চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

ভয়াবহ নাইন ইলেভেনের ১৯ বছর আজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১১ সেপ্টেম্বর, ২০২০ | ১:০৮ অপরাহ্ণ

যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারসহ তিন স্থানে সন্ত্রাসী হামলার হামলার ১৯ বছর পুর্ণ হলো আজ। ২০০১ সালের এই দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বিমান হামলা চালিয়ে ধ্বংস করে দেয়া হয় টুইন টাওয়ার। সেইসঙ্গে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনেও হামলা চালানো হয় ।

ওই ঘটনা পুরো বিশ্বের রাজনৈতিক ইতিহাসকে বদলে দিয়েছিলো। সারা বিশ্বের মানুষ প্রথমবারের মতো জেনেছিলো একটি সন্ত্রাসীগোষ্ঠী- আল কায়দা ও তার নেতা ওসামা বিন লাদেনের নাম।

জানা যায়, এ হামলার আগে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে সতর্ক করা হয়েছিল। তবে সে সতর্কতা আমলে নেননি তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ও তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা কনডোলিজ্জা রাইস । এসব হামলার জন্য আফগানিস্তান ভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়দাকে দায়ী করে আসছে দেশটি।হামলার মূল হোতা হিসেবে ভাবা হয় আল কায়দা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে। এই ঘটনায় তিনি সরাসরি নেতৃত্ব দিয়েছেন ও অন্যদের উদ্বুদ্ধ করেছেন।

সকাল ৮টা ৪৬ মিনিটে আমেরিকান এয়ারলাইনসের ফ্লাইট- বোস্টন থেকে উড়ে এসে হামলে পড়ে নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের উত্তর ভবনটিতে।

হামলা চালানোর আগে সকাল ৮টা ১৯ মিনিটে একজন ফ্লাইটে এটেনডেন্ট সতর্ক করেন, তাঁদের উড়োজাহাজ ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েছে। ককপিট থেকে কোনো উত্তর আসছে না এবং ছিনতাইকারীদের কাছে বিস্ফোরক রয়েছে।

এ ছাড়া জানানো হয়, এক যাত্রীসহ দুজন এটেনডেন্টকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। পরে জানা যায়, হামলার শিকার হওয়া ওই যাত্রীর নাম ড্যানিয়েল লেউইন। তিনি ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। ধারণা করা হয়, তিনি ছিনতাইকারীদের কাছ থেকে উড়োজাহাজের নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন এবং নাইন-ইলেভেনের হামলায় তিনিই প্রথম ভুক্তভোগী।

এ হামলার বিষয়টি ঠিকমতো বুঝতে না বুঝতেই ১৭ মিনিট পর ৯টা ৩ মিনিটে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের দক্ষিণ ভবনে আছড়ে পড়ে ইউনাইটেড এয়ারলাইনসের ফ্লাইট-১৭৫। সেটিও বোস্টন থেকে উড়ে এসে হামলা চালায়।

পরে জানা যায়, উড়োজাহাজটি ছিনতাইয়ের পরই একজন এটেনডেন্ট ইউনাইটেড এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের কবলে পড়েছে এবং দুজন পাইলটই নিহত হয়েছেন। তবে যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়েও শেষরক্ষা হয়নি কারো।

এছাড়া একটি বিমান পেনসিলভেনিয়া স্টেট ও অপরটি ভার্জিনিয়া স্টেটে বিধ্বস্ত হয়েছিলো। বলা হয়, হোয়াইট হাউসে একটি বিমান বিধ্বস্ত করতে চেয়েছিললো ষড়যন্ত্রকারীরা। কিন্তু তা পেনসিলভেনিয়ায় ভেঙে পড়ে। টুইন টাওয়ারের ঘটনায় মারা গেছেন ২ হাজার ৯৯৬ ব্যক্তি, যাদের মধ্যে ২ হাজার ৭৫৩ জনের ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছিলো। বাকিদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

টুইন টাওয়ার হামলায় ৪০ জন বাংলাদেশিও মারা গেছেন। এ হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনেক প্রশ্নের জবাব আজও পাওয়া যায়নি। দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে এসব প্রশ্ন ঘুরেফিরে বারবার আলোচিত হচ্ছে, যার জবাব আদৌ কোনোদিন পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ।

ওই ঘটনায় আর্থিক ক্ষতি হয়েছিলো ১২ বিলিয়ন ডলার। ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি পরিশোধ করেছিল ৯ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের দাবিনামা। শুধু বিধ্বস্ত ভবন পরিষ্কার করতে ব্যয় হয়েছিল ৭৫০ মিলিয়ন ডলার।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন