আফগানিস্তানে জাতীয় পরিচয়পত্রে বাবার নামের পাশাপাশি এখন থেকে মায়ের নামও থাকবে। গত বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি এ সংক্রান্ত একটি আইনের সংশোধনীতে স্বাক্ষরও করেছেন।
যুদ্ধবিধ্বস্ত এ দেশটির অনেক অংশে এখনও কোনো নারীর নাম প্রকাশ্যে এলে তাকে নেতিবাচকভাবে দেখা হয়; কোথাও কোথাও একে অপমানজনক বলেও বিবেচনা করা হয়। পুরুষতান্ত্রিক এ রীতির কারণে এতদিন ধরে আফগানিস্তানে শিশুদের জাতীয় পরিচয়পত্রে কেবল বাবার নামই থাকতো।
অবশেষে নারী অধিকার কর্মীদের দীর্ঘ আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে আফগান কর্তৃপক্ষ সন্তানের পরিচয়পত্রে মায়ের নাম যুক্ত করতে যাচ্ছে।
তিন বছর আগে আফগানিস্তানে ‘হয়ার ইজ মাই নেম’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা শুরু হয়। তাৎক্ষণিকভাবে তা দেশটির অনেক পার্লামেন্ট সদস্য ও সেলিব্রেটির সমর্থন পায়। ওই সময় থেকেই সন্তানের পরিচয়পত্রে মায়ের নাম অন্তর্ভুক্তির দাবি জোরাল হতে থাকে।
এছাড়া, অন্য একটি ক্যাম্পেইনেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী অধিকার কর্মীরা পরিচয় দেয়ার সময় নিজের নামের পাশপাশি মায়ের নাম ব্যবহার করেছেন।
যার ফলশ্রুতিতে শেষ পর্যন্ত জাতীয় পরিচয়পত্রে মায়ের নাম যুক্ত হবার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ‘হয়ার ইজ মাই নেম’ হ্যাশট্যাগ ক্যাম্পেইনের প্রতিষ্ঠাতা লালেহ ওসমানি।
লালেহ ওসমানি জানান, নাগরিক ও প্রচারকর্মীদের ধারাবাহিক প্রচারণা এবং দাবির পক্ষে ঐক্যবদ্ধ অবস্থানের ফলেই এ বিজয় এসেছে।
সন্তানের জাতীয় পরিচয়পত্রে মায়ের নাম যুক্ত করার সিদ্ধান্তকে আফগান মন্ত্রিসভার আইন বিষয়ক কমিটি ‘লৈঙ্গিক সমতার পক্ষে বড় একটি পদক্ষেপ’ হিসেবে দেখছে।
এদিকে, কাবুলের পার্লামেন্ট সদস্য মারিয়াম সামা এক টুইটে সন্তানের পরিচয়পত্রে মায়ের নাম যোগ করার আন্দোলনে যারা যারা ‘অক্লান্ত পরিশ্রম’ করেছেন তাদের ধন্যবাদ দিয়েছেন।
পূর্বকোণ/এএ