চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

বিশ্বে জোরপূবর্ক বাস্তুচ্যুত ৮ কোটি মানুষ : ইউএনএইচসিআর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৮ জুন, ২০২০ | ৬:২৯ অপরাহ্ণ

বিশ্বের বলপূর্বক বাস্তুচ্যুতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৮ কোটি মানুষ। যা পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ১ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি ৯৭ জনের মধ্যে ১ জন মানুষ তার নিজ বাসস্থান থেকে বিতাড়িত। দিন দিন এই বিশাল জনগোষ্ঠীর স্বেচ্ছায় নিজ ঘরে ফেরার সুযোগও কমে আসছে। জেনেভার জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর আজ বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) এক প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায়।

ইউএনএইচসিআর’র বার্ষিক গ্লোবাল ট্রেন্ডস রিপোর্ট অনুযায়ী, সারা পৃথিবীতে ২০১৯ এর শেষে বাস্তুচ্যুত অবস্থায় ছিলেন ৭ কোটি ৯৫ লাখ মানুষ। ইতিহাসে এর আগে এত মানুষ কখনও গৃহহারা হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। গত ৯০-এর দশকে প্রতি বছর প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে নিজ দেশে ফিরতে পারতেন প্রায় গড়ে ১৫ লাখ মানুষ। গত দশকে এই সংখ্যা কমে ৩ লাখ ৯০ হাজারে পৌঁছেছিল। এতে বোঝা যায় বাস্তুচ্যুতির পরিমাণ এখন টেকসই সমাধানকে অনেক দূর নিয়ে গেছে।

ইউএনএইচসিআর’র ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, এই ৭ কোটি ৯৫ লাখ মানুষের মধ্যে নিজ দেশের ভেতরে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ৪ কোটি ৫৭ লাখ মানুষ। বাকিদের মধ্যে ২ কোটি ৯৬ লাখ মানুষ দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। আর অন্য কোনো দেশে আশ্রয়ের আবেদন করে ফলাফলের অপেক্ষা করছেন ৪২ লাখ মানুষ। বিশ্বব্যাপী শরণার্থীদের দুই-তৃতীয়াংশ পাঁচটি দেশের। দেশগুলো হল- সিরিয়া, ভেনেজুয়েলা, আফগানিস্তান, দক্ষিণ সুদান ও মিয়ানমার।

২০১৮ এর শেষে দুটি কারণে এই সংখ্যা ছিল ৭ কোটি ৮ লাখ। কারণ দুটির প্রথমটি হল, নতুন বাস্তুচ্যুতির বিভিন্ন ঘটনাঃ বিশেষত গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গো, পশ্চিম আফ্রিকার সাহেল অঞ্চল, ইয়েমেন ও সিরিয়ার সংঘাত। সংঘাতপূর্ণ ৯ বছর পর আজ এক কোটি ৩২ লাখ সিরিয়ান শরণার্থী কিংবা আশ্রয়প্রার্থী অথবা অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত। এই সংখ্যা বৈশ্বিক বাস্তুচ্যুতির ছয় ভাগের এক ভাগ। দ্বিতীয় কারণ হল, নিজ দেশের বাইরে অবস্থানরত ভেনেজুয়েলার মানুষের পরিস্থিতি সম্পর্কে গত এক বছরে পাওয়া বিশদ তথ্য। তাদের অনেকেই আইনত শরণার্থী বা আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে নিবন্ধিত নন, কিন্তু সুরক্ষা ও সহায়তা তাদেরও প্রয়োজন।

শুধু এই সংখ্যাগুলোই নয়, অনেক মানুষ ও তাদের দৈনন্দিন সংগ্রাম এর মধ্যে জড়িয়ে আছে। অস্ট্রেলিয়া, ডেনমার্ক ও মঙ্গোলিয়ার মোট জনসংখ্যার যোগফলের চেয়েও বেশি সংখ্যাক শিশু আজ বাস্তুচ্যুত। তাদের সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি থেকে ৩ কোটি ৪০ লাখ। এদের মধ্যে লাখ লাখ শিশু অভিভাবকহীন। বাস্তুচ্যুত প্রবীণ জনসংখ্যা (৪ শতাংশ) বৈশ্বিক প্রবীণ জনসংখ্যার (১২ শতাংশ) চেয়ে অনেক কম। এই পরিসংখ্যানের পেছনে লুকিয়ে আছে অসংখ্য হৃদয়বিদারক হতাশা, আত্মত্যাগ ও বিচ্ছেদের গল্প।

 

 

 

 

 

 

পূর্বকোণ/আরপি

 

 

শেয়ার করুন