চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

মেলায় ঘুরতে না পারার আক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক হ ঢাকা অফিস

৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ | ৪:৩৩ পূর্বাহ্ণ

অমর একুশের গ্রন্থমেলায় স্বাধীনভাবে ঘুরতে না পারায় আক্ষেপ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই একটা দুঃখ থেকে যাচ্ছে। এখন আর সেই স্বাধীনতা নেই। আগে দিনের পর দিন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বইমেলায় ঘুরে বেড়াতাম। গতকাল বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একুশের এই বইমেলা- গ্রন্থমেলা বলেন আর বইমেলা বলেন, বইমেলা বলতেই একটু আপন আপন মনে হয় বেশি। এই বইমেলা বা গ্রন্থমেলা এটা আমাদের প্রাণের মেলা। আগের মতো বইমেলায় ঘুরতে না পারার কষ্টের জানিয়ে তিনি বলেন, যদিও সত্যি কথা বলতে কী.. প্রধানমন্ত্রী হয়ে সব সময় এটাই দুঃখ লাগে যে এখন আর সেই স্বাধীনতা নেই আগে যেমন ছাত্রজীবনে এখানে দিনের পর দিন.. ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটাতাম এবং ঘুরে বেড়াতাম বইমেলায়। পুরো সময়টা পারলে থাকতাম। সেটা আর এখন হয়ে ওঠে না। এই একটা দুঃখ এখনো থেকে যাচ্ছে। সেই স্বাধীনতা আর পাচ্ছি না। তারপরও আমি বলবো এই বইমেলা এলেই ভালো লাগে। দেশে লেখক-প্রকাশক-পাঠকদের সবচেয়ে বড় আয়োজন অমর একুশের গ্রন্থমেলা। বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রায় ৮ লাখ বর্গফুট জায়গায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবারের বই মেলা। এবারের গ্রন্থমেলায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২৬টি প্রতিষ্ঠানকে ১৭৯টি স্টল ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৩৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৯৪টি স্টলসহ মোট ৫৬০টি প্রতিষ্ঠানকে ৮৭৩টি স্টল বরাদ্দ দেয়া

হয়েছে। এছাড়া বাংলা একাডেমিসহ ৩৩টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে ৩৪টি প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এবার সমগ্র মেলা প্রাঙ্গণে মুজিববর্ষ উদযাপনের ছোঁয়া লেগেছে। নানন্দিকভাবে সাজানো হয়েছে এবারের মেলা প্রাঙ্গণ। মুজিববর্ষ উপলক্ষে এবারের মেলা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে উৎসর্গ করা হয়েছে। লিটল ম্যাগাজিন চত্বর স্থানান্তরিত হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে। ১৫২টি লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দ ছাড়াও ৬টি উন্মুক্ত স্টল রাখা হয়েছে। ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই অমর একুশে গ্রন্থমেলা। ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে মেলা। আর ছুটির দিনে মেলা খোলা থাকবে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত এ গ্রন্থমেলা খোলা থাকবে। প্রতিদিন বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে জাতির পিতাকে নিয়ে ২৫টি বই প্রকাশ করেছে বাংলা একাডেমি। নতুন এসব বই নিয়েও আলোচনা করা হবে। এছাড়াও প্রতিদিন সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবিবুল্লাহ সিরাজী। এ ছাড়া সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আবু হেনা মোস্তফা কামাল এবং বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশনা ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি আরিফ হোসেন ছোটন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

এ বছর বাংলা একাডেমির অমর বইমেলা ‘বঙ্গবন্ধু জন্মশতবর্ষ’ পালন উপলক্ষে তার প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এ সময় জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, বিদেশি কূটনীতিক, বাংলা একাডেমির সদস্য, সিনিয়র সাংবাদিক, লেখক, কবি, প্রকাশক এবং সিনিয়র সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ১০ গুণী কবি ও সাহিত্যিকের হাতে বিগত ২০১৯ সালের বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী।

পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন- কবিতায় মাকিদ হায়দার, উপন্যাসে ওয়াসি আহমদ, প্রবন্ধ ও গবেষাণায় স্বরচিস সরকার, অনুবাদে খায়রুল আলম সবুজ, নাটকে রতন সিদ্দিকী, কিশোর সাহিত্যে রহিম শাহ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাহিত্যে রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, বিজ্ঞান উপন্যাসে নাদিরা মজুমদার, ভ্রমণ সাহিত্যে ফারুক মইনউদ্দিন এবং লোকসাহিত্যে সাইমন জাকারিয়া। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু কর্তৃক রচিত ৩য় বই ‘আমার দেখা নয়া চীন’ শীর্ষক বইয়ের মড়ক উন্মোচন করেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট