চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

জনপ্রতি ৭ হাজার ডলার মুক্তিপণ চেয়েছিল ৩৮ বাংলাদেশির কাছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৯ মে, ২০২০ | ৬:২৬ অপরাহ্ণ

ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে লিবিয়া থেকে বের হয়ে ইতালি প্রবেশ করাই লক্ষ্য ছিল ৩৮ বাংলাদেশির। এজন্য তারা বেনগাজী থেকে চারটি গাড়িতে করে ত্রিপলির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। কিন্তু দলটি ত্রিপলি যাওয়ার পথে অপহরণকারীদের কাছে মিজদা শহরে জিম্মি হয়ে পড়ে। সেখানে মাথাপিছু ৭ হাজার ডলার মুক্তিপণের দাবিতে শারীরিক নির্যাতন করা হয় তাদের ওপর।

একপর্যায়ে জিম্মিরা নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে নির্যাতনকারীর ওপর চড়াও হয়ে জিম্মিকারীকে হত্যা করে। নিহতের পরিচিতরা এই মৃত্যুর খবর পেয়ে প্রতিশোধ নিতে আসে। তাদের এলোপাতাড়ি গুলিতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় ২৬ বাংলাদেশি। এ ঘটনায় আহত হন আরও ১১ জন। ঘটনাস্থল থেকে জীবন বাঁচিয়ে পালানো অবশিষ্ট একজন বাংলাদেশির এসব তথ্য জানান।

বেনগাজীর বাংলাদেশ কমিউনিটির সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক জানান, ঘটনার পর মিজদা শহরের ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন ওই ব্যক্তি। এরপর তিনি বেনগাজীর বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ঘটনার বর্ণনায় তিনি বলেন, ‘বেনগাজী থেকে ত্রিপলিতে যাওয়ার সময় ৩৮ জন বাংলাদেশি মিজদা শহরে অপহরণকারীদের কাছে জিম্মি হন। জিম্মিকারীরা তাদের কাছে মাথাপিছু ৭ হাজার ডলার করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকার জন্য অনেক মারধর করে। অত্যাচার সহ্য না করতে না পেরে বাংলাদেশিরা জিম্মিকারীদের ঘিরে ধরে এবং একজনকে মেরে ফেলে। মৃত্যুর খবর পেয়ে মৃতব্যক্তির পরিচিতরা এসে আটক জিম্মিদের দিকে এলোপাতাড়ি গুলি চালালে ঘটনাস্থলেই নিহত হন ২৬ জন বাংলাদেশি ও ৪ আফ্রিকার নাগরিক।’

বর্তমানে ওই ব্যক্তি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত আছেন বলে ওমর ফারুক আরো জানান, এখন ঠিকমতো কথাও বলতে পারছেন না। তাকে উদ্ধারের জন্য আমরা এবং দূতাবাস চেষ্টা করছি। কিন্তু মরুভূমি এলাকা এবং যুদ্ধাবস্থা চলায় উদ্ধার করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। মিলিশিয়া গ্রুপের কারণে তার এলাকায় পৌঁছানো খুব কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে আজকেই তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা যাবে বলে আশা করছি। যারা মৃত, তাদের লাশ মর্গে আছে এবং ময়নাতদন্ত হয়েছে, তাদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে।’

বাংলাদেশি এই কমিউনিটি নেতা আরও বলেন, ‘পাশের শহর জিনিতানে ১১ জন আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন। পাচারকারী দল জীবিত বাংলাদেশিদের অবস্থান জেনে যাওয়ায় ওই অঞ্চলে আশ্রয়দাতাসহ অনেকেই হুমকির মুখে আছেন। পাশাপাশি থমথমে পরিবেশ বিরাজ করায় আহত বাংলাদেশিদের উদ্ধার কাজে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে।

পূর্বকোণ/আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট