চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

স্যোশাল মিডিয়ার বিরুদ্ধে এক নির্বাহী আদেশে সই ট্রাম্পের
স্যোশাল মিডিয়ার বিরুদ্ধে এক নির্বাহী আদেশে সই ট্রাম্পের

স্যোশাল মিডিয়ার বিরুদ্ধে নির্বাহী আদেশে সই ট্রাম্পের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৯ মে, ২০২০ | ২:০৩ অপরাহ্ণ

টুইটারসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিরুদ্ধে লাগাতার পক্ষপাতদুষ্টতার অভিযোগ করে আসা মার্কিন প্রেসিডেন্ট বুধবারই স্যোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ এবং প্রয়োজনে বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। এরই প্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার (২৮ মে)সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে দেয়া বেশকিছু আইনি সুরক্ষা প্রত্যাহারের লক্ষ্যে একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

টুইটার কর্তৃপক্ষ ট্রাম্পের দুটি টুইটে ‘তথ্যের সত্যতা যাচাই’ সংক্রান্ত ট্যাগ লাগিয়ে দেয়ার পর ক্ষুব্ধ ট্রাম্প বৃহস্পতিবার এ নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করলেন। তাছাড়া, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো নিয়মিতভাবে রক্ষণশীল মতের উপর কাঁচি চালিয়ে আসছিল বলেও ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন।

এদিকে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, তার এই আদেশের ফলে ফেইসবুক ও টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তাদের প্ল্যাটফর্মে যেভাবে তদারকি করে, তার বিরুদ্ধে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোকে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ করে দেবে।

ট্রাম্পের এ নির্বাহী আদেশ আইনী বাধার মুখে পড়বে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। স্যোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো এখন যেসব আইনী সুরক্ষা পাচ্ছে, তা পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মার্কিন কংগ্রেস কিংবা আদালতকে অবশ্যেই হস্তক্ষেপ করতে হবে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

অবশ্য কেবল ট্রাম্পের টুইটেই নয়, বৃহস্পতিবার টুইটার কর্তৃপক্ষ নতুন করোনাভাইরাসের উৎপত্তি যুক্তরাষ্ট্রের বলে দাবি করা চীনের এক সরকারি মুখপাত্রের দুটি টুইটেও ‘কোভিড-১৯ সংক্রান্ত তথ্য জানুন’ সংক্রান্ত ট্যাগ লাগিয়ে দিয়েছে।

বিবিসি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের কমিউনিকেশনস ডিসেন্সি অ্যাক্টের অনুচ্ছেদ ২৩০ এর কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে সাধারণত তাদের প্ল্যাটফর্মে ব্যবহারকারীদের দেয়া পোস্ট বা কমেন্টের জন্য দায়ী করা হয় না।

ওই অনুচ্ছেদে প্রাপ্ত সুবিধায় স্যোশাল মিডিয়াগুলো তাদের দৃষ্টিতে অশ্লীল, হয়রানিমূলক কিংবা সহিংস কন্টেন্ট সরিয়ে নেয়া অথবা ব্লক করারও সুযোগ পেত।

ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে যেসব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তাদের প্ল্যাটফর্মে ব্যবহারকারীর কন্টেন্ট সম্পাদনা করবে, তাদের ক্ষেত্রে এসব আইনী সুরক্ষা তুলে নিতে সুপারিশ করা হয়েছে।

কমিউনিকেশনস ডিসেন্সি অ্যাক্টের ধারা ২৩০ এর সংশোধন কিংবা একেবারে বাতিলে কংগ্রেসে বিল আনতেও বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার কংগ্রেসে ভোটের জন্য তুলতে শিগগিরই এ সংক্রান্ত বিলের খসড়া লেখার কাজ শুরু করবেন, বলেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার ট্রাম্পঘনিষ্ঠ রিপাবলিকান সিনেটর মার্কো রুবিও বলেছেন, কোনো স্যোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম যখন সুনির্দিষ্ট কোনো পোস্টে ‘ফ্যাক্ট-চেক’ লেবেল সেঁটে দিচ্ছে, তখন সেটি ‘প্রকাশকের ভূমিকাই পালন করছে, ফোরামের ভূমিকা নয়’।

“টুইটারের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো যদি এখন থেকে প্রকাশকের অতিরিক্ত ভূমিকা নিতে চায়, তাহলে তাদেরকে দায়মুক্তি দেয়ার কারণ নেই, এবং তাদেরকে আইনীভাবে প্রকাশক হিসেবেই দেখা উচিত,” বলেছেন তিনি।

ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের সমালোচনা এসেছে টুইটার, গুগল ও ফেইসবুকের কাছ থেকে।

রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের টুইটে ‘ফ্যাক্ট চেকিং’ ট্যাগ লাগিয়ে হইচই বাঁধিয়ে দেয়া টুইটার বলেছে, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ থেকে উৎসারিত কমিউনিকেশন্স ডিসেন্সি অ্যাক্টের ধারা ২৩০ মার্কিন উদ্ভাবন ও বাকস্বাধীনতাকে সুরক্ষা দিয়ে আসছে। 

ইউটিউবের স্বত্বাধিকারী গুগল বলছে, ধারা ২৩০ এর পরিবর্তন মার্কিন অর্থনীতি ও ইন্টারনেট স্বাধীনতায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

বুধবার ফক্স নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ফেইসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গও স্যোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোর উপর সেন্সরশিপ আরোপের চেষ্টার সমালোচনা করেছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে ট্রাম্পের এ নির্বাহী আদেশ বাক স্বাধীনতার উপর ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে রক্ষণশীলদের একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্কও সতর্ক করেছে।

পূর্বকোণ/ এএ 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট