চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

করোনা নিয়ে নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী লেভিটের ভবিষ্যদ্বাণী মিলে গেলো যেভাবে

পূর্বকোণ ডেস্ক

২৪ মার্চ, ২০২০ | ৯:১২ অপরাহ্ণ

গত মাসের ১ ফেব্রুয়ারি এক রিপোর্টে নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী মাইকেল লেভিট ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে চীনে করোনায় মৃতের হার কমে যাবে। তিনি আরও বলেন, শুধু তাই নয়, মৃতের সংখ্যা প্রতিদিনই কমতে থাকবে। লেভিটের এই ভবিষ্যদ্বাণী চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার হয়। তার তিন সপ্তাহ পর চায়না ডেইলি নিউজকে এই নোবেলজয়ী বলেন, ‘এই ভাইরাসের সংক্রমণের হার শেষের দিকে চলে এসেছে।’ তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেন, সবমিলিয়ে কোভিড-১৯-এ চীনে আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজারে গিয়ে ঠেকবে। এবং মারা যাবে ৩ হাজার ২৫০ জনের মতো।

নোবেলজয়ী রসায়নবিদ মাইকেল লেভিট ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেছেন, করোনাভাইরাস মহামারীর সমাপ্তি নিকটবর্তী। তিনি তার এ ভবিষ্যদ্বাণীর সমর্থনে চীনে এ ভাইরাসে আক্রান্তের ক্রমহ্রাসমান সংখ্যা উল্লেখ করেছেন।

যেখানে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে চীনে। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮১ হাজার ১৭১ এবং মারা গেছে ৩ হাজার ২৭৭ জন। তবে পূর্বের তুলনায় চীনে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। তার ভবিষ্যদ্বাণী থেকে মাত্র ৫ জন বেশি মারা গেছে। সোমবার দেশটিতে নতুন করে ৭৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন করোনাভাইরাসে। তবে এদের মধ্যে ৭৪ জনই বিদেশফেরত। তার এ ভবিষ্যদ্বাণী আশ্চর্যজনকভাবে পরবর্তীতে সত্যে পরিণত হয়। মার্চ ১৬ পর্যন্ত এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চীনে তখন মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ২৯৮ জন। মারা যান ৩ হাজার ২৪৫ জন।

লেভিট যখন এই ভবিষ্যদ্বাণী করেন, তখন চীনের হুবেই প্রদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার প্রতিদিন ৩০ শতাংশ হারে বাড়ছিল। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে আক্রান্তের সংখ্যা সরলরৈখিকভাবে কমতে শুরু করে এবং নিহতদের সংখ্যাও একইভাবে কমতে থাকে।

লেভিট বলেন, ‘করোনা নিয়ে কথা উঠলেই এটি মানুষকে অনেক ভয় দেখায়। কারণ প্রতিদিনই তারা নতুন নতুন আক্রান্তের খবর পাচ্ছেন। তবে বিষয় হচ্ছে, সংক্রমণের হার ধীর হয়ে যাওয়ার অর্থ হলো মহামারিটির সমাপ্তি খুব কাছাকাছি এসে গেছে।’

একই সঙ্গে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, মার্চ মাসের শেষে ভাইরাসটি চীন থেকে অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

লেভিট আরও দাবি করেন, বেশিরভাগ ব্যক্তির শরীরে কোভিড-১৯ প্রতিরোধের প্রাকৃতিক রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা রয়েছে। তিনি বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া ইতিমধ্যে ভাইরাস সংক্রমণের মধ্য অবস্থা অতিক্রম করেছে এবং ইতালিতে বয়স্ক জনসংখ্যার হার বেশি থাকায় দেশটিতে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

অবশ্য প্রথম দিক থেকেই গবেষকরা বলে আসছেন, প্রাণঘাতী এই ভাইরাস আগামী কয়েক মাস, বা কয়েক বছর পর্যন্ত থেকে যেতে পারে। এমনকি অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ মারা যাবে এই ভাইরাসে। সেখানে এই নোবেলজয়ীই একমাত্র ব্যতিক্রম যিনি বলছেন, এই ভাইরাসের শেষ সময় চলে এসেছে।

লেভিট বলেছেন, আমাদের এখন যা দরকার তা হলো এই মহামারিকে নিয়ন্ত্রণ করা। নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলার ব্যবস্থা (সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং মেজারমেন্ট) গ্রহণ করা হলে এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তিনি বলেন, আমরা ক্রমেই ভালোর দিকে যাচ্ছি।

 

 

 

পূর্বকোণ-আরপি

শেয়ার করুন