মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্মিত জনপ্রিয় টিভি সিরিজ ‘রোবোকপ’ এর মত তিউনিসিয়ায় বাস্তবজীবনেও পুলিশি দায়িত্ব পালন করছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন আধুনিক পুলিশ রোবট। দূর থেকে এসব রোবট নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন পুলিশ কর্মকর্তারা। করোনাভাইরাস মোকাবিলাতে সক্ষমতার প্রমাণ দিচ্ছে তারা। বৈশ্বিক এই মহামারির বিস্তার প্রতিরোধে তিউনিসিয়ায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এরপর রাজধানী তিউনিসের রাস্তায় বেশ কিছু ‘রোবোকপ’ নামিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। লকডাউন অমান্য করে যেন কেউ ঘরের বাইরে না বের হন, সেটাই নিশ্চিত করবে ‘পিগার্ড’ নামের এসব চার চাকার রোবোকপ। পিগার্ড অতিবেগুনি রশ্মি এবং তাপ শনাক্তকরণ ক্যামেরা দিয়ে সজ্জিত। পুলিশের গাড়ির মতো এতে শব্দ এবং আলোর মাধ্যমে অ্যালার্মের ব্যবস্থা রয়েছে।
তিউনিসিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, রোবটটি লকডাউন অমান্যকারীদের প্রতি- তারা রাস্তায় কি করছে তা জানতে চাইছে, এবং তাদের পরিচয়পত্র দেখাতে বলছে। কড়া পুলিশি ভাষায় ওই রোবট যা বলছে, তা অনেকটা এরকম, দেশজুড়ে লকডাউন চলছে। এই অবস্থায় ঘরের বাইরে কেন বেড়িয়েছেন? জলদি আপনার পরিচয়পত্র দেখান।
১৭ মার্চ উত্তর আফ্রিকান দেশ তিউনিসিয়া প্রথম লকডাউন ঘোষণা করে। ২২ মার্চ পর্যন্ত এটি চলবে। একইসঙ্গে কঠোর সান্ধ্যকালীন নিষেধাজ্ঞা চলছে সেখানে। গত ২ মার্চ থেকে দেশটিতে ১৪ জন ব্যক্তি কোভিড-১৯ ভাইরাসে মারা যাওয়ার পর সরকার ভাইরাস প্রতিরোধে তৎপর হয়ে উঠেছে। সেখানে এখন পর্যন্ত ৪৫৫ জন ব্যক্তির দেহে এই ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়েছে। এই অবস্থায় পুলিশ রোবট মোতায়েন করে ভালোই সুফল পাওয়া যাচ্ছে। রোবটটির উদ্ভাবক তিউনিসিয়ান নাগরিক আনিস শাহবাই বলেন, ২০১৫ সালে প্রথম নিরাপত্তা টহলের জন্য রোবটটি আমি তৈরি করি। এটা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে নিজে নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম। শাহবানির প্রযুক্তি কোম্পানি এনোভা রোবটিক্স ফার্ম নির্মিত এই রোবটের দাম এক লাখ থেকে এক লাখ ৪০ হাজার ডলার। এতদিন বিদেশি নিরাপত্তা কোম্পানিগুলোই ছিল এর প্রধান ক্রেতা। তিউনিসিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর সোউসে ভিত্তিক কোম্পানিটি এক বিবৃতিতে জানায়, তিউনিসের একটি হাসপাতালেও তারা এই রোবট মোতায়েন করবে। এর সাহায্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীরা তাদের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন।
পূর্বকোণ/এম