চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

চীনে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৬

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৬ জানুয়ারি, ২০২০ | ১:১০ অপরাহ্ণ

চীনে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। দেশটিতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে ১৩ জনই হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা। এ নিয়ে চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬ জনে।

এছাড়া চীনজুড়ে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে প্রায় দুই হাজারে দাঁড়িয়েছে।

রবিবার চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। কমিশন জানিয়েছে, নতুন করে যে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে ১৩ জনই হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা। এ নিয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শুধু হুবেই প্রদেশেই মৃত্যু হয়েছে ৫২ জনের। বাকি চারজনের মধ্যে মধ্যাঞ্চলীয় হেনান প্রদেশে দুইজন, উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় হেইলংজিয়াং প্রদেশে একজন ও উত্তরাঞ্চলীয় হেবেই প্রদেশে একজনের মৃত্যু হয়েছে। খবর এএফপি ও বিবিসির।

হুবেই প্রদেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ আলাদাভাবে জানিয়েছে, তারা নতুন করে ৩২৩ জনের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন। এই হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানেই গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়। চীনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৯৭৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে তাদের কাছে নিশ্চিত তথ্য রয়েছে।

এদিকে প্রাণঘাতী নতুন এই ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে বলে সতর্ক করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। চীনের নববর্ষের অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে করা এক বিশেষ বৈঠকে চীনা প্রেসিডেন্ট উল্লেখ করেন, চীন এখন ‘ভয়াবহ পরিস্থিতির’ ভেতর দিয়ে যাচ্ছে।

বেইজিংয়ের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ লোকজনকে হাত না মেলানোর আহ্বান জানিয়েছে, তার বদলে হাত দিয়ে অভিবাদন জানানোর ঐতিহ্যবাহী ভঙ্গি অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়েছে।

রবিবার সকালে শহরের মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী বাসিন্দাদের কাছে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে এ আহ্বান জানানো হয়।

উহান থেকে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব চীনের রাজধানী বেইজিং, বৃহত্তম শহর সাংহাইয়ের পাশাপাশি থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, মালয়েশিয়া, নেপাল, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও কানাডা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।

এই প্রাদুর্ভাবকে বিশ্ব স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা আখ্যা দেয়ার কাছাকাছি অবস্থায় রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। মহামারী নিয়ন্ত্রণে চীন কতটা সক্ষম হবে তা নিয়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা দ্বিধায় রয়েছেন।

এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এই ভাইরাসের সংক্রমণ চীনের পক্ষে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে না। যুক্তরাজ্যের এমআরসি সেন্টার ফর গ্লোবাল ইনফেকশাস ডিজিজ এনালাইসিসের বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভাইরাসটি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার মাধ্যমে নিজেকে রক্ষা করতে পারে, যেটি এই ভাইরাসের এত বড় পরিসরে ছড়িয়ে পড়তে পারার ‘একমাত্র যৌক্তিক ব্যাখ্যা।’

বিজ্ঞানীদের অনুমান, একজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি গড়ে আড়াইজন মানুষের মধ্যে এই ভাইরাসটি ছড়াচ্ছে।

এই সংস্থাটি চীনা কর্তৃপক্ষের প্রয়াসের প্রশংসা করেছে, কিন্তু এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করছে যে, ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে ছড়িয়ে পড়ার হার ৬০ শতাংশ কমাতে হবে। বিজ্ঞানীদের মতে, এই পদক্ষেপ নিশ্চিত করা সহজ নয়। ভাইরাস সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণে আনতে এমন রোগীদেরও আলাদা করতে হবে যাদের মধ্যে সাধারণ সর্দি-জ্বরের সামান্য লক্ষণও দেখা গেছে।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন