চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

ফের শরণার্থী সংকটের মুখে ইউরোপ

৩ মার্চ, ২০২০ | ২:০৭ পূর্বাহ্ণ

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক : তুরস্কের সরকার শরণার্থী চুক্তি অগ্রাহ্য করে ইইউ সীমান্ত খুলে দেয়ায় গ্রিসে চরম সংকট সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা জরুরি বৈঠকে বসছেন। সিরিয়ায় বেকায়দায় পড়ে তুরস্ক ইউরোপের উপর এই চাপ বাড়াচ্ছে।
২০১৫ সালে শরণার্থী সংকটের জের ধরে ইউরোপের রাজনৈতিক রসায়ন অনেকটা বদলে গিয়েছিল। বহিরাগতদের আগমনের ফলে সমাজের শান্তি নষ্ট হচ্ছে, এমন ‘বুলি’ সম্বল করে একের পর এক দেশে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছিল চরম দক্ষিণপন্থী শক্তি। সে যাত্রায় তুরস্কের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক চুক্তির মাধ্যমে শরণার্থীদের ঢল বন্ধ করা গিয়েছিল। কিন্তু সিরিয়া সংকটের জের ধরে এই মুহূর্তে চরম বেকায়দায় পড়ে তুরস্ক ইউরোপের উপর চাপ সৃষ্টি করার হাতিয়ার হিসেবে সেই চুক্তি অমান্য করছে।

শুক্রবার থেকে শরণার্থীদের নতুন ঢল নামার কারণে দুই দিন ধরে গ্রিসের সীমান্তে চরম অরাজকতা সৃষ্টি হচ্ছে। স্থলসীমান্ত ছাড়াও গ্রিসের তিনটি দ্বীপে রবিবার সকালে কমপক্ষে ৬০০ শরণার্থী নৌকায় করে এসে পৌঁছেছে। উল্লেখ্য, লেসবসসহ বিভিন্ন দ্বীপ বহুকাল ধরেই শরণার্থীদের কারণে প্রবল চাপের মুখে রয়েছে।
রবিবার গ্রিসের পুলিশ সীমান্তে শরণার্থীদের উপর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। হাজার হাজার শরণার্থী পাথর ছুড়তে শুরু করায় সেখানে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল। ইউরোপীয় সরকার পরিষদের প্রধান শার্ল মিশেল মঙ্গলবার এভ্রস স্থলসীমান্ত পরিদর্শন করবেন বলে গ্রিক সরকার জানিয়েছে।
গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকস মিটসোটাকিস এক জরুরি বৈঠকের পর এই সংঘর্ষকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বর্ণনা করেন। শরণার্থীদের উদ্দেশ্যে এক টুইট বার্তায় তিনি লেখেন, বেআইনিভাবে গ্রিসে প্রবেশের চেষ্টা করবেন না, আপনাদের ফেরত পাঠানো হবে।

সিরিয়ায় বিমান হামলায় তুরস্কের ৩৩ জন সৈন্য নিহত হবার পর তুরস্ক ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও সামরিক জোট ন্যাটোর উপর প্রবল কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করছে। তুর্কি প্রেসিডেন্ট এতকাল একতরফাভাবে সিরিয়ায় হস্তক্ষেপের পর বেকায়দায় পড়ে সহযোগীদের সহায়তা চাইছে বলে সমালোচকরা মনে করছেন। শরণার্থীদের তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করে নিন্দার মুখে পড়েও তুরস্ক উল্টে গ্রিসের কড়া নীতির সমালোচনা করেছে।
এমন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে ইইউ অভিবাসন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের এক জরুরি বৈঠক ডেকেছে। ইইউ-র বহির্সীমানার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা ফ্রন্টেক্স গ্রিসকে বাড়তি সাহায্যের উদ্যোগ নিচ্ছে।

জার্মান চ্যান্সেলর এঙ্গেলা মেরকেল বুলগেরিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। তুরস্কের সঙ্গে স্থলসীমান্ত থাকায় সেই দেশটিও চাপের মুখে পড়েছে। ইইউ পররাষ্ট্রবিষয়ক কর্মকর্তা জোসেপ বোরেল রবিবার বলেন, সিরিয়ার বিদ্রোহীদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ইদলিবের আশেপাশে সংঘর্ষের ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক কাঠামোর জন্য হুমকি হয়ে উঠছে।

শেয়ার করুন