চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

প্রতারকের ফাঁদে পড়ে কোটি টাকা খোয়ালেন সাবেক এমপি

নিজস্ব প্রতিবেদক

১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ৭:৫২ অপরাহ্ণ

প্রতারকে ফাঁদে পড়ে ৪০ লাখ টাকা কোটি টাকা খোয়ালেন নাটোর-১ আসনের জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি প্রকৌশলী এম তালহা। এ ঘটনায় গত সেপ্টেম্বরে বনানী থানায় একটি মামলা হয়। মামলাটি তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডি জানায়, বনানী থানায় মামলার পর এ ঘটনায় আমিনুল ইসলাম নামে চক্রের অন্যতম এক হোতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত রবিবার বনানী থেকে চক্রের আরও তিন সদস্য জসিম উদ্দিন, সুজন মিয়া ও রিপন মিয়াকে ২০ লাখ টাকাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে চক্রের দুজন গডফাদারের নামও পাওয়া গেছে।

ইউরেনিয়াম পারমাণবিক বোমা তৈরির অন্যতম উপাদান। আর এ ইউরেনিয়াম পাওয়া যায় সীমানা পিলার এবং ম্যাগনেটিক কয়েনের (রাইস কয়েন) মধ্যে। ব্রিটিশ আমলের ভারতীয় উপমহাদেশের মূল্যবান এ কয়েন এবং পিলার বিভিন্ন স্থান থেকে গোপনে সংগ্রহ করে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাকাশ সংস্থা নাসা। একটি রাইস কয়েনের দাম শত কোটি টাকারও বেশি।

সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্র অভিনব কৌশলে বড় বড় ব্যবসায়ীদের ফাঁদে ফেলেন। পাঁচতারকা হোটেলে বৈঠকে করেন। যাতে এটি বিশ্বাসযোগ্য হয়। বৈঠকে নাসার একজন কথিত বিজ্ঞানীকেও হাজির করা হয়। সেই বিজ্ঞানী আন্তর্জাতিক ল্যাবরেটরিতে ‘রাইস কয়েন’ টেস্ট করেন। পরে সেটি খুবই মূল্যবান বলেন। এবং সেটি বিদেশে অনেক মূল্য বলে কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে রাজি করা হয় টার্গেট করা শিল্পপতিদের।

সিআইডি জানান, সাবেক এমপি এমএ তালহা কোটি টাকা হারানোর পরও কথিত ম্যাগনেটিক কয়েন পাওয়ার আশা ছাড়েননি। তিনি প্রতারক চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। এমনকি রবিবার তিনি আবারও প্রতারক চক্রের তিন সদস্যকে ২০ লাখ টাকা দেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সিআইডির একটি টিম ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। আবারও কেন টাকা দিয়েছিলেন জানতে এমএ তালহার সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।

সিআইডির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, এ ধরনের প্রতারক চক্র কোনো সাধারণ মানুষকে টার্গেট করে না। তারা শিল্পপতি বা বড় ব্যবসায়ীকে টার্গেট করে। তার সঙ্গে সখ্য গড়ে রাইস কয়েনের গল্প শোনায়। এ ধরনের প্রতারণায় বেশ কয়েকটি গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। ২০১৭ সালেও একজন বড় শিল্পপতি আরেকটি প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে এক কোটি ৪০ লাখ টাকা খুইয়েছিলেন।

সিআইডির এক কর্মকর্তা জানান, সাবেক এমপি এমএ তালহা এ চক্রের ফাঁদে পড়ে চট্টগ্রামে একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানও বিক্রি করেছেন। পরে প্রতারণার অভিযোগে তিনি চক্রের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

অবশ্য সম্মানহানির ভয়ে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট