতিবছর শ্রেষ্ঠ পরিচ্ছন্ন গ্রাম নির্বাচন করা, জেলা পরিষদের আওতায় সব রেস্টহাউস, মার্কেট, রাস্তাঘাট, খেয়াঘাট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার আওতায় আনা, প্রতিটি শহরে প্রতিবছর সেরা প্রতিষ্ঠান বা পরিবার বাছাই করা ও স্বীকৃতি প্রদান করা।

পরিবারভিত্তিক পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে পরিবারের অভিভাবকের নেতৃত্বে সব সদস্যকে পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা। বাড়ির আঙিনাসহ পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা। পাশাপাশি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানভিত্তিক পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করা। হাটবাজার শেষে বাজার পরিষ্কার করা। কোনো ব্যক্তিমালিকাধীন বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চত্বরে বা চারপাশে কোনো আবর্জনা থাকলে তাহলে এর জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার বিভাগের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান, মুজিব বর্ষকে ঘিরে এই কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। মূলত শহর ও গ্রামকে পরিচ্ছন্নতা রাখতেই এই পরিকল্পনা। যেন বর্তমানে যে করোনাভাইরাস বা ডেঙ্গু থেকে সচেতনতা সৃষ্টি হয়। কাজ শুরু করা হচ্ছে অফিস থেকেই। যে কারণে বলা হয়েছে, সব কার্যালয়ে নথিপত্র, আসবাবপত্র ইত্যাদি পরিপাটি রাখতে হবে। একই বলা হয়েছে, সব কার্যালয়ের উন্মুক্ত স্থানে যথাসম্ভব সবুজায়ন করতে হবে। সব কার্যালয়ে তেলাপোকা, ইঁদুর দমনে পেস্ট কন্ট্রোল করতে হবে। যে কারণে প্রতিবছর উপজেলা থেকে শুরু করে একেবারে বিভাগীয় পর্যায়ে পুরস্কারের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে।

পূর্বকোণ-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট