চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

পাপিয়া কেলেঙ্কারিতে যুক্তদের যেকোনো সময় গ্রেপ্তার

সবুজ সঙ্কেতের অপেক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক হ ঢাকা অফিস

৬ মার্চ, ২০২০ | ৪:৩৫ পূর্বাহ্ণ

নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া ওরফে পিউয়ের সাথে রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী, সচিব পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন রয়েছেন জানিয়ে সরকারের একটি বিশেষ সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেছেন- পাপিয়ার ঘনিষ্ঠ দুর্নীতিবাজ, অবৈধ অর্থের মালিকরা এখন রীতিমতো দৌড়াদৌড়ি করছেন। যারা পাপিয়াকে দিয়ে অবৈধ কর্মকা- করেছেন, যারা তাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে এবং সহযোগিতা করে অপরাধের সাম্রাজ্য গড়তে শক্তি যুগিয়েছেন, অভিজাত হোটেল থেকে ফ্ল্যাটে বসানো রাতের আসরে মনোরঞ্জন করেছেন, ব্ল্যাকমেইল করেছেন সেসব অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও করে তাদের জন্য দুঃসংবাদ। দল, প্রশাসন ও ব্যবসায়ীসহ সকল অপরাধীদের ভিডিও ক্লিপসহ রিপোর্ট এখন প্রধানমন্ত্রীর হাতে। সূত্র জানায়, যাচাই-বাছাইশেষে সবুজ সংকেত পেলেই এই কেলেঙ্কারির সাথে জড়িতদের যেকোনো সময় আটক করা হবে। সংশ্লিষ্ট একাধিক গোয়েন্দা সূত্রও এমন অনেক তথ্য দিয়ে জানিয়েছে, পাপিয়ার অনৈতিক কর্মকা-ের বিষয়ে সরকারের সব গোয়েন্দা সংস্থা নজর রাখছে। প্রতিদিনই কোনো না কোনো গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে ফোন করছেন গুলশানের ওই অভিজাত হোটেলে নিয়মিত যাতায়াত ছিল এমন অনেক প্রভাবশালী লোকজন।

এর সঙ্গে না জড়াতে তাদের অনেকেই অনুরোধও করছেন।
জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, ‘সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ঘটনাটির তদন্ত চলছে। এই অপকর্মের সঙ্গে যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাচ্ছে তাদেরকেও বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে।’

এদিকে, তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাপিয়ার মোবাইল ফোনে অনেক নম্বর পাওয়া গেছে, যারা বরাবরই বিতর্কিত। তাদের মোবাইল ফোনের কললিস্ট ও কথোপকথনের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এছাড়া পাপিয়ার মোবাইল ফোনে যেসব ভিডিও পাওয়া গেছে সেগুলো পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। পাপিয়াকা-ে গুলশানের ওই পাঁচতারা হোটেলের তিন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে খোঁজ নিতে ওই হোটেলে গেলে কেউ কথা বলতে রাজি হননি। তদন্তসংশ্লিষ্ট আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক কর্মকর্তা বলেন, হোটেল থেকে তিনজনকে চাকরিচ্যুত করার তথ্য পেয়ে যাচাই-বাছাই চলছে।

র‌্যাবের তদন্তে উঠে এসেছে, হোটেলটির পরিচালনা পরিষদের শীর্ষ ব্যক্তিরা পাপিয়ার অপকর্মের কথা জেনেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কখনোই জানাননি। এটাও একটি অপরাধ। তাই এই অভিজাত হোটেলকেও তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে। পাপিয়ার বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্তভার আনুষ্ঠানিকভাবে পেতে এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে র‌্যাব।

এদিকে পাপিয়ার ঘনিষ্ঠদের খুঁজতে গুলশানের একটি পাঁচ তারকা হোটেলের সিসিটিভির ক্যামেরা ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া পাপিয়ার কাছে কারা যাওয়া-আসা করতেন, তা জানতে এরই মধ্যে ওই হোটেলের একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন গোয়েন্দারা। এর আগে পাপিয়া সম্পর্কে তথ্য জানতে ওয়েস্টিন হোটেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সূত্র জানায়, পাপিয়া শুধু পাঁচ তারকা হোটেলে নন, আরও অনেক জায়গায় বিভিন্ন পার্টি দিতেন। সেই সব পার্টিতে অনেক ভিআইপির নিয়মিত আসা-যাওয়া ছিল। ওয়েস্টিনের বারে নিয়মিত বিশেষ পার্টির আয়োজন করতেন তিনি। ফার্মগেট ও নরসিংদীর বাসায় ডিজে ও ডিসকো পার্টির আয়োজন ছিল অনেকটা নিয়মিত। যারা পাপিয়াকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিতেন, তাদের অনেকের সম্পর্কে গোয়েন্দা সংস্থা জানতে পেরেছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট